Durgapuja 2025 North Bengal: যদিও জেলা জলপাইগুড়ি, তবে শিলিগুড়ির শহরতলির মতোই। যদিও এখনও এখানে গ্রামীণ আবেশ পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলতে পারেনি আমবাড়ি। এই বছর উত্তরবঙ্গের পুজোপ্রেমীদের চমকে দিতে চলেছে আমবাড়ির ‘আগমনী শারদীয়া দুর্গোৎসব কমিটি’। রাজগঞ্জ ব্লকের এই পুজো কমিটি এবার তৈরি করছে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার বিশাল বাজেটের দুর্গাপুজো। শুধু বড় বাজেট নয়, ধর্মীয় সম্প্রীতিরও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে এই আয়োজন।
হিন্দু-অহিন্দু নির্বিশেষে এলাকার মানুষ মেতে উঠেছেন এই পুজোর প্রস্তুতিতে। আয়োজকরা জানাচ্ছেন, পুজোর প্রায় দু’মাস আগেই প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে, আর এখন তার চূড়ান্ত ব্যস্ততা।
ডিজনিল্যান্ড থিমে মণ্ডপ, সাবেকি শিবানী প্রতিমা
এবারের মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে একেবারে অন্যরকম ঢঙে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার ডিজনিল্যান্ডের আদলে সাজানো হচ্ছে গোটা পুজো মণ্ডপ। দায়িত্বে রয়েছেন উত্তরবঙ্গের নামী ‘বিমল ডেকোরেটার্স’।
বৃষ্টিকে তোয়াক্কা না করেই দিন-রাত খেটে চলেছেন জলপাইগুড়ির সারিয়াম, তালমা ও দশদরগার অভিজ্ঞ শিল্পীরা। প্রতিমা তৈরি করছেন শিলিগুড়ির কুমোরটুলির কারিগর নিরঞ্জন পাল। প্রতিমা সাবেকি হলেও থিম ‘শিবানী’। অর্থাৎ, এমন এক দেবী দুর্গা যিনি অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে এই পৃথিবীতে সুখ-সমৃদ্ধি ও শান্তি ফিরিয়ে আনবেন।
আলোকসজ্জায় থাকছে ‘কারিগরি’
পুজোর পাঁচদিনই দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে একাধিক চমক। চন্দননগরের দক্ষ শিল্পীদের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হচ্ছে আলোকসজ্জা। আলোর থিম ‘কারিকুরি’। প্রতিদিন সন্ধ্যায় আলাদা আলাদা লাইট শো প্রদর্শিত হবে।
সন্ধে নামলেই শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকছে ব্যান্ড পারফরম্যান্স, একক শিল্পীদের গান, নাচ, আবৃত্তি, নানা কিছু। পুজো মাঠ জুড়ে জমে উঠবে উৎসবের আমেজ।
সামাজিক বার্তাও
শুধু আলোকসজ্জা বা থিমেই সীমাবদ্ধ নয় এই পুজো। সামাজিক দায়বদ্ধতাকেও গুরুত্ব দিচ্ছে আয়োজকরা। থাকছে বৃক্ষরোপণ অভিযান, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির এবং প্রতিদিন দর্শনার্থীদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ।
সম্প্রীতির প্রতীক এই পুজো
এই পুজোর সভাপতি ও বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সমিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবে মেতে ওঠেন। আমি নিজে দু’টি পুজো কমিটির দায়িত্বে রয়েছি। আমবাড়ির পুজো এবার বিশাল বাজেট নিয়ে হচ্ছে। আশা করছি, শহরের মানুষ এবার আমাদের পুজো দেখতে আসবেন।”
কমিটির সম্পাদক কমল সরকার জানিয়েছেন, তাঁদের বাজেট প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। আমার মনে হয়, রাজগঞ্জ ব্লকে এত বড় বাজেটের আর কোনও পুজো নেই। আশা রাখি, পুজোর ক’টা দিন মানুষের ঢল নামবে আমাদের মণ্ডপে।