হিন্দুদের বারো মাসে তের পার্বণের মধ্যে জন্মাষ্টমী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা উৎসব। শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিতেই দেশ জুড়ে পালিত জন্মাষ্টমী। বাসুদেব ও দেবকীর অষ্টম সন্তান এবং বিষ্ণুর অষ্টম অবতার কৃষ্ণ কংসের কারাগৃহে জন্ম হয়। ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ও রোহিণী নক্ষত্রে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। প্রতি বছর এই তিথিতে কৃষ্ণের ছোটবেলার রূপ, ননীগোপালের পুজো করা হয়।
এবছর ১৬ অগাস্ট পড়েছে জন্মাষ্টমী এবং ১৭ অগাস্ট নন্দোৎসব। ১৫ অগাস্ট রাত ১/১৬/৮ থেকে ১৬ অগাস্ট রাত ১০/৪৮/৩ পর্যন্ত থাকবে অষ্টমী তিথি।
নন্দগোপালকে সকলে বাড়ির আদরের ছোট শিশুর মতো মনে করেন। তাই ভালোবাসে তাকে একাধিক ভোগ উৎসর্গ করা হয়। তবে তার মধ্যে জন্মাষ্টমীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কিছু প্রচলিত ভোগ। জানুন এবারের জন্মাষ্টমীতে কী কী ভোগ উৎসর্গ করতে পারেন আপনি।
তালের বড়া ও তালের ক্ষীর
ভাদ্র মাসে খুব ভাল তাল পাওয়া যায় বাজারে। এই ফলের থেকে একাধিক রকমের সুস্বাদু পদ তৈরি করা যায়। আর সেগুলি গোপাল ঠাকুরকে উৎসর্গ করা হয় এদিন।
মাখন - মিছরি
ননীগোপালের সবচেয়ে প্রিয় হল মাখন - মিছরি। পৌরাণিক গল্প অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ ছোটবেলায় মায়ের আড়ালে ননী খেতেন, তাই তার আরেক নাম ননীগোপাল। সেজন্যেই এই বিশেষ দিনের ভোগের মধ্যে এটা রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মালপোয়া
জন্মাষ্টমী মানেই মালপোয়া। সুজি ও ময়দা দিয়ে তৈরি এই ভাজা মিষ্টি নন্দগোপালের অত্যন্ত পছন্দের এক খাবার। তাই জন্মাষ্টমী বা নন্দ উৎসবের ভোগে এটি রাখা মাস্ট।
৫৬ ভোগ
জন্মাষ্টমীর ভোগের মধ্যে ৫৬ ভোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ৫৬ রকমের নৈবেদ্যর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা পৌরাণিক কাহিনি। নিয়ম অনুসারে ৫৬ ভোগে থাকে ১৬ ধরনের জলখাবার, ২০ টি মিষ্টি এবং ২০ ধরণের শুকনো ফল। যার মধ্যে দুধের তৈরি খাবার সবার আগে পরিবেশন করতে হয়।
মোহনভোগ
জন্মাষ্টমীর আরও একটি প্রচলিত ভোগ হল মোহনভোগ। আগে মূলত বাড়িতেই তৈরি করা হত এই মিষ্টি। তবে বর্তমানে দোকানেও কিনতে পাওয়া যায় এটি।
ক্ষীর
শুধু মাখন নয়, জন্মাষ্টমীতে গোপালকে তাঁর আরও এক পছন্দের খাবার উৎসর্গ করা হয়, তা হল ক্ষীর।
এছাড়াও নারকেল নাড়ু, লুচি -সুজি, রকমারি মিষ্টি, পোলাও ও অনেক রকম নিরামিষ পদ ভোগ হিসাবে উৎসর্গ করার রীতি রয়েছে লাড্ডু গোপালকে।