হিন্দু ধর্মে বিভিন্ন তিথিতে মা কালীর (Goddess Kali) বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। দেবীর আরাধনা সর্বজনবিদিত। জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে ফলহারিণী কালী পুজো হয়। এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক পৌরাণিক গল্প।
ফলহারিণী কালী পুজো ২০২৩-র নির্ঘণ্ট
আগামী ১৮ মে (বাংলায় ৩ জ্যৈষ্ঠ), বৃহস্পতিবার, এবারের ফলহারিণী কালী পুজোর দিন পড়েছে। ১৮ মে, রা ৯/১৩/৩৬ মিনিট থেকে ১৯ মে, রা ৮/৪৩/২৩ মিনিট পর্যন্ত থাকবে অমাবস্যা তিথি।
কেন পালন হয় ফলহারিণী কালীপুজো?
মা কালী জীবের কর্মফল অনুসারে ফল প্রদান করছেন। তিনিই নিজের মধ্যে সমস্ত কর্মফলকে ধারণ করেন। এই মাতৃরূপা মহাশক্তি প্রসন্না হলে জীবের দুঃখ ও দুর্দশা থেকে মুক্তি মেলে। সেই সঙ্গে শারীরিক, মানসিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি লাভ হয়।
কথিত আছে, রামকৃষ্ণদেব ফলহারিণী কালী পুজোর দিনই স্ত্রী সারদা দেবীকে পুজো করেছিলেন জগৎ কল্যাণের জন্য। এদিন শ্রীমা সারদাকে ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন বলে আজও রামকৃষ্ণমঠ ও আশ্রমে এই পুজো 'ষোড়শী' পুজো নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন: জামাই আদরের বিশেষ পার্বণ! জানুন এবছরের জামাইষষ্ঠীর দিনক্ষণ
এছাড়া ১২৮০ বঙ্গাব্দে জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে তিনি দক্ষিণেশ্বরে আদ্যাশক্তি সগুণরূপের পুজো করেছিলেন। সেজন্যে এইদিনটি অত্যন্ত শুভ ও তাৎপর্যপূর্ণ। শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর মোক্ষপ্রাপ্তির জন্য বিশেষ নিয়মে পুজো করলেও এই দিনটিতে হিন্দু ধর্মাবলাম্বীরা নানাবিধ মরসুমী ফল দিয়ে কালীর পুজো করে থাকেন।
অন্য দিকে কর্মফল হরণ করে ভক্তদের, তাদের অভীষ্টফল, মোক্ষফল প্রদান করেন। ফলহারিণী কালী পুজোর দিন মা কালী স্বয়ং, তার সন্তানদের শুভ ফল প্রদান করেন এবং সেই সঙ্গে তাদের অশুভ ফলও হরণ করে থাকেন।
আরও পড়ুন: ৩৬ বছর পর মেষে মিলন গুরু- রাহুর! ৭ রাশির বিরাট লাভ, বাকিদের?
মানুষ সারা জীবন কর্ম করে যান। কিন্তু মনে করা হয়, এই কর্মসমূহের ফল দান করেন দেবী কালিকা। তিনি সমস্ত কিছু শক্তি, জ্ঞান, ইচ্ছা ও কর্মশক্তিরূপে বিরাজিতা। আর ফলহারিণী কালী পুজো প্রত্যেকের বিদ্যা, কর্ম ও সেই সঙ্গে অর্থভাগ্যের উন্নতি ঘটে। প্রেম-প্রণয়ে সমস্ত বাধা দূর হয়। দাম্পত্য সাংসারিক জীবনেও সুখশান্তি লাভ হয়।
আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল ইত্যাদি রকমারি ফল জ্যৈষ্ঠ মাসে সহজে পাওয়া যায়। ভক্তেরা তাদের ইষ্টদেবীকে বিভিন্ন ফল দিয়ে প্রসাদ নিবেদন করে থাকেন। শাস্ত্রে বলা আছে, 'জীবনেয সর্বস্ব'। যার অর্থাৎ একদিকে ফলহারিণী, সাধকের কর্মফল হরণ করেন।