Advertisement

Hindu Married Women Rituals- Shankha- Pola: বাঙালি হিন্দু বিবাহিত মহিলাদের শাঁখা- পলা পরা রীতি কেন?

Marriage Rituals: পুরাণ ও বাস্তু মতে বিশ্বাস করা হয়, মহিলারা শাঁখা-পলা পরলে, তার স্বামীর মঙ্গল হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর এই শাঁখা- পলা ভেঙে ফেলা হয়।  যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই রীতি- প্রথা।

শাঁখা- পলা
Aajtak Bangla
  • কলকাতা ,
  • 28 Sep 2024,
  • अपडेटेड 8:07 PM IST

বিবাহিত মহিলারা শাঁখা-পলা পরেন। সনাতন ধর্মে সিঁদুরের মতো শাঁখা-পলারও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, শাঁখা-পলা ছাড়া বিয়ে অসম্পূর্ণ থেকে যায়। পুরাণ ও বাস্তু মতে বিশ্বাস করা হয়, মহিলারা শাঁখা-পলা পরলে, তার স্বামীর মঙ্গল হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর এই শাঁখা- পলা ভেঙে ফেলা হয়।  যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই রীতি- প্রথা। হাল আমলে বহু বিবাহিত মহিলা শুধুই ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসেবে বেছে নেন এই অলঙ্কার। রকমারি ডিজাইনের সোনা বা রুপো দিয়ে বাঁধানো শাঁখা- পলাও বর্তমানে দারুণ ট্রেন্ডি। কিন্তু কেন পরা হয় শাঁখা-পলা? কীভাবে শুরু হয়েছিল এই রীতি? 

পলার বেশ কিছু দ্রব্যগুণ আছে

পলা হল আসলে লাল রঙের প্রবাল। প্রবাল প্রাণীর জীবাশ্ম থেকেই পলা তৈরি হয়ে থাকে। শাঁখার মতো পলাও দু'হাতে পরার রীতি হয়। পলা পরার কোনও পৌরাণিক ব্যখ্যা যুক্তিগত ভাবে না থাকলেও পলার বেশ কিছু দ্রব্যগুণ আছে। মনে করা হয়, শরীরে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা রুখতে বা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পলার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। সেই কারণেই পলা পরা হয়। এমনকী এই ক্ষেত্রে পলা ভেজানো জলও বেশ উপকারী। আবার বলা হয় যে, পলা ধারণ করলে মহিলাদের রজঃস্রাবজনিত সমস্যার সমাধান হয়।

 

 

বিবাহিত মহিলারা শাঁখা-পলা গয়না হিসাবে পরেন

প্রাচীনকালে একটি মেয়ে রজঃস্বলা হওয়ার পরেই তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত। তাই বয়সের সেই হিসাব অনুযায়ী তাঁকে পলা পরানো হত এবং সেই থেকেই এটি একটি বৈবাহিক চিহ্নে রূপান্তরিত হয়েছে। যদিও বর্তমানে অধিকাংশ বিবাহিত মহিলা শাঁখা-পলা গয়না হিসাবেই ব্যবহার করে থাকেন।

Advertisement

আট মতে হয় হিন্দু বিয়ে হয় 

হিন্দু বিয়ে মোট আটটি মতে হয়। ব্রাক্ষ্ম, দৈব, অর্শ, প্রজাপাত্য, অসুর, গান্ধর্ব, রাক্ষস আর পৈশাচ। এর মধ্যে রাক্ষস বিবাহ রীতিতেই শাঁখা এবং পলা পরার উৎপত্তি বলে মনে করেন অনেকে। এই পদ্ধতিতে বলপূর্বক কন্যাকে অন্য রাজ্যে এনে বিয়ে করা হত। যেহেতু তাকে বন্দিদশায় আনা হত, তাই তার হাতে ও পায়ে লোহার শিকল বেঁধে দেওয়া হত। সেই লোহার শিকলই পরবর্তিতে শাঁখা-পলার রূপ ধারণ করেছে বলে মনে করা হয়।

 

মাঝিদের গল্প 

অন্য একটি মত অনুসারে,বহু যুগ আগে মৎস্যজীবীরা দিনের পর দিন নদী-সমুদ্রে পড়ে থাকতেন। মাঝিদের আর্থিক অবস্থা কোনওদিনই সেরকম ভাল ছিল না। তাই বিয়ের সময় স্ত্রীকে সোনা-রুপোর গয়না দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। শঙ্খ-পলার চুড়িই উপহার দিতেন তারা। সেই থেকেও বিবাহিত মহিলাদের শাঁখা-পলা পরার রীতি প্রচলিত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই।

মহাভারতের সময়কাল থেকে শাঁখার ব্যবহার শুরু 

আবার ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে মহাভারতের সময়কাল থেকে শাঁখার ব্যবহার শুরু হয়। সেই সময়ে শঙ্খাসুর নামে এক অসুরের তাণ্ডবে ত্রিভুবন অতিষ্ট হয়ে যায়। স্বর্গের দেবতারা শঙ্খাসুরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শরণাপন্ন হন বিষ্ণুর। বিষ্ণুদেব তখন এই অসুরকে বধ করে দেবতাদের রক্ষা করেন। এরপর তার ধর্মপরায়ণ স্ত্রী তুলসী, নারায়ণের কাছে স্বামীকে ফেরত পাওয়ার জন্য ধ্যান শুরু করেন। তুলসীর প্রার্থনায় নারায়ণ সারা দিলেও, শঙ্খাসুরকে ফিরিয়ে দেওয়ার মনোবাঞ্ছা পূরণ করতে পারেন না। তখন নারায়ণ শঙ্খাসুরের প্রতীক হিসাবে তারই হাড় দিয়ে এই শাঁখা তৈরি করেন এবং তুলসীকে দেন। সেই থেকেই বিবাহিত মহিলারা স্বামীর মঙ্গল কামনায় এটি পরা শুরু করেন।

 

 

৯০০ বছর আগেও শাঁখার প্রচলন ছিল

ব্রিটিশ লেখক জেমস ওয়াইজের লেখা থেকে জানা যায়, বল্লাল সেনের সঙ্গে দক্ষিণ ভারত থেকে বাংলাদেশে শাঁখারিরা এসেছিলেন। প্রায় ৯০০ বছর আগেও শাঁখার প্রচলন ছিল। সাধারণত এর সঙ্গে নানা কুসংস্কার জুড়ে থাকলেও, এখনও বিয়ের চিহ্ন হিসাবেই বহন করেন মহিলারা। যদিও বর্তমান সময়ে আধুনিকা নারীরা শাঁখা- পলা পরেন না অনেকেই। আবার কর্মক্ষেত্রের জন্যে অনেকের এগুলি পরা সম্ভব হয় না। 

আবার বহু ঐতিহাসিকদের মতে, বল্লাল সেনের অনেক আগে থেকে (প্রায় ২,০০০ বছর আগে দক্ষিণ ভারতে শঙ্খশিল্পের উদ্ভব ঘটে) দক্ষিণ ভারতে অলঙ্কার হিসাবে শাঁখার প্রচলন ছিল। তবে তার পিছনে কোনও ধর্মীয় কারণ ছিল কিনা— সে বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে।
 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement