হিন্দু ধর্মে প্রায় সারা বছরই নানা উৎসব চলতে থাকে। যার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল অক্ষয় তৃতীয়া। বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে অক্ষয় তৃতীয়ার উৎসব পালিত হয়। বিশ্বাস অনুযায়ী, যে কোনও কাজ সম্পন্ন করার জন্য এদিন অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। লক্ষ্মী- নারায়ণের আরাধনা এবং নতুন জিনিস কেনার জন্যও এই দিনটিকে সেরা মনে করা হয়।
সংস্কৃত অনুসারে 'অক্ষয়' শব্দের অর্থ হল 'যার কোনও ক্ষয়' নেই অর্থাৎ যা কখনোও শেষ হয় না। তাই মনে করা হয় অক্ষয় তৃতীয়ায় করা যে কোনও কাজ অক্ষয় থাকে। সেই সঙ্গে শাস্ত্র মতে, অক্ষয় তৃতীয়া সুখ প্রদানকারী এবং পাপ নাশকারী তিথি। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন সোনা কেনা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এছাড়াও আরও কিছু জিনিস, এদিন কেনা দারুণ শুভ বলে বিবেচিত।
মাটির কলসী: অক্ষয় তৃতীয়ায় মাটির কলসী কেনা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এদিন, একটি মাটির পাত্র কিনে বাড়ির উত্তর-পূর্ব দিকে রাখুন। এই দিকে মাটির পাত্র রাখলে ঘরে অর্থের অভাব হবে না এবং দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ বজায় থাকবে।
রুপোর অলংকার: অক্ষয় তৃতীয়ায় রুপোর গয়না কেনা খুব শুভ বলে মনে করা হয়। এদিন রুপোর অ্যাঙ্কলেট, কানের দুল কিনতে পারেন।
পারদের শিবলিঙ্গ: অক্ষয় তৃতীয়ায় পারদের শিবলিঙ্গ বাড়িতে আনা শুভ বলে মনে করা হয়। কথিত আছে যে বাড়িতে পারদের শিবলিঙ্গ এনে পুজো করতে হবে।
মা লক্ষ্মীর পাদুকা: অক্ষয় তৃতীয়ায় দেবী লক্ষ্মীর চরণ আনা দারুণ শুভ বলে মনে করা হয়। কথিত আছে যে, এদিন দেবী লক্ষ্মীর পাদুকার পুজো করা উচিত। এতে দেবী লক্ষ্মী ঘরে প্রবেশ করেন।
অক্ষয় তৃতীয়া ২০২৫-র কবে পড়েছে?
আগামী ৩০ এপ্রিল (বাংলায় ১৬ বৈশাখ) অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ তিথি পড়েছে।
তৃতীয়া তিথি কতক্ষণ থাকবে?
২৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৮/২২/৫৪ থেকে ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬/১০/৪৬ পর্যন্ত তৃতীয়া থাকবে।
অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো বিধি
যে ব্যক্তি এদিন উপবাস রাখে তার উচিত, সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে হলুদ রঙের জামাকাপড় পরা। বাড়িতে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তি গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করিয়ে তুলসী, হলুদ ফুল অর্পণ করুন। এরপর ধূপ ও ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে হলুদ আসনে বসান। এছাড়াও বিষ্ণু সহস্রনাম, বিষ্ণু চালিসা গ্রন্থ পাঠ করুন। অবশেষে, ভগবান বিষ্ণুর আরতি করুন। এর সঙ্গে, কোনও অভাবী ব্যক্তিকে দান বা খাবার সরবরাহ করতে পারলে তা খুব ভাল বলে বিবেচিত হয়।