Advertisement

Kalipujo 2025: দীপান্বিতা অমাবস্যায় জেগে ওঠে উত্তরবঙ্গের এই জঙ্গল, কী হয় সেখানে?

Kalipujo 2024: জলপাইগুড়ি জেলার চা-বাগান ও জঙ্গলঘেরা ছোট্ট গ্রাম শিকারপুর। সেখানে ইতিহাস আর মিথে ঘেরা দেবী চৌধুরানী মন্দির। ইতিহাস এবং কিংবদন্তি মিলেমিশে একাকার এই মন্দিরে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসে আনন্দমঠে ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর যে উল্লেখ রয়েছে, স্থানীয়দের মতে এ দেবী চৌধুরানী, সেই দেবী চৌধুরানীই।

দীপান্বিতা অমাবস্যায় জেগে ওঠে নির্জন ঘুটঘুটে জঙ্গল, এই একদিন ভিড় উপচে পড়ে এখানেদীপান্বিতা অমাবস্যায় জেগে ওঠে নির্জন ঘুটঘুটে জঙ্গল, এই একদিন ভিড় উপচে পড়ে এখানে
সংগ্রাম সিংহরায়
  • জলপাইগুড়ি,
  • 18 Oct 2025,
  • अपडेटेड 4:09 PM IST

Kalipujo 2025: গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে পাশাপাশি দুটি মন্দির। একটিতে মা কালীর বিগ্রহ, অন্যটিতে এক নারী ও এক পুরুষের প্রতিমা। পাশে বাঘ, শিয়াল ও আরও কিছু দেবমূর্তি। স্থানীয়দের মতে, এ মন্দিরেই বিরাজমান দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠক। যদিও অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন এটি শিব-পার্বতীর মন্দির। তবু গ্রামবাসীর বিশ্বাস, এই মন্দিরই সেই ইতিহাসবন্দি দেবী চৌধুরানীর আস্তানা। আর সেই বিশ্বাসের টানেই আজও এখানে আসেন দূরদূরান্তের ভক্ত ও পর্যটকরা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশ, এমনকী বিদেশ থেকেও।

শিকারপুর, জলপাইগুড়ির চা-বাগান ও জঙ্গলঘেরা এক ছোট্ট গ্রাম। এখানেই ইতিহাসের গন্ধ মিশে আছে লোককথার রহস্যে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দমঠ উপন্যাসে যে ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর নাম বাঙালির মনে অমর হয়ে আছে, স্থানীয়দের বিশ্বাস সেই চরিত্রগুলিই নাকি এখানে জীবন্ত হয়ে ওঠে। তাঁদেরই স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছে এই মন্দির।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদুঘরে আজও সংরক্ষিত একটি পুরনো বজরা। বলা হয়, সেটিই দেবী চৌধুরানীর বজরা। যদিও ইতিহাসবিদরা নিশ্চিত করতে পারেননি, তাতে ভক্তদের ভক্তি একটুও কমে না। তাঁদের কাছে এই স্থান শুধু তীর্থ নয়, এক জীবন্ত কিংবদন্তি।

আরও পড়ুন

দেবী চৌধুরানী আর ভবানী পাঠক। নাম দুটি আজও বাঙালির কাছে ইতিহাসের সঙ্গে মিশে থাকা আবেগ। কোথাও বিদ্রোহ, কোথাও প্রেম, কোথাও মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক। সত্য-মিথ্যা, ইতিহাস-লোককথা মিলেমিশে এখানে যেন এক অমোঘ মায়াজাল রচনা করেছে।

তবে শুধু দেবী চৌধুরানীর মন্দির নয়, পাশাপাশি থাকা কালীমন্দিরও সমান জাগ্রত বলে বিশ্বাস ভক্তদের। বছরে দু’বার ।আষাঢ় ও কার্তিক মাসে এখানে নিয়ম করে কালীপুজো হয়। খুব বড় আয়োজন না হলেও, নিষ্ঠার ঘাটতি নেই। বরং সেই সরল ভক্তি ও প্রাচীন রীতি মেনে হওয়া পূজোর আলাদা গন্ধ আছে।

চারপাশের ঘন জঙ্গল, শান্ত পরিবেশ, আর পুরনো দিনের আভা।সব মিলিয়ে শিকারপুরের এই মন্দিরে কালীপুজো এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও আশপাশের মানুষজন গাড়ি করে রাতে আসেন, সারারাত জেগে দেখেন পুজো। ভক্তি, ইতিহাস আর একটু অ্যাডভেঞ্চার। তিনে মিলে এ যেন এক অনন্য অনুভূতি।

আজও যাঁরা বঙ্কিমের লেখায় দেবী চৌধুরানীর সাহসিকতা পড়ে মুগ্ধ হন, তাঁদের জন্য শিকারপুরের এই মন্দির যেন সেই ইতিহাসেরই জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। জঙ্গল-ঘেরা নিস্তব্ধতার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা মন্দির দুটি যেন চুপচাপ টেনে নিয়ে বেড়ায় পুরনো মিথ আর বিশ্বাসের মিশ্রণে।

 

Read more!
Advertisement
Advertisement