উত্তর কলকাতায় স্বামী বিবেকানন্দ যে বীজ বপন করেছিলেন, তা আজ অঙ্কুরিত হয়ে মহীরূহ। ১ মে রবিবার রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫ বছর পূর্তির উৎসব উদযাপিত হচ্ছে বেলুড় মঠে। দিনভর বেলুড় বিবিধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী একবছর বিশ্বের নানা প্রান্তে উৎসবের মধ্যে উদযাপিত হবে বলে মঠ সূত্রের খবর। রবিবার মন্ত্রোপাঠের মাধ্যমে সূচনা হয় উৎসবের।
জীবনপথে প্রকৃত মানুষ তৈরির লক্ষ্যে যাত্রা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। তিনি বলতেন,'শুধু বড় লোক হয়ো না … বড় মানুষ হও'। বেদ-বেদান্ত-উপনিষদের দেশে স্বামী বিবেকানন্দ যেন মোহনার তট। যেখানে মিলিছে আধুনিক-প্রাচীন ভারত। পরাধীন ভারতে গৈরিক বসনধারী সন্ন্যাসী ডাক দিচ্ছেন,'ওঠো,জাগো,লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।' সেই লৌহদৃঢ় মানসিকতারই প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর কর্মকাণ্ডে। যার অন্যতম মানুষের সেবার নিয়োজিত রামকৃষ্ণ মিশন। ১৮৯৭ সালের ১ মে উত্তর কলকাতার বাগবাজারে বলরাম বসুর বাড়িতে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। সওয়াল করেছিলেন, সংঘ ছাড়া মহৎ কার্য সম্পন্ন হতে পারে না। সকলে তাঁর প্রস্তাব মেনে নেন। তাই এই দিনটিকেই প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। ৫ মে রামকৃষ্ণ মিশন অ্যাসোসিয়েশন নামকরণ করা হয়েছিল। আইনি জটলিতা পেরিয়ে ১৯০৯ সালে স্বীকৃতি পায় স্বামীজির স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান।
রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণে শুরু হয় অনুষ্ঠান। ভাষণ দেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দজি মহারাজ। নানা টুকরো টুকরো ঘটনায় স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ ও সারদা মায়ের কথা তুলে ধরেন। রামকৃষ্ণ মিশনের ইতিহাস ও দীর্ঘ সময়কালের কথার ফাঁকে আধ্যাত্মিক পাঠও দেন মহারাজ। এ দিন বিকেল ৪টেয় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দজি প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের বোধন করবেন। এ দিন বেলুড়মঠে প্রচুর ভক্ত সমাগমও হয়েছে।
এ দিন রামকৃষ্ণ মিশনকে ১২৫ বছর পূর্তির জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইট করেছেন,'রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫ বছর উপলক্ষে সকল সন্ন্যাসী, পড়ুয়া ও ভক্তদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। ঠাকুর-মা এবং স্বামীজির আদর্শ আমাদের অনুপ্রাণিত করুক।'