রথযাত্রা মানেই উৎসব। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে রথে চড়িয়ে উদযাপন। শুধু পুরী নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রথযাত্রা পালন করা হয়। বিশেষ করে, বাংলার সর্বত্র রথযাত্রা ঘিরে উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো থাকে। পাড়ায় পাড়ায় রথ টানার ছবিও চেনা। অনেক এলাকায় রথ উপলক্ষে মেলাও বসে।
রথযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ হল জিলিপি আর পাঁপড়। মিষ্টির দোকানে সকাল থেকেই জিলিপির চাহিদা থাকে তুঙ্গে। অনেক এলাকায় রথ উপলক্ষে জিলিপি আর পাঁপড়ের দোকান বসে। সকাল থেকে সন্ধ্যা, জিলিপি ও পাঁপড় রমরম করে বিক্রি হয়। কিন্তু রথের দিন কেন জিলিপি ও পাঁপড় খাওয়া হয়, জানলে চমকে যাবেন...
প্রথমে জেনে নেওয়া যাক জিলিপি সম্পর্কে কিছু কথা...
শোনা যায়, মিশরের ইহুদিরা জালাবিয়া নামে এক মিষ্টি বানাতেন, তা জিলিপির আদি রূপ।কথিত রয়েছে, ১৪০০-১৫০০ খ্রিস্টাব্দে কুণ্ডলিকা বা জলবল্লিকা নামে ভারতের জিলিপি পরিচিতি পেয়েছিল।জিলিপি পশ্চিম এশিয়া থেকেই ভারতে এসেছে বলে জানা যায়। অনেকের মতে, মুঘল সম্রাটদের হাত ধরেই ভারতে জিলিপি খাওয়ার চল শুরু হয়।
পাঁপড় নিয়ে কিছু কথা
জানা যায়, পাঁপড় মূলত উত্তর ভারতের খাবার। পঞ্জাব থেকেই পাঁপড় এসেছে। রামায়ণেও এর উল্লেখ রয়েছে।
এবার বলা যাক, রথযাত্রায় কেন জিলিপি ও পাঁপড় খাওয়া হয়...
কথিত রয়েছে, রথের আগে স্নানযাত্রায় ১০৮ ঘড়া জলে স্নান করেন প্রভু জগন্নাথদেব। তারপরেই তাঁর জ্বর আসে। সেই সময় টানা ৭ দিন তিনি নিভৃতবাসে থাকেন। পাচন খাইয়ে সুস্থ করা হয় জগন্নাথদেবকে। এরপরে বলরাম ও সুভদ্রার সঙ্গে রথে চড়ে গুন্ডিচায় মাসির বাড়ি যান জগন্নাথদেব। তখন মুখের স্বাদ বদলের জন্য নোনতা খাওয়ার ইচ্ছা হয় প্রভুর। তখনই নাকি পাঁপড় ভাজা খান জগন্নাথদেব। আর মিষ্টি হিসেবে খান জিলিপি। সেই থেকেই রথের দিন জিলিপি ও পাঁপড় খাওয়ার চল শুরু হয়।
তবে জগন্নাথদেবের ৫৬ ভোগে জিলিপি ও পাঁপড়ের ঠাঁই হয়নি। কিন্তু গ্রামবাংলায় রথের মেলায় জিলিপি ও পাঁপড় সেই আদিকাল থেকেই ওতপ্রোতভাবে জুড়ে রয়েছে। আজও রথ মানেই জিলিপি ও পাঁপড় খাওয়ার দিন।