বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী একজন বিখ্যাত হিন্দু ধর্মগুরু এবং যোগী ছিলেন। তিনি লোকনাথ বাবা নামেই পরিচিত। শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন অর্থাৎ জন্মাষ্টমীতে কচুয়া গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে বাবা লোকনাথ জন্মগ্রহণ করেন। বহু বাঙালি হিন্দু ঘরে এদিন লোকনাথ বাবার পুজো করা হয়।
বাবা লোকনাথ একজন সিদ্ধ পুরুষ। তিনি মানবের কল্যাণে অসংখ্য অমৃত বাণী দিয়ে গেছেন, যা অনুসরণ করলে মানব জাতি শান্তি ও স্বস্তি পাবে, মুক্তির পথ খুলে যাবে বলেই বিশ্বাস করা হয়। তাঁর অগণিত ভক্তরা নিষ্ঠা করে পুজো করেন। মনে করা হয়, সামান্য মাখন ও মিশ্রিতেই সন্তুষ্ঠ হন তিনি।
লোকনাথের আধ্যাত্মিক শক্তি নিয়ে অনেক প্রচলিত কথা ও বিশ্বাস আছে। মনে করা হয় সব বিপদেই তাঁকে স্মরণ করলে রক্ষা করেন তিনি। জানুন তাঁর কিছু বাণী, যা যে কোনও বিপদে স্মরণ করলে সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে বলেই বিশ্বাস করা হয়।
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর মহামন্ত্র
জয় বাবা লোকনাথ, জয় মা লোকনাথ, জয় শিব লোকনাথ, জয় ব্রহ্ম লোকনাথ, জয় গুরু লোকনাথ।
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর বাণী
* "রণে বনে জলে জঙ্গলে যেখানে বিপদে পড়বে আমাকে স্মরণ করিয়ো, আমি রক্ষা করিবো"
* গর্ব করবি, কিন্তু আহাম্মক হবি না। ক্রোধ করবি, কিন্তু ক্রোধান্ধ হবি না।
* মন যা বলে শোন,কিন্তু আত্মবিচার ছাড়িস না।কারণ মনের মতন প্রতারক আর কেউ নেই,মহাপুরুষদের বাক্য,শাস্এ বাক্যে শ্রদ্ধাবান না হলে প্রকৃত আত্মবিচার সম্ভব নয়।
* ক্রোধ ভাল, কিন্তু ক্রোধান্ধ হওয়া ভাল নয়।
* গর্জন করবি কিন্তু আহাম্মক হবি না ক্রোধ করবি কিন্তু ক্রোধান্ধ হবি না।
* যে ব্যক্তি কৃতজ্ঞ, ধার্মিক, সত্যাচারী, উদারচিত্ত, ভক্তিপরায়ন, জিতেন্দ্রিয়, মর্যাদা রক্ষা করতে জানে, আর কখনও আপন সন্তানকে পরিত্যাগ করে না, এমন ব্যক্তির সঙ্গেই বন্ধুত্ব করবি।
* অর্থ উপার্জন করা, তা রক্ষা করা, আর তা ব্যয় করা, সময় বিশ্ব দুঃখ ভোগ করতে হয়। অর্থ সকল অবস্থাতেই মানুষকে কষ্ট দেয়, তাই অর্থব্যয় হলে বা চুরি হলে তার জন্য চিন্তা করে কোন লাভ নেই।
* অহং চলে গেলে নিজের মনই নিজের গুরু হয়, সৎ ও অসৎ বিচার আসে। জ্ঞানের সঙ্গে ভক্তির মণিকাঞ্চন যোগ হলে শ্রদ্ধা হবে তোদের আশ্রয়, শ্রদ্ধা হবে তোদের বান্ধব এবং শ্রদ্ধাই হবে তোদের পাথেয়।
* যে ব্যক্তি সকলের সুহৃদ। আর যিনি কায়মনোবাক্যে সকলের কল্যাণ সাধন করেন তিনি যথার্থ জ্ঞানী।
* তোরা যদি দীর্ঘায়ু হতে চাস তাহলে তোদের সদাচারী, শ্রদ্ধাশীল, ঈর্ষাহীন, সত্যবাদী, ক্রোধবিহীন ও সরল স্বভাব হতে হবে।
* ওরে, সে জগতের কথা মুখে বলা যায় না, বলতে গেলেই কম পড়ে যায়। বোবা যেমন মিষ্টির স্বাদ বলতে পারে না, সে রকম আর কি!
* সচেতন হতে হবে। অচেতনাই জীবনের ধর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরন্তর অভ্যাস এবং চেষ্টার ফলে তাকে সচেতনতায় রূপান্তরিত করতে হবে।
* যে ব্যক্তি সকলের সুহৃদ। আর যিনি কায়মনোবাক্যে সকলের কল্যাণ সাধন করেন তিনি যথার্থ জ্ঞানী।
* যাহারা আমার নিকট আসিয়া আমার আশ্রয় গ্রহণ করে, তাহাদের দুঃখে আমার হৃদয় আদ্র হয়।
* যে ব্যক্তি কৃতজ্ঞ ধার্মিক সত্যচারী উদারচিত্ত ভক্তিপরায়ন জিতেন্দ্রিয় মর্যাদা রক্ষা করতে জানে আর কখনো আপন সন্তানকে পরিত্যাগ করেন না এমন ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন।
* বিদ্যা, তপস্যা, ইন্দ্রিয় সংযম ও লোক পরিত্যাগ ছাড়া কেউই শান্তি লাভ করতে পারে না।
* সত্য এর মত পবিত্র আর কিছু নেই, সত্যিই স্বর্গ গমন এর একমাত্র সোপান রূপ সন্দেহ নেই।
* দু:খ দরিদ্রতায় ভরা সমাজের দু:খ দূর করার জন্য সর্বদা চেষ্টা করবি।
* দীন, দরিদ্র অসহায় মানুষের হাতে যখন যা দিবি তা আমিই পাব; আমি গ্রহণ করবো।
* এই বিরাট সৃষ্টির মধ্যে এমন কিছু নেই যাকে উপেক্ষা করা চলে বা ছোট ভাবা যায়। প্রতিটি সৃষ্টি বস্তু বা প্রাণী নিজ নিজ স্থলে স্বমহিমায় মহিমান্বিত হয়ে আছে জানবি।