ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বছরব্যাপী নানা উৎসবের মধ্যে, একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল ইদ-অল-আদাহ (Eid al Adha)। প্রতি বছর সারা দেশ জুড়ে পালিত হয় এই ইদ যা, কোরবানির ইদ বা বকরি ইদ নামেও পরিচিত। এই উৎসব মূলত ত্যাগের প্রতীক।
ইসলাম ধর্মের সমস্ত উত্সব পালিত হয় সাধারণত লুনার বা চান্দ্র ক্যালেন্ডারের উপর নির্ভর করে। সৌর ক্যালেন্ডারের থেকে চান্দ্র ক্যালেন্ডার ১১ দিন ছোট। এজন্যে প্রতি বছর ইদের দিন এক হয় না। হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ১২তম ও শেষ মাস অর্থাৎ ধু অল-হিজ্জা মাসের দশম দিনেই পালিত হয় ইদ-অল আদাহ।
২০২৪-র ইদ-অল-আদাহ কবে পড়েছে?
এবছর ভারতে ইদ-অল-আদাহ পালিত হবে ১৭ জুন, সোমবার।
আরবিক শব্দ 'আদাহ'-র অর্থ উৎসর্গ বা ত্যাগ করা। এই বিশেষ দিন আল্লাহর নামে ত্যাগ করার রীতি রয়েছে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ইদ-অল আদাহ-র দিন আল্লাহর উদ্দেশ্যে ছাগল,গরু, উট কিংবা কোনও পশু কোরবানি দেন। আর এরপর সেই মাংস রান্না করে বেশ কয়েকদিন ধরে খাওয়া -দাওয়ার রীতি প্রচলিত। কোরবানি দেওয়া ছাড়াও এদিন সকাল থেকেই মসজিদ কিংবা বাড়িতে নামাজ পড়ে দোয়া করেন বেশীরভাগ মানুষ। অন্যান্য ইদের মতো ইদ-অল-আদাহ-তেও সিমুই, পরোটা, লাচ্ছা, মাংস ইত্যাদি রকমারি খাবার একে অপরের বাড়িতে পাঠানোর রীতি রয়েছে। আবার বাড়িতে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানান অনেকে।
ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, কোরবানির প্রথা শুরু হয় হজরত ইব্রাহিমের সময়ে। কথিত আছে,পরীক্ষা করার জন্য হজরত ইব্রাহিমকে তার সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস কুরবানি করতে বলেন আল্লাহ। এরপর তিনি তার একমাত্র পুত্রকে কোরবানি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পুত্রকে কোরবানি দেওয়ার সময় যাতে সময় না হয়, সেই জন্য নিজের চোখ বেঁধে রাখেন তিনি। এরপর তিনি নিজের ছেলের কোরবানি দেন। কিন্তু চোখের পর্দা খোলার পর তিনি দেখতে পান, ছেলের পরিবর্তে একটি প্রাণী মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং তাঁর ছেলে একদম ঠিক আছে। কথিত আছে, আল্লাহ হজরত ইব্রাহিমের উপর সন্তুষ্ট হয়ে তাঁর পুত্রকে জীবন দিয়েছেন। এদিন থেকেই পালন করা শুরু হয় বকরি ঈদ।