
হিন্দুধর্মে মকর সংক্রান্তি উৎসবকে অত্যন্ত বিশেষ বলে মনে করা হয়। সূর্য যখন ধনু রাশি ত্যাগ করে মকর রাশিতে প্রবেশ করে তখন এই উৎসব পালিত হয়। ২০২৬ সালে সূর্য ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৩টে ১৩ মিনিটে মকর রাশিতে প্রবেশ করবে। অতএব, মকর সংক্রান্তি ১৪ জানুয়ারিতে উদযাপিত হবে। এটি নববর্ষের পর উদযাপিত প্রথম প্রধান উৎসব।
মকর সংক্রান্তি ভারত জুড়ে বিভিন্ন নামে পালিত হয়। গুজরাতে এটিকে উত্তরায়ণ বলা হয় এবং এই দিনে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। উত্তরপ্রদেশে এই দিনে খিচুড়ি তৈরি করে দান করা হয়। দক্ষিণ ভারতে এই দিনে পোঙ্গল উৎসব পালিত হয়। বাংলায় হয় পৌষ সংক্রান্তি।
মকর সংক্রান্তি
নতুন বছরে মকর সংক্রান্তি দু'টি শুভ যোগ তৈরি হচ্ছে। সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ এবং অমৃত সিদ্ধি যোগ শুরু হবে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে। মধ্যরাত সাড়ে ৩টে পর্যন্ত এই যোগ স্থায়ী হবে। এই যোগগুলির সময়ে স্নান এবং দান করলে খুব ভাল ফল পাওয়া যাবে।
মকর সংক্রান্তির শুভ সময় হবে বিকাল ৩টে ১৩ মিনিট থেকে ৫টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়ে দান ও পুজো করা বিশেষ ভাবে লাভজনক বলে মনে করা হয়। তাছাড়া সকালের ব্রহ্ম মুহূর্ত হবে ভোর ৫টা ২৭ মিনিট থেকে ৬টা ২১ মিনিট পর্যন্ত। এই দিনে পবিত্র নদীতে স্নান করা এবং অভাবীদের সাহায্য করলে অপরিসীম পুণ্যলাভ হবে।
এই দিনে দেবী গায়ত্রীর পুজো করা অত্যন্ত শুভ মনে করা হয়। পৌষ মাসে সূর্য এবং ভগবান বিষ্ণুর পুজো করলে সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে, দীর্ঘায়ু হয় এবং মন প্রশান্ত থাকে। সূর্যের পুজো জীবনে ইতিবাচক শক্তি নিয়ে আসে।
শাস্ত্র অনুসারে, মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্ত হন এবং স্বর্গীয় স্থান লাভ করেন। এই কারণেই মকর সংক্রান্ত মোক্ষ প্রদানকারী উৎসব হিসেবেও পরিচিত।
প্রতিকার
মকর সংক্রান্তিতে দান খয়রাতের গুরুত্ব অপরিসীম। চাল, ডাল, কালো তিল, গুড়, তামার বাসনপত্র, ওয়েস্টার্ন পোশাক এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দান করা শুভ বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয়, এটি করলে সূর্যদেব সন্তুষ্ট হন। পূর্বপুরুশদের আশীর্বাদ আসে এবং বাড়িতে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। তাছাড়া জীবনের অসুবিধা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।