মূলত বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীরা রাস উৎসব (Raas Yatra) পালন করেন। বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় শ্রীকৃষ্ণের প্রকৃতির উৎসবই রাস। এই বিশেষ উৎসবে গোপিনীদের সহযোগে রাধাকৃষ্ণের প্রার্থণা করা হয়। পুরাণে রাস উৎসবের উল্লেখ আছে। তবে এক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন মতভেদ।
অনেকে মনে করেন, ঈশ্বরের সঙ্গে আত্মার মহামিলনই রাস। পুরাণে শারদ রাস ও বসন্ত রাসের উল্লেখ পাওয়া যায়।
লোককথা অনুসারে শ্রী কৃষ্ণের সংস্পর্শ পেয়ে গোপিনীদের মনে অহং জন্মায়। তখন শ্রীকৃষ্ণ অন্তর্হিত হন। গোপিনীরা সেই ভুল বুঝতে পেরে স্তব স্তুতি শুরু করেন। ফলস্বরূপ শ্রীকৃষ্ণ ফিরে আসেন ও গোপিনীদের মানব জীবনের পরমার্থ বুঝিয়ে তাঁদের অন্তরাত্মা শুদ্ধ করেন। শ্রী কৃষ্ণ গোপিনীদের সকল মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করে জাগতিক ক্লেশ থেকে মুক্ত করেন। বলা হয়, এই ভাবেই রাশ উৎসবের প্রচলন ঘটে।
বাংলায় যুগ যুগ ধরে শ্রীচৈতন্যদেবের রাস উৎসব পালনের কথা শোনা যায়। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং গিরিশচন্দ্রের পরবর্তী সময়কালে বাংলায় রাস উৎসবের বহুল প্রচলন ঘটে। এছাড়াও বৃন্দাবন, মথুরা, ওড়িশা, অসম, মনিপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের মূলত নদীয়া, কুচবিহারের বিভিন্ন জায়গায় জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে রাস উৎসব পালিত হয়। যদিও রাধাকৃষ্ণের আরাধনাই মূল বিষয় হলেও বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন রীতিতে রাস উৎসব পালিত হয়। যেমন নদীয়ার শান্তিপুর ও নবদ্বীপে শুধু রাধা-কৃষ্ণ নয়, পূজিত হন আরো দেব দেবী। প্রায় টানা তিন থেকে চারদিন মহাসমারোহে পালিত হয় এই উৎসব। এমনকি উৎসবের শেষ দিন বের হয় শোভাযাত্রা।
আগামী ৩০ নভেম্বর (বাংলার ১৪ অগ্রহায়ণ) সোমবার রাধাকৃষ্ণের রাস যাত্রা উৎসব পালিত হবে।
নির্ঘণ্ট:
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে,
২৯ নভেম্বর ২০২০ দুপুর ১২ টো ৪৯ মিনিট থেকে ৩০ নভেম্বর দুপুর ৩ টে পর্যন্ত থাকবে পূর্ণিমা তিথি।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে,
২৯ নভেম্বর দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড থেকে ৩০ নভেম্বর দুপুর ২ টো ২৪ মিনিট ২১ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকবে পূর্ণিমা তিথি।
২৯ নভেম্বর পূর্ণিমার নিশিপালন- স্মার্তমতে রাতে শ্রী শ্রী কৃষ্ণের রাসযাত্রা।
৩০ নভেম্বর গোস্বামী মতে রাকা পূর্ণিমানুরোধে শ্রী শ্রী কৃষ্ণের রাসযাত্রা।