14 জুলাই, শুক্রবার মিশন শুরু করবে চন্দ্রযান ৩। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রী হরিকাটোয় সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চন্দ্রযান -3 কে নিয়ে উড়বে এনভিএম-৩ রকেট। সবকিছু ছিকঠাক থাকলে আগামী আসে অর্থাৎ অগাস্টের 23 অথবা 24 তারিখ চাঁদের মাটিতে পা রাখার কথা এই চন্দ্রযানের। কিন্তু ভারতের এই মিশনের পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে এক নারীর। তাঁর নাম ঋতু করিধাল। চন্দ্রযান -3 মিশনের স্টেশন ডিরেক্টরের দায়িত্ব সামালাচ্ছেন তিনি। চন্দ্রযান-2 মিশনেও একই দায়িত্ব সামলেছিলেন এই মহিলা বিজ্ঞানী। মহাকাশ গবেশষায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ঋতুকে ডাকা হয় রকেট ওম্য়ান অফ ইন্ডিয়া নামে। লখনউয়ের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মানোর পর সেন্ট অ্যাগনেস স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করেন ঋতু। নবযুগ কন্যা বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পর এরপর পিজি কলেজ থেকে ফিজিক্সে স্নাতক হন। নখনউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পূর্ণ করেন স্নাতকোত্তর। স্নাতকোত্তরে দারুণ ফলের পর গ্র্যাজুয়েট অ্যাপটিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা ‘গেট’-এ ভাল ফল করে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে সুযোগ পান । সেখান থেকেই করেন এম টেক। এরপর পিএইচডি চলাকালীন ইসরোতে চাকরির আবেদন করেন ঋতু। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ইসরো কর্তৃপক্ষ অল্প সময়ের মধ্যেই ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকে ঋতুকে। ইন্টারভিউতে পাশও করে যান তিনি। কিন্তু ইসরোয় কাজের জন্য তাঁকে ছাড়তে হয় পিএইচডি। 1997 সালে ইসরোর চাকরিতে যোগ দেন ঋতু। 'মার্স অরবিটার মিশন' বা 'মম'-এর ডেপুটি অপারেসন্সের ডিরেক্টর ছিলেন ঋতু। 'মঙ্গলযান' কোন পথ ধরে এগিয়ে যাবে, উৎক্ষেপণে কত দিন, কত ঘণ্টায় তা মঙ্গলের কোন কক্ষপথে ঢুকে পড়বে, সেইসব কিছু চূড়ান্ত করার দায়িত্ব ইসরো যাঁদের উপর দিয়েছিল ঋতু তাঁদের মধ্যমণি ছিলেন। 2007 সালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এ পিজে আবদুল কালামের হাত থেকে পান 'ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড'। 2019 সালেও চন্দ্রযান-২ অভিযানের সময়ও মিশন ডিরেক্টরের পদ সামলেছেন ঋতুই। 2020 সালে ইসরো সিদ্ধান্ত নেয় চন্দ্রযান-3 মিশনের গুরু দায়িত্বও ঋতুর হাতেই থাকবে। চন্দ্রযান-3 মিশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর পি ভিরামুথুভেল। সবসময় নিজের সাফল্যের কৃতিত্ব পরিবারকেই দিয়েছেন ঋতু। তাঁর স্বামী অবিনামশ শ্রীবাস্তব একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। বেঙ্গালুরুতে মেয়ে অনীশা ও ছেলে আদিত্যকে ও স্বামী অবিনাশকে নিয়ে থাকেন ঋতু।