Advertisement

Adyapeath Mandir: স্বপ্নাদেশে তৈরি হয়েছিল আদ্যাপীঠ! জানুন মন্দিরের সময়, ভোগ থেকে সমস্ত খুঁটিনাটি

Adyapeath Mandir: দক্ষিণেশ্বরের কিছু দূরেই দেবী আদ্যার এই পীঠস্থান। এই আদ্যাপীঠের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে নানা অলৌকিক কাহিনি।

আদ্যাপীঠ মন্দিরের খুঁটিনাটি
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 14 Jun 2023,
  • अपडेटेड 2:12 PM IST

পশ্চিমবঙ্গের প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরগুলির (Kali Mandir) মধ্যে অন্যতম আদ্যাপীঠ (Adyapeath)। দক্ষিণেশ্বরের কিছু দূরেই দেবী আদ্যার এই পীঠস্থান। যেখানে দেবী কালী, আদ্যাশক্তি মহামায়া রূপে পূজিতা হন। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা হয় রামকৃষ্ণদেবের (Ramkrishna Dev) শিষ্য শ্রী অন্নদা ঠাকুরের (Annada Thakur) হাত ধরে। এই আদ্যাপীঠের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে নানা অলৌকিক কাহিনি।

মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা অন্নদাচরণ

আদ্যাপীঠ মঠ প্রায় ২৭ বিঘা জায়গা জুড়ে অবস্থান করে। এই মন্দিরে দেবী আদ্যার মূর্তি ছাড়াও রয়েছে রাধাকৃষ্ণ ও শ্রীরামকৃষ্ণের ধ্যানরত মূর্তি। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা অন্নদাঠাকুর ছিলেন বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বাসিন্দা। তাঁর পৈতৃক নাম অন্নদাচরণ ভট্টাচার্য। তিনি আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন। সালটা ছিল বাংলার ১৩২১।  চট্টগ্রাম থেকে কলকাতায় কবিরাজি পড়তে এসে, কলকাতার আর্মহাস্ট স্ট্রিটে এক বন্ধুর বাড়িতে থাকতেন। সেখান থেকেই বৃত্তি নিয়ে পাশ করেন কবিরাজি। বন্ধুর বাবার সাহায্যেই কবিরাজির ডিসপেনসারির জন্য দোকান ভাড়া নিয়েছিলেন।

 

আদ্যাপীঠ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা

আদ্যপীঠ মূলত ১৯১৫ সালে অন্নদাচরণ ভট্টাচার্যের অনুগামীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে বর্তমান মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। 


অন্নদাঠাকুরেকে স্বপ্নাদেশ দেন আদ্যা মা ও শ্রীরামকৃষ্ণ 

অন্নদাচরণ, একদিন  স্বপ্নাদেশ পান শ্রীরামকৃষ্ণের। স্বপ্নাদেশে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁকে ইডেন গার্ডেনসে গিয়ে, সেখানে ঝিলের পাশে নারকেল এবং পাকুড় গাছের কাছ থেকে কালী মূর্তি নিয়ে আসতে বলেন। স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী তিনি সেখানে যান এবং ঝিলের পাশ থেকে ১৮ ইঞ্চি আদ্যা মায়ের কষ্টিপাথরের মূর্তি পান। সেদিন ছিল রামনবমী তিথি। রাতে দেবী তাঁকে দেখা দিয়ে বলেন, 'অন্নদা কাল বিজয়া দশমী। তুমি আমায় গঙ্গায় বিসর্জন দিও।'

অলৌকিক কাহিনি 

Advertisement

দেবীর এই কথা শুনে অন্নদা এক প্রকার আঁতকে ওঠেন। সে ভাবতে থাকে, পুজোপাঠ না করায় মা রাগ করে চলে যাচ্ছেন। তখন দেবী  বলেন, 'আমি শুধু শাস্ত্র বিহিত মতে পুজো পেতে চাই তা নয়। মা খাও, মা পড়ো – এমন সহজ সরল প্রাণের ভাষায় যে ভক্ত নিজের ভোগ্যবস্তু এবং ব্যবহার্য বস্তু আমাকে নিবেদন করেন, সেটাই আমার পুজো। যদি কোনও ভক্ত আমার সামনে আদ্যাস্তোত্র পাঠ করে, তাহলে আমি বিশেষ আনন্দিত হই।' এরপর দেবী আদ্যাস্তোস্ত্র বলেন এবং অন্নদা তা লিখে রাখেন। সেই স্ত্রোত্রই বর্তমানে আদ্যাপীঠে পাঠ হয়। 

শ্রীরামকৃষ্ণদেবের থেকে দীক্ষা 

পরে দেবী আদ্যার স্বপ্নাদেশ মতো, অন্নদা বিজয়া দশমীতে মূর্তিটি বিসর্জন দেন মাঝগঙ্গায়। স্বপ্নাদেশ মতই মূর্তিটির ছবি তুলে রেখেছিলেন অন্নদাচরণ। সেখান থেকেই তৈরি হয় বর্তমান আদ্যামূর্তি। বাংলার ১৩২৫ সালে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁকে স্বপ্নে সন্ন্যাস দীক্ষাও দেন। রামকৃষ্ণদেব, অন্নদাকে বলেন, 'তোর কবিরাজি ব্যবসা হবে না'। 

 

 

অন্নদা ঠাকুরের সকলের জন্য ভাবনা 

অন্নদা ঠাকুরই ঠিক করে গিয়েছিলেন, আদ্যাপীঠ মন্দিরের আয় থেকে বালকদের জন্য ব্রহ্মচর্যাশ্রম এবং বালিকাদের জন্য তৈরি হবে আর্য নারীর আদর্শ শিক্ষাদান কেন্দ্র। এছাড়া সংসারবিবাগী গৃহস্থের জন্য তৈরি হবে বাণপ্রস্থাশ্রম এবং সংক্রামক ব্যাধি নিবারণের চেষ্টা বা হাসপাতাল তৈরি করা হবে। 

 

অন্নদা ঠাকুরের প্রয়াণ 

বাংলার ১৩৩৫ সালে অন্নদা ঠাকুর পুরীতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রয়াণের এত বছর পরেও, ভক্ত- শিষ্য ও ব্রহ্মচারীরা সেই নির্দেশ মানছেন অক্ষরে অক্ষরে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, অ্যাম্বুল্যান্সে তৈরি হয় ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসালয়। 

আদ্যাপীঠের ভোগ

আদ্যাপীঠের ভোগে রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্য। দেবী আদ্যার জন্য সাড়ে ২২ সের চাল রান্না হয়। রাধাকৃষ্ণের জন্য সাড়ে ৩২সের চাল বরাদ্দ রয়েছে এবং  রামকৃষ্ণ পরহংসদেবের ভোগ রান্না হয় সাড়ে ১২ সের চালে। সেই ভোগ পঞ্চব্যঞ্জনে নিবেদন করা হয়। এর সঙ্গে থাকে বিশেষ পরমান্ন ভোগ। অন্নদা ঠাকুর নির্দেশ দিয়েছিলেন, বৃহৎ ভোগ মন্দিরে যাবে না। মন্দিরের পাশে ভোগালয়ে তা সাজিয়ে দেওয়া হবে। সেখানেই নিবেদন করা হবে ভোগ। তাঁর নির্দেশ মতো শুধুমাত্র পরমান্ন ভোগ দেবীর কাছে যায় আজও। এছাড়া রাতে নিবেদন করা হয় ঘি এবং উৎকৃষ্ট চাল দিয়ে তৈরি অমৃতভোগ। 

 

বিশেষ ভোগের খাওয়ার নিয়ম 

আদ্যাপীঠের ভোগ খেতে চাইলে কুপন কাটতে হয়। যার মূল্য ৬০ টাকা, তবে অর্ধেক টিকিটও কাটা যায় ৩০ টাকা মূল্যের। রাত ৯ টা থেকে দুপুর ১২.৩০ পর্যন্ত কুপন কাটা যায়। সকাল ১১.৪৫ থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ভোগ দেওয়া হয়। তবে এই সময়টা নির্ভর করে ভক্তদের সংখ্যার উপর।   

কতক্ষণ খোলা থাকে আদ্যাপীঠ মন্দির?

ভোর ৪.৩০ থেকে ৫ টা, সকাল ১০.৩০ থেকে  ১১ টা এবং সন্ধ্যা ৭ থেকে ৭.৩০ পর্যন্ত আদ্যা মায়ের মন্দির খোলা থাকে।  

কীভাবে যাবেন আদ্যাপীঠ?

শিয়ালদহ স্টেশন থেকে দক্ষিণেশ্বর স্টেশন নামতে হবে। এরপর অটো/ টোটো বা রিক্সা করে কিছুক্ষণ দূরত্বে মন্দিরে পৌঁছে যাবেন। এছাড়া বাস বা মেট্রো করেও দক্ষিণেশ্বর যেতে পারেন। এরপর একই ভাবে অটো/ টোটো বা রিক্সা করে আদ্যাপীঠ কালী মায়ের মন্দিরে পৌঁছাতে পারেন। 

Advertisement

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement