দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ইদ-উল-আদাহ। যা বকরি ইদ নামেই পরিচিত। ইসলামিক ক্যালেন্ডারের দশম মাস জুল হিজ্জাতে পালিত হয় এই বকরি ইদ। এটিকে কোরবানির ইদও বলা হয়ে থাকে। তবে জানেন কি, কেন কোরবানি দেন মুসলিমরা?
কেন পালিত হয় বকরি ইদ?
মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উৎসব এই ইদ-উল-আদহা। এই পরবে পশু কোরবানির প্রথা রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কোরবানি শব্দের অর্থ হল ত্যাগ ও তিতিক্ষা। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, ত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহ নৈকট্য অর্জনকেই বলা হয় কোরবানি।
ইদ শব্দের অর্থ হল আনন্দ। আর আদহা বলতে পশু কোরবান করা বোঝায়। মূলত এই উৎসবে পাঁঠা, ছাগল বা ভেড়া কোরবান করেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। এই প্রাণীগুলিকেই হিন্দি ভাষায় বলা হয় বকরি। সেই কারণে এই উৎসবকে বকরি ইদও বলা হয়।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইদ-উল-আদহার একাধিক নাম রয়েছে। ইউরোপের ইসলামীয় দেশ তুর্কিতে একে বলা হয় কোরবান বায়ারামি।
কেন কোরবানি দেন মুসলিমরা?
ইসলামীয় ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, কোরবানির ইদের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আত্মত্যাগের এক অদ্ভূত ইতিহাস। শুধু তাই নয়, এই উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে পয়গম্বর ইব্রাহিমের কাহিনিও। বলা হয়, একবার স্বপ্নে আল্লাহর দেখা পান পয়গম্বর ইব্রাহিম। সেখানেই তাঁকে নিজের আত্মত্যাগের পরীক্ষা দিতে বলেন আল্লাহ। আত্মত্যাগের পরীক্ষা হিসেবে পয়গম্বর ইব্রাহিমকে নিজের সন্তান কোরবান করার নির্দেশ দেন আল্লাহ। এতে ভেঙে না পড়ে পরীক্ষা দিতে উদ্যোত হন পয়গম্বর ইব্রাহিম। শুধু তাই নয়, পরের দিন গোটা বিষয়টি সন্তান ইসমাইলকে জানান তিনি। এরপর আল্লাহ নির্দেশ পালনে সন্তানকে নিয়ে বিপদসংকুল পথে পাড়ি দেন পয়গম্বর ইব্রাহিম। বহু ঝড়-ঝাপটা সামলে অবশেষে আল্লাহ নির্দেশিত জায়গায় পৌঁছন তাঁরা। সেখানে পৌঁছেই সন্তানকে কোরবান করতে উদ্যত হন পয়গম্বর ইব্রাহিম। কোরবানির আগে অবশ্য নিজের চোখ বেঁধে নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর এই নিষ্ঠা ও ত্যাগ দেখে মুগ্ধ হন আল্লাহ। সন্তান ইসমাইলকে কোরবান করতে দেননি তিনি। ওই জায়গায় তখন আবির্ভূত হয় একটি ভেড়া। সন্তানের বদলে চতুষ্পদ প্রাণীটিকেই কোরবান করেন পয়গম্বর ইব্রাহিম।
এই ঘটনাকে স্মরণ করেই বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ইদ-উল-আদহা।