আজ ( ১০ জুন) বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হবেন পৃথিবীবাসী। এদিন চন্দ্রের ছায়ায় আসবে সূর্য। যার ফলে আকাশে 'রিং অফ ফায়ার' দেখা যাবে। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের মানুষেরা বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে পারবেন।
কখন হয় সূর্যগ্রহণ?
পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্য যখন একই সরলরেখায় অবস্থান করে এবং চন্দ্র, পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে এসে ছায়ার সৃষ্টি করে তখন সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছায় না। এই মহাজাগতিক ঘটনাকেই সূর্যগ্রহণ বলে।
আজকের গ্রহণ হবে মূলত বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ। যখন সূর্যের বহিঃসীমা ছাড়া বাকি অংশ চাঁদের দ্বারা ঢেকে যায়, তখন তাকে বলে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ। অর্থাত্ পৃথিবী থেকে কেবল সূর্যের বহিঃসীমা নজরে আসে। দেখে মনে হয়, ঠিক যেন একটা আংটি। একে রিং অব ফায়ারও বলা হয়ে থাকে। এই ধরনের সূর্যগ্রহণ সবথেকে কম দেখা যায়। কারণ এই গ্রহণের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের সঙ্গে চাঁদের দূরত্ব নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন।
কোথায় দেখা যাবে এই গ্রহণ?
নিউ ইয়র্ক সিটির 'দ্য আমেরিকান মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রি'র জ্যোতির্বিজ্ঞানী জ্যাকি ফাহের্টি স্পেস.কমকে বলেছেন, এটি সূর্যের মতো মোটেও দেখতে নয়। 'রিং অফ ফায়ার' গ্রিনল্যান্ড ও কানাডা সহ উত্তর অক্ষাংশ থেকে দৃশ্যমান হবে।
তিনি আরও বলেন, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু অংশ থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। ভারতের লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশ থেকে শুধুমাত্র এটি দৃশ্যমান হবে। তিনি আরও বলেন, এদিনের এই সূর্যগ্রহণ 'মৃত তারার' মতো দেখতে হবে।
জ্যাকি আরও বলেন, 'আমেরিকাতেও দক্ষিণ-পূর্ব, উত্তর-পূর্ব, মধ্য-পশ্চিম এবং উত্তর আলাস্কার লোকেরা আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখতে সক্ষম হবে। তবে তিনি সুরক্ষিত চশমা ছাড়া খালি চোখে এই ঘটনা না দেখার জন্য সতর্ক করেছেন।
কানাডার ছাড়াও ক্যারাবিয়ান, ইউরোপ, এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি জায়গা থেকে এই আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। নাসার বৈজ্ঞানিক ভিজ্যুয়ালাইজেশন স্টুডিওতে থেকে আপনার অঞ্চলে সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে আরও তথ্যে আপনি জানতে পারেন।
গত ২৬ মে মাসে 'সুপার ফ্লাওয়ার ব্লাড মুন'-র সাক্ষী থেকেছে বিশ্ববাসী। এটি ছিল বছরের প্রথম চন্দ্রগ্রহণ। জ্যাকি ব্যাখ্যা করেছিন যে এই দুটি গ্রহণ একে অপরের এত কাছাকাছি সময়ে ঘটছে তা কাকতালীয়।
তিনি বলেছিলেন যে বেশিরভাগ লোক জানেন না যে এই গ্রহণ দুটি পরপর কেন হচ্ছে। ১৫ দিনের মধ্যেই চন্দ্রগ্রহণের পর সূর্যগ্রহণ হচ্ছে। কারণ চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে। এটি পুরোপুরি গোলাকার নয় এবং এটি প্রায় নিখুঁতভাবে বৃত্তাকার কক্ষপথে থাকে।
সূর্যগ্রহণের প্রভাব বৃষ এবং মৃগশিরা নক্ষত্রমণ্ডলে সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে। ১০ জুন দুপুর ১:৪২ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬:৪১ মিনিট পর্যন্ত সূর্যগ্রহণ থাকবে।