আগামী ২ অক্টোবর দসেরা পালিত হবে গোটা দেশে। অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির উদয়ের প্রতীক হিসেবে দেখা হয় এই দিনটিকে। দসেরার দিনই বিজয়া দশমী উদযাপিত হয় বাংলায়। এই দিনই ভগবান রাম রাবণকে বধ করেছিলেন। তবে রাবণকে কেবলমাত্র রাক্ষস রাজা হিসেবে দেখা হয়, তেমনটা নয়। বেদ শাস্ত্রে রাবণকে মহান মনে করা হয় এবং জ্ঞানী পুরুষের চোখেও দেখা হয়। সে কারণেই রাম লক্ষ্মণকে রাবণের মৃত্যুর আগে জীবনের অমূল্য পাঠ শেখার জন্য পাঠিয়েছিলেন।
রামায়ণে বলা হয়েছে, রাবণ যখন মৃত্যুশয্য়ায় ছিল, রাম তাঁর ভাই লক্ষ্মণকে বলেছিলেন, রাবণের মতো বিদ্যান ব্যক্তি জগৎ সংসারে আর দু'টো নেই। রাবণের কাছে রয়েছে নীতি, শক্তি এবং জ্ঞানের অপার ভাণ্ডার। তাই লক্ষ্মণকে জীবনের পাঠ নিতে রাবণের কাছে পাঠিয়েছিলেন রাম। লক্ষ্মণও রামের আদেশ পালন করতে রাবণের কাছে গিয়ে বসেন। সে সময়ে রাবণ লক্ষ্মণকে জীবনের ৩ অমূল্য বাণী শুনিয়েছিলেন। যা প্রত্যেক মানুষের জন্যই অনুপ্রেরণামূলক হতে পারে।
শুভ কাজ পিছিয়ে দেওয়া উচিত নয়
রাবণ লক্ষ্মণকে বলেছিলেন, যখন জীবনে কোনও ভাল কাজ করার হবে, দ্রুত তা সম্পন্ন করে ফেলবে। ভাল কাজ কখনও এড়িয়ে চলা উচিত নয়। বলা যায় না, কখন জীবন থেমে যায়। ফলে পুণ্য এবং লাভজনক কাজ দ্রুত করে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ। এর পাশাপাশি খারাপ কাজ যত এড়িয়ে যাওয়া যায় ততই ভাল।
শত্রুকে কখনও দুর্বল ভাববেন না
রাবণ লক্ষ্মণকে শিখিয়েছিলেন জীবনে শত্রু যত ছোটই হোক না কেন কিংবা অসুখ যত কমই হোক না কেন কখনও তাকে দুর্বল ভাববেন না। ছোট দেশলাইও বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে। রাবণও ভগবান রাম, লক্ষ্মণ এবং বানর সেনাকে দুর্বল ভেবে ফেলেছিলেন। এটাই তাঁর সবচেয়ে বড় ভুল প্রমাণিত হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই ভুল।
নিজের রহস্য গোপন রাখুন
জীবনের সঙ্গে জড়িত গভীর রহস্য কিংবা উপদেশ সর্বদা গোপন রাখা উচিত। লক্ষ্মণকে তৃতীয় এই শিক্ষাই দিয়েছিল রাবণ। সামনের লোকটি যতই অপমান করুক না কেন প্রত্যেক বিষয় গলা ফাটিয়ে চিৎকার করা উচিত নয়। রহস্য শত্রুর সামনে ফাঁস হয়ে গেলে রাবণের মতো পরিণতি হতে বাধ্য।