Advertisement

একমাস ধরে পুজোর পর পৌষ সংক্রান্তির সকালে বিসর্জন, জানুন টুসু-কথা

টুসু (Tusu), রাঢ়বঙ্গের সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাগীভাবে জড়িত এই শব্দটি আজকাল শহুরে জীবনেও বেশ পরিচিত। তার মধ্যে টুসু গান সাম্প্রতিক কালে বিশেষ ভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে শহরাঞ্চলের মানুষের কাছে। যাঁরা বাংলার লোক সংস্কৃতির বিষয়ে খোঁজ খবর রাখেন তাঁরা অনেকেই জানেন টুসুর বিশেষত্ব ও বৈশিষ্ঠ। আবার অনেকে হয়ত টুসু পরবের নাম শুনেছেন, হয়ত টুসু গানও শুনেছেন, কিন্তু জানেন না এর ইতিবৃত্ত। তাই যাঁরা জানেন, আর যাঁরা জনাতে চান, তাঁদের সকলের জন্য আরও একবার টুসু - কথা।

প্রতীকী ছবি
প্রীতম ব্যানার্জী
  • পুরুলিয়া,
  • 13 Jan 2021,
  • अपडेटेड 6:23 PM IST
  • রাঢ়বঙ্গের অন্যতম উৎসব টুসু
  • বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় ব্যাপক প্রচলন রয়েছে টুসু পরবের
  • পৌষ সংক্রান্তির দিন হয় টুসুর বিসর্জন

টুসু (Tusu), রাঢ়বঙ্গের সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাগীভাবে জড়িত এই শব্দটি আজকাল শহুরে জীবনেও বেশ পরিচিত। তার মধ্যে টুসু গান সাম্প্রতিক কালে বিশেষ ভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে শহরাঞ্চলের মানুষের কাছে। যাঁরা বাংলার লোক সংস্কৃতির বিষয়ে খোঁজ খবর রাখেন তাঁরা অনেকেই জানেন টুসুর বিশেষত্ব ও বৈশিষ্ঠ। আবার অনেকে হয়ত টুসু পরবের নাম শুনেছেন, হয়ত টুসু গানও শুনেছেন, কিন্তু জানেন না এর ইতিবৃত্ত। তাই যাঁরা জানেন, আর যাঁরা জনাতে চান, তাঁদের সকলের জন্য আরও একবার টুসু - কথা।

মূলত টুসু হলেন এক লৌকিক দেবী। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া (Bankura), পুরুলিয়া (Purulia), পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড (Jharkhand) সহ সংলগ্ন অঞ্চলে এই উৎসব বা পরবের বিশেষ প্রচলন রয়েছে। সূচনা হয় অগ্রহায়ণ মাসের শেষ দিনে। একমাস ধরে টুসুর ব্রত রাখেন বাড়ির মহিলারা। এরপর পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তির দিন বিসর্জন দেওয়া হয় টুসুকে। 

এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতেই পারে টুসু নামের উৎস কী? এই নিয়ে নানা মত শোনা যায়। কেউ বলেন তুষ থেকে উৎপত্তি হয়েছে টুসু শব্দের। কারও মতে আবার তিষ্যা বা পুষ্যা নক্ষত্র, কিংবা উষা থেকে এসেছে টুসু শব্দ। আবার মধ্যপ্রাচ্যের দেবতা টেষুব থেকে টুসু শব্দের সৃষ্টি বলেও শোনা যায়। যদিও সর্বজন গ্রাহ্য কোনও মত অবশ্য এখনও পাওয়া যায়নি। 

অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তির দিন সন্ধ্যায় গ্রামের মেয়েরা একটি পাত্রে চালের গুঁড়ো লাগিয়ে তাতে তুষ রাখেন। তারপর তুষের ওপরে ধান, গোবরের মণ্ড, দুর্বা, আকন্দ, বাসক ফুল, গাঁদা ফুলের মালা সহ বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে পাত্রটির গায়ে হলুদের টিপ লাগান হয়। এরপর পাত্রটিকে পিঁড়িতে বা কুলুঙ্গিতে রেখে দেওয়া হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় পুজো হয় টুসুর। দেবীকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়, চিঁড়ে, গুড়, বাতাসা, মুড়ি, ছোলার মত উপকরণ। এর পাশাপাশি টুসুর পরবের অঙ্গ হিসেবে গ্রাম্য জীবনের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা দিয়ে সাজান নানা কথায় সুরারোপ করে গাওয়া হয়, যা টুসু গান হিসেবে পরিচিত। পৌষ সংক্রান্তির দিন সকালে গ্রামবাসীরা কাঠ, বাঁশ ও রঙিন কাগজ দিয়ে তৈরি এক ধরনের চতুর্দোলা যা চৌডল নামে পরিচিত তাতে বসিয়ে গান গাইতে গাইতে টুসুকে নিয়ে যান নদী বা পুকুর পারে। সেখানেই হয় টুসু বিসর্জন। এখানে একটা কথা অবশ্যই উল্লেখ্য, টুসুর সেভাবে কোনও মূর্তি না হলেও, পুরুলিয়ায় বান্দোয়ান এবং বাঁকুড়ার পোরকুলে টুসুর মূর্তি দেখা যায়। 

Advertisement

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement