
দেশজোড়া জনপ্রিয় প্রেমানন্দ মহারাজ তাঁর সহজ-সরল এবং হৃদয়স্পর্শী প্রবচনের জন্য সকলের কাছেই সমাদৃত। তাঁর কথায় এমন এক মানবিক সুর থাকে যা সমাজের প্রতিটি শ্রেণির মানুষকে ছুঁয়ে যায়। ভক্তি, মানবতা, করুণা এবং সংযম, এই চারটিকেই তিনি জীবনের ভিত্তি মনে করেন এবং প্রতিটি বক্তৃতায় বারবার এই মূল্যবোধগুলির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এইবার বৃন্দাবনের পবিত্র ভূমিতে দেওয়া এক বিশেষ প্রবচনে প্রেমানন্দ মহারাজ মানুষকে জীবনের তিনটি সবচেয়ে বড় অনিষ্ট থেকে দূরে থাকার বার্তা দেন। তাঁর প্রথম উপদেশ শরাবকে সম্পূর্ণ ত্যাগ করতে হবে। মহারাজ বলেন, মানুষ যদি নিজের জীবনকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে চায়, তবে আচরণ, অভ্যাস ও চরিত্রে পবিত্রতা এবং সংযম আনা জরুরি। মদ্যপানকে তিনি জীবনের প্রথম বড় বিপদ বলে উল্লেখ করেন, কারণ এটি বিচারবুদ্ধিকে নষ্ট করে, স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, পরিবারে অশান্তি ও অর্থনৈতিক সংকট বাড়ায় এবং সামাজিক ভাবে মানুষকে অধঃপতনের দিকে ঠেলে দেয়। যাঁরা মদ থেকে দূরে থাকেন তাঁদের তিনি অভিনন্দন জানান। আর যাঁরা এই অভ্যাসে আবদ্ধ, তাঁদের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে তা ছাড়ার আহ্বান জানান।
এরপর তিনি মাংসাহার বর্জনের পরামর্শ দেন। তাঁর বক্তব্য, জীব হত্যা থেকে বিরত থাকাই প্রকৃত মানবতার পরিচয়। শরীরে শক্তি আনার জন্য মাংস কোনওভাবেই অপরিহার্য নয়। বরং সাত্ত্বিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও শৃঙ্খলাপূর্ণ আচরণ থেকেই অধিক শক্তি ও স্বস্তি পাওয়া যায়। জীব হত্যা করে প্রস্তুত খাবার কখনও আধ্যাত্মিকতার পথ দেখাতে পারে না, এ কথা তিনি স্পষ্ট করে বলেন।
তৃতীয় উপদেশে মহারাজ পরস্ত্রীগমন বা পরধর্মী নারীর প্রতি আকর্ষণ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন, চরিত্র, মর্যাদা ও নৈতিক মূল্যবোধই একজন মানুষের আসল শক্তি। মানুষ যদি মদ, মাংস এবং পরস্ত্রী থেকে দূরে থাকে এবং ঈশ্বরের নাম স্মরণ করে, তবে তার জীবন শান্তি, সুখ এবং আধ্যাত্মিক পরিতৃপ্তিতে ভরে উঠবে।