
আচার্য চাণক্য, নামটির সঙ্গেই জুড়ে আছে রাজনীতি, অর্থনীতি আর জীবনের বাস্তব জ্ঞান। ‘অর্থশাস্ত্র’-এর জনক বলে খ্যাত এই মহাপণ্ডিতের নীতিগুলি আজও সমান প্রাসঙ্গিক। চাণক্যের মতে, মানুষকে কখনোই এমন পাঁচটি স্থানে বাড়ি তৈরি করা উচিত নয়, কারণ এই স্থানগুলোতে সুখ ও সমৃদ্ধির বদলে আসে অশান্তি ও দুর্ভাগ্য।
চাণক্য নীতিতে বলা হয়েছে এক শ্লোকে
“লোকযাত্রা ভয়ং লজ্জা দাক্ষিণ্যং ত্যাগশীলতা।
পঞ্চ যত্র ন বিদ্যন্তে ন কুর্যাত্তত্র সংগতিম্॥”
এই শ্লোকে আচার্য বলেছেন, যে স্থানে জীবিকা, লজ্জা বা ভয়, দানপুণ্য ও ত্যাগএই পাঁচটি গুণের অভাব থাকে, সেখানে কখনোই বসতি স্থাপন করা উচিত নয়।
পাঁচটি অশুভ স্থান যেখানে বাড়ি বানানো উচিত নয়
১. যেখানে জীবিকার অভাব:
চাণক্যের মতে, এমন স্থানে বাড়ি করা উচিত নয় যেখানে রোজগারের কোনো উপায় নেই। জীবিকা না থাকলে জীবনে স্থিতি আসে না, সংসারে টানাপোড়েন শুরু হয়।
২. যেখানে মানহানির ভয় থাকে:
যে স্থানে সর্বদা লোকলজ্জার ভয় থেকে যায়, সেখানে বাড়ি করা অনুচিত। সৎ, সম্মানিত সমাজে বাস করলে তবেই মানসিক শান্তি পাওয়া যায়।
৩. যেখানে স্বার্থপর মানুষ বাস করে:
যে সমাজে পরোপকার নেই, শুধুই স্বার্থ আর হিংসাসেখানে বাড়ি বানানো মানে নিজের মনুষ্যত্ব হারানো। এমন মানুষের মধ্যে থাকলে আমরাও ধীরে ধীরে স্বার্থপর হয়ে যাই।
৪. যেখানে আইনের ভয় নেই:
আইন-শৃঙ্খলার অভাব যেখানেই দেখা দেয়, সেখানকার জীবন বিপজ্জনক। চাণক্যের মতে, যেখানে মানুষ আইন মানে না, সেখানে স্থায়ীভাবে থাকা সর্বনাশ ডেকে আনে।
৫. যেখানে দানপুণ্যের অভাব:
যে স্থানে মানুষ দানপুণ্য করে না, দরিদ্র বা অসহায়দের সাহায্যে এগিয়ে আসে না— সেই স্থানে মানবতা মরে গেছে। সেখানে সুখ-শান্তি টেকে না।
চাণক্য বলেছেন, জীবনের স্থিতি ও শান্তি নির্ভর করে ঠিক জায়গা বেছে নেওয়ার ওপর। তাই তিনি সতর্ক করেছেন। ভুল জায়গায় বাড়ি বানালে ঘর নয়, তা হয় দুঃখের আস্তানা।