ভারতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, অনেক প্রজাতির পাখি এবং প্রাণী পোষা বেআইনি। এর মধ্যে অন্যতম হলো টিয়া চন্দনা (Indian Starling বা Common Myna)। এই পাখি যদিও আমাদের গ্রামবাংলা ও শহরের বাগান বা খোলা মাঠে সাধারণভাবে দেখা যায়, কিন্তু আইনের চোখে এটি একটি সংরক্ষিত প্রজাতি। বেআইনিভাবে টিয়া চন্দনা পোষা বা বিক্রি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
কেন বেআইনি টিয়া চন্দনা পোষা?
টিয়া চন্দনা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের তালিকাভুক্ত। ভারত সরকার ১৯৭২ সালের ‘Wildlife Protection Act’ এর মাধ্যমে দেশের সব বন্যপ্রাণী এবং পাখির সংরক্ষণ নিশ্চিত করেছে। এই আইনে নির্দিষ্ট করা হয়েছে কোন কোন প্রজাতির প্রাণী এবং পাখি পোষা বেআইনি। টিয়া চন্দনা এই তালিকায় রয়েছে। বেআইনিভাবে পোষা বা বিক্রি করার ফলে আইন অনুযায়ী জেল বা জরিমানা হতে পারে।
বেআইনি ব্যবসায়ের প্রভাব
বেশ কিছু ব্যক্তি বেআইনি ভাবে টিয়া চন্দনা সংগ্রহ করে পোষা পাখি হিসেবে বিক্রি করে। এই কাজ শুধুমাত্র আইন লঙ্ঘন নয়, বরং প্রজাতির উপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বন্য পরিবেশ থেকে পাখি ধরে আনা হলে তাদের প্রজনন, স্বাভাবিক আচরণ এবং বাস্তুসংস্থান নষ্ট হয়। এছাড়া, শহর বা গ্রামে বেআইনি ভাবে পাখি রাখা মানে তারা ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসা বা প্রাকৃতিক জীবনযাপন করতে পারে না।
আইনের শাস্তি
Wildlife Protection Act অনুযায়ী, বেআইনিভাবে টিয়া চন্দনা পোষা বা বিক্রি করা হলে জরিমানা ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তাছাড়া, প্রয়োজনে দণ্ডিত ব্যক্তিকে ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডও দেওয়া যেতে পারে। আইন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে মানুষ সচেতন হয় এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
টিয়া চন্দনা জনপ্রিয় হলেও কেন পোষা উচিত নয়?
টিয়া চন্দনা দেখতে আকর্ষণীয় এবং সহজে মানুষের সঙ্গে মিশে যায়। তাই অনেকেই ভেবে ফেলে যে এটি পোষা যাবে। তবে, প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য মনে রাখতে হবে যে, পাখির প্রাকৃতিক জীবন যাপন এবং বংশবিস্তার মানেই তাদের সংরক্ষণ। পোষ্য হিসেবে রাখা তাদের জীবনের জন্য বিপজ্জনক এবং বেআইনি।
উপায়
যদি আপনি পাখি পালন পছন্দ করেন, তাহলে বিশেষ, ব্রিড করা প্রজাতি বেছে নিতে পারেন যা বেআইনি নয়। এছাড়া, পাখি পর্যবেক্ষণ বা bird-watching করলে টিয়া চন্দনা এবং অন্যান্য বন্যপ্রজাতির সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখা যায়, কিন্তু তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে ছাড়া হয়।
ভারতে টিয়া চন্দনা পোষা বেআইনি। বেআইনি পোষণের ফলে আপনি আইনভঙ্গের শিকার হতে পারেন। তাই পাখি পছন্দ হলেও সচেতন থাকা জরুরি। বন্যপ্রাণীর প্রতি শ্রদ্ধা এবং সংরক্ষণ আমাদের দায়িত্ব। পাখিকে তার প্রাকৃতিক পরিবেশে রাখা, প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখা এবং আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করাই সঠিক পথ।