জৈন ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব মহাবীর জয়ন্তী (Mahavir Jayanti 2021)। এদিনই জৈন ধর্মের চব্বিশতম তীর্থঙ্কর, মহাবীরের জন্ম হয়েছিল। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে (খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৯ অব্দে), বৈশালী প্রজাতন্ত্রের ক্ষত্রিয় কুণ্ডলপুরে তাঁর জন্ম হয়। মাত্র তিরিশ বছর বয়সে পৃথিবীর মোহ মায়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এবং নিজের রাজকীয় গৌরব ছেড়ে মহাবীর আত্মত্যাগের পথে যাত্রা করেন। এই বছর ২৫ এপ্রিল উদযাপিত হচ্ছে মহাবীর জয়ন্তী।
মহাবীর জয়ন্তীর তাৎপর্য
মনে করা হয় যে ১২ বছর কঠোর তপস্যা করার পরে মহাবীর কেভালা জ্ঞান (সর্বজ্ঞতা) অর্জন করেছিলেন এবং ৭২ বছর বয়সে নির্বাহ লাভ করেন এবং তার দেহের সমাহিত করা হয়। জৈন সমাজ মহাবীরের জন্মবার্ষিকী 'মহাবীর জয়ন্তী' হিসাবে পালন করে।
পঞ্চশীল নীতি
জৈন ধর্মের এই তীর্থঙ্কর মহাবীর, অহিংসাকে সর্বোচ্চ নৈতিক গুণ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি জীবনে পাঁচটি নীতি মেনে চলার বার্তা দিয়েছিলেন। যেগুলি হল - অহিংসা, সত্য, অপরিগ্রহ (অনাসক্তি),অস্তেয় (চুরি না করা) এবং ব্রহ্মচার্য (ইন্দ্রিয় সংযম)। মহাবীর তাঁর শিক্ষা এবং নীতিগুলির মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে সঠিক পথের দিকে পরিচালনা করেছিলেন। তাঁর অহিংসার এই সূক্ষ্ম ব্যাখ্যা অন্য কোথাও বিরল। তিনি শুধু মানুষের প্রতি ভালবাসা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখার বার্তা দেননি। সেই সঙ্গে মাটি, জল, আগুন, বাতাস, উদ্ভিদ থেকে পোকামাকড়, প্রাণী এবং পাখি ইত্যাদির সঙ্গেও বন্ধুত্ব এবং অহিংসতার সম্পর্ক রাখার কথা বলেছেন।
মহাবীর জয়ন্তী উদযাপন
মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে জৈন ধর্মাবলম্বীরা প্রভাতফেরি বের করেন। এরপর, পালকি নিয়ে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। মহাবীর স্বামীকে সোনা ও রুপোর গয়নায় সাজানো হয় এবং পতাকা তোলা হয়। মহাবীরের জন্মবার্ষিকীতে জৈন সমাজ, দিনভর বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচির আয়োজন করে মহা আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করে এই বিশেষ দিন।
দেশ জুড়ে মহাবীর জয়ন্তী উদযাপন
রাজস্থানের আরাবল্লী পর্বত উপত্যকার মাঝখানে অবস্থিত রণকপুর মন্দির রয়েছে। চারিদিকে বন- জঙ্গলে ঘেরা এই মন্দিরে মার্বেলের কাজ দেখার মতো। এর বাইরে রাজস্থানের দিলওয়ারায় বিখ্যাত জৈন মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরগুলি ১১ থেকে ১৩ শতকের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল। পালিটানা জৈন মন্দিরটি গুজরাটের শ্ত্রুঞ্জয় পর্বতে অবস্থিত। এই মন্দিরটি মহাবীরকে উৎসর্গ করা হয়েছে তাই এটি সম্মানিত তীর্থযাত্রাস্থল।