Raksha Bandhan 2025: রাখিবন্ধন শুধু ভাই-বোনের সম্পর্কের প্রতীক নয়, বরং এটি স্নেহ, বিশ্বাস ও রক্ষার অটুট বন্ধনের প্রতীক। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় এই উৎসব সারা দেশে, এমনকি বিদেশে বসবাসরত ভারতীয়দের মধ্যেও সমান উদ্দীপনায় পালিত হয়। এখন এটি সব ধর্মের মানুষের কাছে এক মানবিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।
প্রথা অনুযায়ী, রাখি বাঁধার সময় বোন সুতোয় তিনটি গিঁট দেন। এই তিনটি গিঁটের পেছনে রয়েছে আধ্যাত্মিক ও প্রতীকী তাৎপর্য। অনেকে মনে করেন, এগুলি ত্রিদেব— ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের প্রতীক। প্রথম গিঁট ব্রহ্মার নামে, যা জীবনে সৌভাগ্য ও শক্তির পূর্ণতা কামনা করে। দ্বিতীয় গিঁট বিষ্ণুর নামে, যা ভাইকে বিপদ থেকে রক্ষা ও সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধির আশীর্বাদ দেয়। তৃতীয় গিঁট মহাদেবের নামে, যা অশুভ শক্তি দমন ও রক্ষার প্রতীক। পাশাপাশি, এই তিনটি গিঁটকে ভাই-বোনের ভালবাসা, বিশ্বাস ও সুরক্ষার প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়।
রাখিবন্ধনের ইতিহাস সমৃদ্ধ ও বহুমুখী। পৌরাণিক কাহিনি থেকে রাজকীয় কিংবদন্তি— সবেতেই এই উৎসবের ছাপ রয়েছে। চিতোরের রানি কর্ণাবতী মুঘল সম্রাট হুমায়ুনকে রাখি পাঠিয়ে তাঁর রাজ্য রক্ষা চেয়েছিলেন— এমন কাহিনি আজও জনপ্রিয়। মহাভারতে দ্রৌপদী কৃষ্ণের হাতে কাপড় বেঁধে রক্ত বন্ধ করেছিলেন, আর বিপদে কৃষ্ণ তাঁকে রক্ষা করেন— এটিও রাখির অমর উদাহরণ।
গণেশ, যমুনা দেবী, এমনকি লক্ষ্মী ও দানবরাজ বলির কাহিনিতেও রাখির উল্লেখ রয়েছে। প্রতিটি কাহিনি ভাই-বোনের সম্পর্কের গভীরতা ও রক্ষার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।
আগামী শনিবার রাখি পূর্ণিমা। তাই এখন থেকেই ভাই-বোনেরা প্রস্তুতি শুরু করেছেন। একটি সুতোয় বাঁধা এই তিনটি গিঁট শুধু আচার নয়— এটি স্নেহ, আস্থা ও আজীবনের বন্ধনের প্রতীক। রাখির সেই মায়াবী সুতোর বাঁধনে যেমন থাকে স্নেহ-ভালবাসা, তেমনি থাকে অঙ্গীকার— আজীবন একে অপরের পাশে থাকার।