Advertisement

Kali Puja 2021, Sati Peeth in Birbhum: কংকালীতলা থেকে ফুল্লরা! জানুন বীরভূমের এই ৫ সতীপীঠের পৌরাণিক কাহিনি

Kali Puja 2021, Sati Peeth in Birbhum: ভগবান বিষ্ণু (Lord Vishnu) পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার থেকে বাঁচানোর জন্যে পাঠিয়ে দেন সুদর্শন চক্র (Sudarshan Chakra)। যার ফলে দেবী সতীর দেহ ৫১ টি খন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়।

বীরভূমেই ৫ সতীপীঠের পৌরাণিক কাহিনি
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 03 Nov 2021,
  • अपडेटेड 9:04 PM IST
  • মহাদেবের প্রলয় নৃত্য দেখে ভয় পেয়ে যান সকলে।
  • দক্ষ রাজার অমতে মহাদেবকে বিয়ে করেছিলেন দেবী সতী।
  • লাল মাটির দেশ বীরভূমকে বলা চলে মা কালীর চারণভূমি।

Kali Puja 2021, Sati Peeth in Birbhum: দক্ষ রাজার অমতে মহাদেবকে (Lord Shiva)  বিয়ে করেছিলেন দেবী সতী (Devi Sati)। রেগে গিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যে একটি যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন দক্ষরাজা (Daksha Raja)। সেই যজ্ঞের আগুনে আত্মঘাতী হন সতী। সেই ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন দেবাদিদেব। তাঁর এই প্রলয় নৃত্য দেখে ভয় পেয়ে যান সকলে।

ভগবান বিষ্ণু (Lord Vishnu) পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার থেকে বাঁচানোর জন্যে পাঠিয়ে দেন সুদর্শন চক্র (Sudarshan Chakra)। যার ফলে দেবী সতীর দেহ ৫১ টি খন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। সেই সব কটি জায়গাকে সতীপীঠ (Sati Peeth) বলা হয়। সতীর প্রত্যেকটি পীঠ হিন্দু ধর্মে পরম পবিত্র বলে মানা হয়। 

এত স্থানের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গই এমন স্থান যেখানে একই জেলাতে পাঁচটি সতীপীঠের রয়েছে। লাল মাটির দেশ বীরভূমকে (Birbhum) বলা চলে মা কালীর (Goddess Kali) চারণভূমি। কংকালীতলা (Kankalitala), বক্রেশ্বর (Bakreswar), নলাটেশ্বরী (Nalateswari), ফুল্লরা (Fullora) , নন্দিকেশ্বরী (Nandikeswari)- এই পাঁচটি সতীপীঠ (Sati Peeth) রয়েছে বীরভূমে। 

নলাটেশ্বরী (Nalateswari Temple)

বীরভূমের নলহাটি স্টেশনের নিকটবর্তী এই স্থানে দেবী পার্বতীর কন্ঠনালী পড়েছিল। সেই থেকে এই এই পিঠের নাম নলাটেশ্বরী। লোক মুখে প্রচারিত, কামদেব স্বপ্নাদেশে সতীরী কন্ঠনালী উদ্ধার করেন। দেবী এখানে ত্রিনয়নী কালিকা রূপে পূজিত হন। এই সতীপীঠের নামানুসারেই জায়গাটির নাম দেওয়া হয়েছে নলহাটি। 

 

নন্দীকেশ্বরী (Nandikeswari Temple)

বীরভূমের সাঁইথিয়া শহরে অবস্থিত নন্দীকেশ্বরী মন্দির। সতীর কন্ঠ হার পড়েছিল এখানে। সতী এখানে পূজিত হন নন্দিনী রূপে এবং মন্দিরে অবস্থিত ভৈরব এখানে পূজিত হন নন্দীকেশ্বর রূপে। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সাধক বামাক্ষ্যাপার সিদ্ধিলাভের কাহিনীও। পুরাণ মতে,সাধক বামাক্ষ্যাপা যখন তারাপীঠে সাধনা করছিলেন, একদিন তাঁকে স্বপ্নে দেখা দেন মা নন্দীকেশ্বরী। তাঁকে আদেশ দেওয়া হয়, একমাত্র এই রূপে মা-কে পুজো করলেই সিদ্ধিলাভ হবে।  

Advertisement

কংকালীতলা (Kankalitala Temple)

৫১ সতীপীঠের শেষ পীঠ কংকালীতলা, বোলপুর স্টেশন থেকে প্রায় ৭ কিমি দূরে কোপাই নদীর তীরে অবস্থিত। পুরাণ মতে, দেবীর কাঁকাল বা কোমরের কংকাল এই  এই স্থানে পড়েছিল। যার ফলে এখানকার নাম কংকালীতলা। এছাড়াও এই মন্দিরে দেবী, দেবগর্ভা হিসেবে পূজিত হন। এখানে কোনও মাতৃ বিগ্রহ বা প্রতিমা নেই।  কংকালী মায়ের ছবিতেই পুজো করা হয় এখানে। প্রতি অমাবস্যায় এখানে পুজো করা হয়। তবে কালীপুজোর অমাবস্যায় রীতি মেনে বিশেষ যজ্ঞ হয় এখানে। 

কংকালীতলা মন্দিরের পাশেই রয়েছে পাড় বাঁধানো ছোট পুকুর, যার চারিদিকে সিঁড়ি নেমে গেছে জলে। এটাই আসল সতীকুণ্ড। যার মধ্যে সতীর কাঁকাল পড়েছিল। পুরাণ মতে, বিষ্ণুর সুদর্শনচক্রের আঘাতে সতীর অস্থি এখানে এত জোরে পড়েছিল যে, তার আঘাতে একটি কুণ্ডর সৃষ্টি হয় এখানে। এই কুণ্ড খুব পবিত্র বলে বিশ্বাস করা । শোনা যায়, ওই কুণ্ডে ৩ টি সুড়ঙ্গের মাধ্যমে যুক্ত রয়েছে কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটের সঙ্গে। তার মধ্যে একটি দিয়ে বছরভর জল আসে ওই কুণ্ডে। আর সে কারণেই কখনও কখনও শুকোয় না কংকালীতলার কুণ্ড। তবে মায়ের ইচ্ছা অনুসারে প্রতি ১৯-২০ বছর অন্তর একবার করে শুকিয়ে যায় কুণ্ডটি। আর ঠিক সেই সময় যে কোনও কারণেই হোক বন্ধ হয়ে যায় মণিকর্ণিকা ঘাটও। আবার পুজো পাঠের পরে রাতারাতি জলে ভরে যায় কুণ্ড। 


ফুল্লরা (Fullora Temple) 

৫১ সতী পীঠের অন্যতম ফুল্লোরা সতীপীঠ, লাভপুরে অবস্থিত। যা পুর টেশন থেকে প্রায় হাঁটাপথে মিনিট দশেক লাগে ফুল্লোরাপীঠে পৌঁছাতে। এখানে সতীর অধঃওষ্ঠ বা ঠোঁট পড়েছিল। এখানে দেবী, ফুল্লোরা রূপে ও ভৈরব বিশ্বশ্বর রূপে পূজিত হন। তবে দেবী ফুল্লোরার কোনো বিদ্রোহ নেই এই মন্দিরে। ভিতরে রয়েছে টকটকে লাল রঙের বড় একটি পাথরের খন্ড। সেই পাথরের সামনের ভাগটা ওষ্ঠাকৃতির। দেবীর মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি বাঁধানো ঘাট। লোকমুখে শোনা যায়, প্রতিবছর দুর্গাপুজোর আগে সেই জলাশয়ের উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ভেসে আসে একটি অদ্ভুত শব্দ। যা শোনার পরই শুরু হয় দেবীর সন্ধিপুজো। ফুল্লোরা মায়ের নিত্য ভোগের মধ্যে একটি আবশ্যিক পদ মাছের টক। 


বক্রেশ্বর (Bakreswar Temple)

৫১ সতী পীঠের অন্যতম বীরভূমের বক্রেশ্বর। ঋষি অষ্টবক্র মুনির নামানুসারে এই জায়গার নাম হয় বক্রেশ্বর। সতীর দুই ভ্রু-র মধ্যস্থল অর্থাৎ মন পড়েছিল এখানে। মা এখানে মহিষমর্দিনী দুর্গা রূপে পুজিত হন। তাই প্রতি বছর এখানে ধুমধাম করে দুর্গা পুজোর আয়োজন করা হয়। পুরাণ অনুযায়ী, একদিন কোহল মুনি বেদ পাঠ করছিলেন, সেই সময়ে তাঁর সামনে বসে পাঠ শুনছিলেন তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী গার্গী। সেই সময় হঠাৎই গার্গীর সন্তান পেটের ভেতর থেকে মুনির বেদ পাঠে ভুল ধরেন এবং তাতেই রেগে গিয়ে স্ত্রীর গর্ভের সন্তানকে অভিশাপ দেন তিনি। এরপর গার্গী, সন্তান প্রসব করলে তার আট অঙ্গ বাঁকা হয়। সেই সন্তানই পরে হয় অষ্টবক্র মুনি। 

এই অষ্টবক্র মুনি এই জায়গায় হাজার  হাজার বছর তপস্যা করে মহাদেবের দর্শন পেয়েছিলেন। মহাদেবের নির্দেশমতো ৮ জায়গায় মাটি খুঁড়ে শরীর লেপন করেন এবং দিব্যাঙ্গ রূপ পান অষ্টবক্র মুনি। সেই থেকেই এই জায়গার নাম বক্রেশ্বর। আজও বক্রেশ্বরে ৮ টি কুণ্ড আছে, যেখানে সারা বছর চলে উষ্ণ প্রস্রবণ। বিশ্বাস করা সেখানে স্নান করলে মুক্তি মেলে নানা রোগ থেকে। 

Advertisement

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement