দু’দিন পর, ৬ অক্টোবর পালিত হবে শারদ পূর্ণিমা। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। ধর্মীয় মতে, এই দিন রাতের চাঁদ থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে। তাই এই রাতের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। শুধু জ্যোতির্বিজ্ঞান নয়, পুরাণ মতে, এই রাতের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভগবানের মহারাস ও দেবী লক্ষ্মীর আবির্ভাবের কাহিনি।
শাস্ত্র বলে, শারদ পূর্ণিমার রাতেই বৃন্দাবনে রাধা ও গোপীদের সঙ্গে মহারাস লীলা করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। বলা হয়, কৃষ্ণ তখন তাঁর লীলার জন্য একাধিক রূপ ধারণ করেছিলেন। এই রসলীলা শুধু এক অভিনব নৃত্যই নয়, প্রেম, ভক্তি ও আত্মিক আনন্দের এক অপূর্ব প্রতীক।
এ রাতেই সমুদ্র মন্থনের সময় আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবী লক্ষ্মী। পুরাণ অনুযায়ী, দেবী লক্ষ্মী পেঁচার পিঠে চড়ে এই রাতে ভ্রমণ করেন ধরাধামে। তাই শারদ পূর্ণিমার রাতকে ধন, সৌভাগ্য ও ঐশ্বর্যের দেবীর আরাধনার বিশেষ সময় হিসেবে ধরা হয়। ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি আসুক, এই কামনায় অনেকেই এ দিন ব্রত পালন করেন ও ঘরের দরজায় প্রদীপ জ্বেলে দেবীকে আহ্বান জানান।
এই পূর্ণিমায় রয়েছে আরও এক জনপ্রিয় রীতি। বহু মানুষ এই রাতে খোলা আকাশের নীচে পায়েস রেখে দেন। বিশ্বাস, এই রাতে চাঁদের আলোয় থাকে অমৃতের ছোঁয়া। সেই আলোয় রাখা পায়েস খেলে শরীর থাকে সুস্থ, আর বাড়িতে আসে দেবীর কৃপা। বলা হয়, এতে পরিবারে রোগভোগ দূরে থাকে এবং সৌভাগ্য বাড়ে।
শুধু গৃহস্থ নয়, বহু জায়গায় অবিবাহিত কন্যারাও সূর্য ও চন্দ্রদেবের পূজা করেন এই দিনে। তাঁদের বিশ্বাস, এতে ভবিষ্যৎ জীবনে শুভ ফল পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে, শারদ পূর্ণিমা শুধুই কোনও জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বা ধর্মীয় ঘটনা নয়, বরং এটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের এক গাঢ় অনুষঙ্গ।