হাতে মাত্র কয়েকটা দিন, তারপরই বাঙালির প্রাণের পুজো দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যাবে। পুজো ঘিরে একটা অপেক্ষা লেগে থাকে। আর সেই অপেক্ষার মধ্যে থেকে যায় উৎসবের ক্যালেন্ডার। বাঙালির পার্বনের ক্যালেন্ডারের মধ্যে থাকে শারদ পূর্ণিমার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। দুর্গাপুজোর দশমী মিটতেই অপেক্ষা থাকে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর। এই বছর কবে লক্ষ্মীপুজো পড়েছে আর তার দিনক্ষণ বা কী সবটাই আসুন জেনে নেওয়া যাক।
কোজাগরী শব্দের অর্থ
মূলত, ধন, যশ, খ্যাতি প্রাপ্তির জন্য দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। বাঙালির পার্বনে শারদীয়া দুর্গাপুজোর পরই আসে শারদ পূর্ণিমার আশ্বিনের লক্ষ্মীপুজো। এই লক্ষ্মীপুজোকে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো বলা হয়। কোজাগরী শব্দের অর্থ কে জেগে আছ। তাই শারদ পূর্ণিমার রাতে এই দেবীর আরাধনা করা হয়। ২০২৪ সালে কোন তারিখে, তিথিতে পড়েছে লক্ষ্মীপুজো?
কবে পড়েছে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো
এ বছর ১৬ অক্টোবর, বুধবার পড়েছে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। পূর্ণিমার তিথি ১৬ অক্টোবর থেকে পড়েছে। ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭ টা ২৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে পড়ছে পূর্ণিমা। তিথি থাকবে ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৫ টা ১৭ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড পর্যন্ত। অনেকেই বাঙালি হিন্দু ঘরে লক্ষ্মীপুজো প্রতি বৃহস্পতিবার করে থাকেন। এছাড়াও পূর্ণিমা তিথিতেও অনেকের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো হয়ে থাকে। অনেকের বাড়িতে কালীপুজোর দিন লক্ষ্মীপুজো হয়। খারিফ শস্য ও রবি শস্য যেই সময় হয়, ঠিক সেই সময় বাঙালি মেতে ওঠে লক্ষ্মীর পুজোয়। তবে পুজোর উপাচার পরিবর্তন হয় মাস ভেদে।
আচার-নিয়ম
লক্ষ্মীপুজোতে বাড়ির মহিলারা উপোস করে পুজো করেন আবার অনেকে পুরোহিত ডেকে পুজো করান। মা লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়েন মহিলারা। মা লক্ষ্মীকে নারকেল নাড়ু, তিলের নাড়ু, সাদা রঙের মিষ্টি এইসব দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া অনেকেই মায়ের ভোগে খিচুড়ি, পায়েস, লাবড়া দেন। কোনও কোনও বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর দিন ইলিশ মাছ দেওয়ার চলও রয়েছে।
কোজাগরীর সাজসজ্জা
বাঙালির ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আলাদা কিছু সাজসজ্জা রয়েছে। যেমন কলার ছররা দিয়ে তৈরি হয় বাণিজ্য তরী, পুজোর বেদীতে অনেকে সোনা, রুপো রেখে দেন। এই পুজোর আল্পনাতেও থাকে বিশেষ চিহ্ন। ধানের শিসের অনুকরণে আঁকা হয় আল্পনা। পূর্ণিমার রাতে দেবীর আরাধনা চলে। দুর্গাপুজোর পর পরই এই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।