Advertisement

Durgapuja 2023: এখানে দেবীর বাহন রয়্যাল বেঙ্গল, পুজো শুরু হয় একাদশী থেকে

Durgapuja 2023: মহিষাসুরমর্দিনী নন, দেবী একজন সাধারণ নারী। দেবী ভান্ডানি দুর্গা হলেও তাঁর দুটি হাত। তাঁর বাহন বাঘ।কারণ বৈকন্ঠপুর জঙ্গলে একসময় রয়্যালবেঙ্গলের বিচরণ ছিল। তাই দেবী ভান্ডানি বা দুর্গা সিংহের বদলে বাঘের উপর অধিষ্ঠিতা। দেবীর সঙ্গে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ থাকেন। কিন্তু এই মূর্তিতে অসুর থাকে না।

দশমীতে বিসর্জনের পর, একাদশী থেকে এখানে শুরু হয় দুর্গাপুজো
সংগ্রাম সিংহরায়
  • শিলিগুড়ি,
  • 09 Oct 2023,
  • अपडेटेड 3:13 PM IST
  • একাদশী থেকেই ফের দুর্গাপুজোর সূচনা হয় এখানে
  • এখানে দেবী দুর্গার নাম ভান্ডানি
  • দেবী এখানে কৃষিজীবী সম্প্রদায়ের আরাধ্যা

Durgapuja 2023: গোটা রাজ্যে যেখানে উমা বিদায়ে মন খারাপ থাকে দশমীতে, সেখানে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলে নতুন উৎসাহে শুরু হয় দুর্গাপুজো। প্রথাগত দুর্গাপুজোর শেষে এখানে একাদশীতেই শুরু নতুন দুর্গাপুজোর। পুজো চলে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত। বিভিন্ন জায়গায় এই পুজো উপলক্ষে মেলা হয় সারারাত। ফলে ওই সব এলাকার মানুষকে দশমীর বিষাদ ছুঁতে পারে না। তাঁরা ব্যস্ত থাকেন নিজেদের আরাধ্যাকে তুষ্ট করতে। এর পিছনে চমকপ্রদ মিথ রয়েছে গ্রামগুলিতে।

দেবী দুর্গা এখানে 'ভাণ্ডানি'

এই দুর্গার স্থানীয় ও প্রচলিত নাম ভাণ্ডানি। মূলত উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার কয়েকটি এলাকায় ভান্ডানি দেবীর পুজো ঘিরে হয় এই উৎসব। এটি অবশ্য দীর্ঘদিন ঘরে চলে আসলেও তা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েনি। সম্পূর্ণ আঞ্চলিক উৎসব এটি। দশমীতে দেবী দুর্গা বিসর্জনের পর চারপাশে যখন বিষাদ এসে ভর করে। তখন জলপাইগুড়ি জেলার মূলত রাজবংশি অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে নতুন করে ভান্ডানি পুজোর সূচনা হয়। একাদশীর সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন জায়গায় ভান্ডানি পুজো। বিশেষত জেলার ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, মালবাজার, এমনকি আলিপুরদুয়ার এবং পার্শ্ববর্তী কোচবিহার জেলার বেশ কিছু গ্রামেও ভান্ডানি পুজো হচ্ছে।

দেবী ভাণ্ডানি, মহিষাসুরমর্দিনী নন

মহিষাসুরমর্দিনী নন, দেবী একজন সাধারণ নারী। দেবী ভান্ডানি দুর্গা হলেও তাঁর দুটি হাত। তাঁর বাহন বাঘ। কারণ বৈকন্ঠপুর জঙ্গলে একসময় রয়্যালবেঙ্গলের বিচরণ ছিল। তাই দেবী ভান্ডানি বা দুর্গা সিংহের বদলে বাঘের উপর অধিষ্ঠিতা। দেবীর সঙ্গে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ থাকেন। কিন্তু এই মূর্তিতে অসুর থাকে না।

পুজোর সূচনা

এই পুজো শুরু হয়েছিল রাজবংশি সম্প্রদায়ের কৃষকদের হাতেই। তবে মিশ্র সংষ্কৃতিতে এলাকার অন্য সম্প্রদায়ও এখন এই উৎসবে শামিল হন। দেবী দুর্গার আরেক রূপ ভান্ডানি বলে বিশ্বাস স্থানীয়দের। একাদশী থেকে চারদিন ধরে চলে এই উৎসব। সূচনা হয় দশমীর দিন ‘যাত্রা পুজো’দিয়ে। মূলত চাষাবাদ ভাল হওয়ার কামনা নিয়ে এবং সমৃদ্ধি আশা নিয়ে এই পুজো করা হয়। পরদিন অর্থাৎ একাদশী থেকে শুরু হয় ভাণ্ডানি দেবীর বন্দনা।

Advertisement

পুজোর পিছনে প্রচলিত কিংবদন্তী

ভান্ডানিকে কেউ দেবী দুর্গার আবার কেউ বনদুর্গা বলেন। কথিত আছে, দশমীতে বিসর্জনের পর দেবী দুর্গা উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল দিয়ে বাপের বাড়ি থেকে কৈলাসে ফেরার সময় রাতের অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেলেন। গভীর রাতে জঙ্গলের মধ্য থেকে নারীকন্ঠে কান্নার শব্দ শুনে ছুটে আসেন আশপাশের বনবস্তির মানুষ। তাঁরা সেই রাতে নিজেদের গ্রামে আশ্রয় দেন পথ হারিয়ে ফেলা গ্রাম্য বধূটিকে। একটি রাত দেবী দুর্গা সেই গ্রামে কাটিয়ে ফিরে যান কৈলাসে। যাওয়ার আগে অবশ্য তিনি গ্রামবাসীদের নিজের প্রকৃত পরিচয় জানান। তিনি এও বলেন, তিনি গ্রামবাসীদের আতিথ্যে সন্তুষ্ট হয়েছেন। উত্তর বাংলার অরণ্যবেষ্টিত গ্রামের মানুষের শস্যের ভান্ডার সারা বছর ভরা থাকবে। সেই থেকেই এখানে দশমীর পর ভান্ডানি পুজোর সূচনা। এছাড়াও আরও মিথ রয়েছে। তবে এটিই বেশি মান্য।

পুজোর রীতি

প্রায় পাঁচশো বছর ধরেই এই পুজো প্রচলিত। এই পুজোর বিশেষত্ব হল পুজো উপলক্ষ্যে সব জায়গাতেই বসে বিরাট মেলা। দুর্গাপুজোর মতেই চার দিন চলে ব্যাঘ্রবাহিনী ভান্ডানি পুজো। তন্ত্র মতে পূজিত হন দেবী। উত্তরবঙ্গের ইতিহাস ঘেঁটে ও বিভিন্ন দলিল থেকে জানা যায়, ভান্ডানি দেবীর পুজোর সূচনা হয় বহু বছর আগে। তখন দুর্গাপুজোর আয়োজন করতে হলে রাজাকে জানাতে হত, তিনি সম্মতি দিলে তবেই তা করা যেত। তাই স্থানীয়রা নিজেদের আরাধ্যা হিসেবে দুর্গাপুজোর বিকল্প হিসেবে ভান্ডানি পুজোর প্রবর্তন করেছিলেন। সেই ঐতিহ্য আজও বজায় রয়েছে।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement