সামনেই ধনতেরাস। গৃহলক্ষীর আরাধনায় মাতবেন সকলে। কিন্তু কী আসলে এই ধনতেরাস? জেনে নিন।
কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতেই হয় ধনতেরাস।
বলা চলে, ধনত্রয়োদশী কিংবা ধন্বন্তরি- ত্রয়োদশীই সংক্ষেপে ধনতেরাস।
ধনতেরাসের শুভ লগ্নে বাড়িতে কেনা হয় মূল্যবান ধাতু। বলা হয় এর ফলে বাড়িতে আগমন হয় মা লক্ষ্মীর।
তবে ধনতেরাস নিয়ে প্রচলিত আছে নানা লোক কথা ও একাধিক গল্প।
শোনা যায়, কোনো এক সময়ে দুর্বাসা মুনির অভিশাপে স্বর্গলোক হয় লক্ষ্মীহীন। দেবতারা লক্ষ্মী দেবীকে ধনতেরাসেই ফিরে পেয়েছিলেন রাক্ষসের সঙ্গে লড়াই করে সমুদ্র মন্থন করার পর। আর এই লক্ষ্মীদেবীকে ফিরিয়ে আনার উৎসবই ধনতেরাস।
অন্য একটি প্রচলিত পুরাণের কথা অনুযায়ী, ধনদেবতা কুবেরের আরাধনার বিশেষ দিনকে ধনতেরাস বলা হয়।
কেউ কেউ আবার বলেন, হিম রাজার ছেলেকে, তাঁর বিয়ের পরে যমরাজের হাত থেকে বাঁচাতে তাঁর স্ত্রী একটি ফন্দি এটেছিলেন। তিনি সোনা রুপো, ধনরত্ন, প্রদীপ, বাসনপত্র দিয়ে ঘরের দরজা ঘিরে রেখেছিলেন। এর ফলে এই সমস্ত ধাতুর উজ্জলতায় যমরাজের চোখ ধাঁধিয়ে যায় এবং তিনি দিকভ্রষ্ঠ হন। এইভাবে তাঁর স্বামীকে যমের দুয়ার থেকে রক্ষা করেছিলেন। সেই থেকেই এই বিশেষ দিনে বিভিন্ন ধাতু কেনাকে শুভ বলে মনে করা হয়।
এই বিশেষ দিনে প্রদীপ জ্বালিয়ে অশুভ শক্তির বিনাশের জন্যে ধাতু কিনে আরাধনা করা হয় ধনদেবীর।
ধনতেরাস উৎসব প্রধানত অবাঙ্গালিদের উৎসব হলেও, বিগত কয়েক বছর ধরে বাঙালিরা এই উৎসবকে আপন করে নিয়েছেন। বিভিন্ন দোকানে উপচে পড়ে নানা ধাতু কেনার ভিড়। দোকানে দোকানে দেওয়া হয় বিশেষ ছাড়।
ধনতেরাস উৎসবের হাত ধরেই সূচনা হয় আলোর উৎসব দীপাবলির।
এই বছর ১৩ নভেম্বর পড়েছে ধনতেরাসের তিথি। বিকেল ৫.২৮ মিনিট থেকে রাত ৮.০৭ মিনিট পর্যন্ত থাকবে ধাতু কেনার শুভ মুহূর্ত।