সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja) একেবারে দোড় গোড়ায়। মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী (Vasant Panchami) বা সরস্বতী পুজো হয়। শিক্ষার্থীদের জন্যে এই পুজো খুবই স্পেশাল।
সকাল থেকেই উপোস থেকে বাগদেবীর উদ্দেশ্যে পুষ্পাঞ্জলি দেন সকলে। বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞানের প্রার্থনা করেন সরস্বতী মায়ের কাছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ব বিদ্যালয়, শিক্ষাঙ্গনগুলিতেও আয়োজন হয় পুজোর। জেনে নিন এই বছরের সরস্বতী পুজোর পঞ্চমী তিথি কখন লাগছে।
সরস্বতী পুজো ২০২২-এর তারিখ
২০২২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি এবং বাংলায় ২২ মাঘ সরস্বতী পুজো পড়েছে।
সরস্বতী পুজো ২০২২-এর পঞ্চমী তিথি
৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৩:৪৭ মিনিট থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৩: ৪৬ মিনিট পর্যন্ত থাকবে পঞ্চমী তিথি।
সরস্বতী পুজোর পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র
ওঁ জয় জয় দেবী চরাচরসারে, কুচযুগ-শোভিত মুক্তাহারে। বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমোহস্তুতে।।
নমঃ সরস্বত্যৈ নমো নমঃ নিত্যং ভদ্রকাল্যৈ নমো নমঃ। বেদ- বেদাঙ্গ- বেদান্ত- বিদ্যাস্থানেভ্য এব চ।। এষ সচন্দন পুষ্পবিল্ব পত্রাঞ্জলি সরস্বত্যৈ নমঃ।।- এই মন্ত্রে তিনবার অঞ্জলি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
সরস্বতী পুজোর প্রণাম মন্ত্র
নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমল-লোচনে। বিশ্বরূপে বিশালাক্ষ্মী বিদ্যাং দেহি নমোহস্তুতে।। জয় জয় দেবী চরাচরসারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে। বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমোহস্তুতে।।
পুজোর গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী
শ্রী পঞ্চমীর দিনি সকালেই সরস্বতী পুজো সম্পন্ন করা হয়। সাধারণত নিয়মে পুজো হলেও বেশ কয়েকটি সামগ্রির প্রয়োজন হয়। যেমন- আমের মুকুল, অভ্র- আবির, দোয়াত- খাগের কলম, পলাশ ফুল, বই ও বাদ্যযন্ত্রাদি। এছাড়াও বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুল ও মালা প্রয়োজন হয়।
বসন্ত পঞ্চমী
সরস্বতী পুজোকে বসন্ত পঞ্চমী বা শ্রী পঞ্চমীও বলে। সাধারণত বসন্তকালেই হয় বাগদেবীর পুজো। বাসন্তী বা হলুদকে বসন্তের রঙ হিসেবে ধরা হয়। তাই এই বিশেষ দিনে এই রঙের পোশাক পরার রীতি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।
সরস্বতীর বাহন রাজহাঁস
শাস্ত্র অনুযায়ী দেবী সরস্বতী, শুক্ল বর্ণ, শুভ্র হংসবাহনা এবং 'বীণা রঞ্জিত পুস্তক হস্তে' অর্থাৎ দেবীর এক হাতে বীণা এবং অন্য হাতে পুস্তক থাকে। হাঁস অসারকে ফেলে সার গ্রহণ করতে পারে। মনে করা হয়, দুধ ও জলের মিশ্রণ থেকে জল ফেলে শুধু দুধটুকু গ্রহণ করে, বা বলা যায় কাদায় মিশ্রিত স্থান থেকে তার খাদ্য খুঁজে নিতে পারে।
সরস্বতী পুজোয় হলুদ রঙের মাহাত্ম্য
হলুদ রঙকে সুখ, আশা, জ্ঞান, সৃজনশীলতা ও রোদের প্রতীক বলে ধরে নেওয়া হয়। বসন্ত ও বন্ধুত্বের রঙ হিসেবেও ধরা হয় হলুদকে। তাই বসন্তের সঙ্গে নতুন কিছুকে আহ্বান করতে এদিনে এই রঙের চল রয়েছে। শাস্ত্র মতে শোনা যায়, দেবী সরস্বতীর বাসন্তী রঙ খুব পছন্দের। তাই বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুল ও মালা প্রয়োজন হয় এই পুজোয়।