হিন্দু ধর্মে বিভিন্ন তিথিতে মা কালীর (Goddess Kali) বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। দেবীর আরাধনা সর্বজনবিদিত। জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে ফলহারিণী কালীপুজো (Falharini Kali Puja) অনুষ্ঠিত হয়। ফলহারিণী কালী পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেকগুলি পৌরাণিক গল্প।
মা কালী জীবের কর্মফল অনুসারে ফল প্রদান করছেন। তিনিই নিজের মধ্যে সমস্ত কর্মফলকে ধারণ করেন। এই মাতৃরূপা মহাশক্তি প্রসন্না হলে জীবের দুঃখ ও দুর্দশা থেকে মুক্তি মেলে। সেই সঙ্গে শারীরিক, মানসিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি লাভ হয়।
রামকৃষ্ণদেব এদিনই স্ত্রী সারদা দেবীকে পুজো করেছিলেন
কথিত আছে, রামকৃষ্ণদেব (Shri Ramkrishna Paramhansa Dev) ফলহারিণী কালী পুজোর দিনই স্ত্রী সারদা দেবীকে পুজো করেছিলেন জগৎ কল্যাণের জন্য। এদিন শ্রীমা সারদাকে (Sarada Devi) ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন বলে আজও রামকৃষ্ণমঠ ও আশ্রমে এই পুজো 'ষোড়শী' পুজো নামে পরিচিত। এছাড়া ১২৮০ বঙ্গাব্দে জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে তিনি দক্ষিণেশ্বরে আদ্যাশক্তি সগুণরূপের পুজো করেছিলেন। সে জন্যে এইদিনটি অত্যন্ত শুভ ও তাৎপর্যপূর্ণ। শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর মোক্ষপ্রাপ্তির জন্য বিশেষ নিয়মে পুজো করলেও এই দিনটিতে হিন্দু ধর্মাবলাম্বীরা নানাবিধ মরসুমী ফল দিয়ে কালীর পুজো করে থাকেন।
আরও পড়ুন: কঠিন সময়ে বিপদমুক্ত করবে মহাদেবের মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র! জানুন নিয়মকানুন
আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল ইত্যাদি রকমারি ফল জ্যৈষ্ঠ মাসে সহজে পাওয়া যায়। ভক্তেরা তাঁদের ইষ্টদেবীকে বিভিন্ন ফল দিয়ে প্রসাদ নিবেদন করে থাকেন। শাস্ত্রে বলা আছে, 'জীবনেয সর্বস্ব'। যার অর্থাৎ একদিকে ফলহারিণী, সাধকের কর্মফল হরণ করেন। অন্য দিকে কর্মফল হরণ করে ভক্তদের, তাঁদের অভীষ্টফল, মোক্ষফল প্রদান করেন।
আগামী ৯ জুন, জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে ফলহারিণী কালী পুজোর দিন পড়েছে। ৯ জুন, বুধবার দুপুরে ১.৩২ মিনিটে অমাবস্যা শুরু হবে এবং ১০ জুন, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩.২৮ পর্যন্ত থাকবে।
আরও পড়ুন: শক্তি আরাধনায় পিছিয়ে নেই মার্কিন মুলুকও, দেখে নিন সেদেশের কালী মন্দিরগুলি
ফলহারিণী কালী পুজোর দিন মা কালী স্বয়ং তাঁর সন্তানদের শুভ ফল প্রদান করেন এবং সেই সঙ্গে তাঁদের অশুভ ফলও হরণ করে থাকেন।