Advertisement

দেবীপক্ষের ষষ্ঠীতে মা দুর্গার বোধন, কিন্তু কেন? জানুন বোধন কথা

মহালয়ার পরেই শুরু হয়ে যায় দেবীপক্ষ। আর এই দেবীপক্ষের ষষ্ঠী, অর্থাৎ শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে হয় মা দুর্গার বোধন। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই রীতি। কিন্তু ষষ্ঠীতেই কেন দেবীর বোধন? আসলে এর নেপথ্যে রয়েছে পৌরানিক কাহিনী। যার সূচনা সেই ত্রেতা যুগে রামচন্দ্রের আমলে। আর তাতে রামচন্দ্রকে সাহায্য করেছিলেন স্বয়ং প্রজাপতি ব্রহ্মা।

প্রতীকী ছবিপ্রতীকী ছবি
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 21 Oct 2020,
  • अपडेटेड 1:08 PM IST
  • অকালে দেবীর পুজো করেছিলেন রামচন্দ্র
  • বোধনে রামচন্দ্রকে সাহায্য করেছিলেন ব্রহ্মা
  • রীতি মেনে আজও পুজোর আগে বিল্ব বৃক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয় ঘটে

প্রীতম ব্যানার্জী

মহালয়ার পরেই শুরু হয়ে যায় দেবীপক্ষ। আর এই দেবীপক্ষের ষষ্ঠী, অর্থাৎ শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে হয় মা দুর্গার বোধন। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই রীতি। কিন্তু ষষ্ঠীতেই কেন দেবীর বোধন? আসলে এর নেপথ্যে রয়েছে পৌরানিক কাহিনী। যার সূচনা সেই ত্রেতা যুগে রামচন্দ্রের আমলে। আর তাতে রামচন্দ্রকে সাহায্য করেছিলেন স্বয়ং প্রজাপতি ব্রহ্মা। 

বোধন কথার অর্থ হল জাগ্রত করা। রাবণের সঙ্গে যুদ্ধের সময় দেবী দুর্গার পুজো করেছিলেন রামচন্দ্র। কিন্তু সে ছিল অকালবোধন। কিন্তু সেই বোধনকে অকাল কেন বলা হয়? পুরাণ মতে সূর্যের উত্তরায়ন হচ্ছে দেবতাদের দিন। সূর্যের এই গমনে সময় লাগে ৬ মাস। এই ছয় মাস দেবতাদের একদিনের সমান। আর দিনের বেলায় দেবতারা জেগে থাকেন। তাই শাস্ত্র মতে দিনেই দেবতাদের পুজো করা হয়। আবার সূর্যের দক্ষিনায়ন হল দেবতাদের রাত। সূর্যের এই গমনকালের ছয় মাসকে দেবতাদের এক রাত ধরা হয়। আর রাতে দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন। তাই রাতে পুজো করার কোনও বিধান নেই শাস্ত্রে। কিন্তু রামচন্দ্র দেবীর পুজো করেছিলেন শরৎকালে, যা দক্ষিনায়নের মধ্যে পড়ে। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে শরৎকাল দেবীর পুজোর জন্য 'অকাল'। কিন্তু দেবীর পুজো করতে হলে তো তাঁর বোধন অর্থাৎ তাঁকে জাগরিত করতে হবে। তাই শরৎকালের এই বোধনকে অকাল বোধন হিসেবে ধরা হয়। তবে রামচন্দ্রের আগে সত্য যুগে চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষে প্রথম আদ্যাশক্তি মহামায়ার পুজো করেছিলেন রাজর্ষি সুরথ। আর তাঁর সঙ্গী ছিলেন সমাধি বৈশ্য। সেই পুজোকেই বর্তমানে আমরা বাসন্তী নামে জানি।

আরও পড়ুন

রাবণ ছিলেন দেবাদিদেব মহাদেবের বরপ্রাপ্ত। আবার দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপের একনিষ্ঠ সাধক ছিলেন তিনি। কিন্তু রামের হাতে রাবণের বধ ছিল দৈববাণী। তাই রাম-রাবণের যুদ্ধ যখন অবশ্যম্ভাবী সেসময় প্রজাপতি ব্রহ্মার স্মরণ নিলেন দেবতারা। কিন্তু দেবী তখন নিদ্রিতা। দেবতাদের অনুরোধে স্বয়ং ব্রহ্মা দেবীর পুজো করে তাঁকে তুষ্ট করার উপায় জিজ্ঞাসা করলেন। দেবী বললেন, যদি রামচন্দ্র তাঁর বোধন করেন, তবেই তিনি রাবণ বধে তাঁকে সাহায্য করবেন। রামকে দেবীর নির্দেশের কথা জানালেন প্রজাপতি ব্রহ্মা ও দেবরাজ ইন্দ্র। যেহেতু সময়টা ছিল শরৎকাল, তাই রামচন্দ্র নিজ হাতে দেবীর মূর্তি গড়ে তাঁর আরাধনা প্রস্তুতি করলেন। সেসময় ধ্যানে বসে ব্রহ্মা দেখলেন একটি বিল্ব বৃক্ষ বা বেল গাছের নিচে একটি ৮-১০ বছরের বালিকা খেলা করছে।  ব্রহ্মা বুঝলেন তিনিই দেবী। তারপরেই প্রজাপতি স্থির করলেন দেবীর বোধনের পুজো হবে ওই বিল্ব বৃক্ষের নিচেই। সেই কারণে প্রথা মেনে আজও বোধনের আগে বিল্ব শাখা বা বিল্ব বৃক্ষের পুজো করে তা প্রতিষ্ঠা করা হয় দেবীর ঘটে। তারপরেই শুরু হয় বোধন, শুরু হয় দেবীর আরাধনা। 

Advertisement
Read more!
Advertisement
Advertisement