স্নান শরীরকে নীরোগ এবং তাজা রাখে। শরীরের নেগেটিভিটি, মনের কালিমা, অনেক কিছুই স্নানের সঙ্গে ধুয়ে বেরিয়ে যায়। স্নান একটি অতি পবিত্রকর্ম এবং নিয়মিত স্নান মন শরীরের সঙ্গে আত্মশুদ্ধি করে। নিয়মিত স্নান করলে শরীরের কান্তি এবং আকর্ষণ বজায় থাকে। যদি আপনি একটি জিনিস মাথায় রাখেন তাহলে আপনার আধ্যাত্মিকভাবেও দুর্দান্ত লাভ হবে। এবং আপনি অনেক লাভবান হবেন।
স্নান করার পরে লোকেরা শুদ্ধ হয়ে পুজো-পাঠ জপ ইত্যাদি সমস্ত কাজের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন। এ কারণে সকালে স্নান করে নেওয়া উচিত। দুই শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, স্নান করলে এই দশ গুণের প্রাপ্তি হয়। রূপ-তেজ-বল-পবিত্রতা-আয়ু-আরোগ্য-নির্লজ্জতা, দুঃস্বপ্ন এর নাশ, তপ এবং মেধা।
তিন লক্ষের পুষ্টি এবং আরোগ্য বা স্বাস্থ্য যাঁরা চান, তাদের প্রত্যেককেই প্রতিদিন স্নান করতে হবে। রাত্রে বলা হয়েছে যে সকালে স্নান করার ফলে পাপ নাশ সহ এবং অন্য উপকার মেলে। এমন বলা হয়েছে যে সকালে যারা স্নান করে, তাদের কাছে ভূত-প্রেত করে তাদেরই কখনও অশুভ শক্তি ভেড়ে না। এ কারণে সকালে স্নান করা উচিত।
অসুস্থ মাথার নীচের অংশ থেকে স্নান করা উচিত। ভেজা কাপড়ে শরীর মুছে নেওয়াও এক ধরনের স্নান বলেই মনে করা হয়। সকালে সূর্যোদয়ের আগে স্নান করে নেওয়া শ্রেষ্ঠ স্নান বলে মনে করা হয়।
তেল লাগিয়ে এবং দেহ ভালো করে মালিশ করে নদীতে স্নান করা উচিত। নদীতেই শরীর পরিষ্কার করা উটিত নয়। তার বদলে নদী থেকে বাইরে বেরিয়ে নদীর পাড়ে বা ঘাটে দাঁড়িয়ে শরীরের পরিষ্কার করার পর তারপরে নদীতে ডুব দেওয়া উচিত।
যে ঘাটে কাপড় ধোও,য়া হয় সেই ঘাটের জল অপবিত্র বলে মনে করা হয়। এ কারণে সেখান থেকে কিছু দূরে গিয়ে স্নান করা উচিত। নইলে স্নানের লাভ পাওয়া যায় না।
নদীর ধারা এবং সূর্যের দিকে মুখ করে স্নান করা উচিত। নদীতে ৩,৫, ৭ অথবা ১২ ডুব লাগানো ভালো বলে মনে করা হয়। বাড়িতে স্নান করলে এই সংখ্যার বালতি বা মগ ভরে স্নান করা উচিত। পবিত্র নদীতে কাপড় জল রগরানো মানা নদীতে কোনভাবে দূষণ এবং নোংরা করা উচিত নয়।
কোন স্রোতে স্নান ভাল? এ বিষয়ে শাস্ত্রে বলা হয়েছে কুয়োর তুলনায় ঝর্নার জল, ঝর্নার জলের চেয়ে নদীর জল, নদীর জলের চেয়ে কোনও তীর্থের জল, তীর্থের জলের চেয়ে গঙ্গা জল অধিক শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। গঙ্গা মাতার কথিত রয়েছে যে স্নান করার সময় যেখানেই আমাকে স্মরণ করবে, আমি সেখানকার জলে চলে আসব। স্নান করার সময় গঙ্গার সেই কথা এবং শ্লোক রূপে পড়া উচিত।
নন্দিনী নলিনী সীতা মালতি চ মহাপগা।
বিষ্ণুপদাব্জসম্ভূতা গঙ্গা ত্রিপথগামিনী।।
ভাগীরথী ভোাগবতী জাহ্নবী ত্রিদশেশ্বরী।
দ্রাদশ্রোতানি নামানি যত্র যত্র জলাশয়।
স্নানোধান স্মরেন্নৃত্যং তত্র তত্র বসাম্যহম।।