Jalpesh Mandir Restriction: প্রতি বছর ময়নাগুড়ি থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে জরদা নদীর পারে জল্পেশ শিবধাম হিসেবে গোটা দেশে বিখ্যাত। এমনকী নেপাল-ভুটান-বাংলাদেশ থেকে তীর্থযাত্রীরা এখানে আসেন। ৭০০ বছর পুরনো এই মন্দির কোচবিহারের মহারাজা বিশ্বসিংহের আমলে প্রতিষ্ঠিত। যদিও এটি পরে অনেকবার সংষ্কার হয়েছে। সারা বছর ভিড় থাকলেও শ্রাবণে ভিড় সামাল দেওয়া যায় না। তবে এবারে শ্রাবণে তাল কেটেছে এই ভিড়ের ঠেলাতেই।
জল্পেশ মন্দিরের পুণ্যার্থীদের জন্য দুঃসংবাদ। শ্রাবণ মাসে মন্দিরে গেলেও বাইরে থেকেই জল ঢালতে হবে। এই নির্দেশ প্রশাসন বা পুলিশের নয়,নির্দেশ দিয়েছে খোদ কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে মন খারাপ পুণ্যার্থাীদের।
মন্দিরের বাইরে থেকেই জল ঢালবেন পুন্যার্থীরা। যা লোহার পাতের মাধ্যমে শিবলিঙ্গে পৌঁছে যাবে। এভাবে পুণ্যও হবে, আবার ভিড়ও সামলাতে অসুবিধা হবে না। তবে শ্রাবণের এই মাসে এই নিয়ম থাকলেও বছরের অন্য সময় অবশ্য স্বাভাবিকভাবে মন্দিরে গিয়েই পুজো দিতে পারবেন সকলেই।
শ্রাবণে ভিড় ম্যানেজমেন্টের জন্য জল্পেশ মন্দিরে এই পদ্ধতি চেয়েছিল ব্লক প্রশাসন। সে প্রস্তাবেই সায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ। গত মঙ্গলবার কলকাতায় একটি জনস্বার্থ মামলায় এবং একটি রিট আবেদনের ভিত্তিতে ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের দাবি, এই নির্দেশের ফলে এক দিকে যেমন মন্দিরে শ্রাবণ মাসের সোমবারের ভিড় সামলানো যাবে, অন্য দিকে বেশি সংখ্যক পুণ্যার্থী কম সময়ে জল ঢালতে পারবেন।
জল্পেশ মন্দিরে গত বছর শ্রাবণে হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করেন। জল্পেশ মন্দিরে পুণ্যার্থীর ভিড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করে। সে মামলায় বিচারপতি প্রথম গর্ভগৃহের বাইরে থেকে জল ঢালার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বছর আবার পুরনো পদ্ধতি চালু করার জন্য ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয় এবং আগের ব্যবস্থা-মাফিক মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকে জল ঢালার অনুমতি চাওয়া হয়। পাশাপাশি একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয় বাইরে থেকে জল ঢালার আবেদন করে।
হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে ব্লক প্রশাসনের রিপোর্ট তলব করে। ব্লক প্রশাসন বাইরে থেকে জল ঢালার ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাবকে সমর্থন করে । হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেটাই মেনে নিয়েছে।
জল্পেশ মন্দির কমিটি অবশ্য উচ্চতর আদালতে যাওয়ার এবং জেলা প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার অনুরোধ করবে বলে জানিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, মন্দির কমিটির আয় কমে যাবে। গর্ভগৃহে ঢোকার জন্য যে টিকিট নিতে হয়, তা ইস্যু করতে পারবে না কমিটি। সংবাদমাধ্যমে মন্দির কমিটি দাবি করেছে, শ্রাবণ মাসের পুণ্যার্থীদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থ থেকেই মন্দিরের সারা বছরের খরচ চলে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে।
যদিও প্রশাসনের দাবি,জল্পেশ মন্দির নিয়ে গত বছর হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা-ই জানানো হয়। প্রশাসনের তরফে দাবি, স্থানীয় বিডিও জল্পেশ মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাঁরা রাজি হননি।