শনিবার সারাদেশে উদ্যাপিত হবে রাখি বন্ধন, ভাই-বোনের অটুট সম্পর্ককে সম্মান জানাতে এই উৎসবটি পালিত হয় শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা তিথিতে। হিন্দু সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটি শুধু একটি সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে গভীর ধর্মীয় বিশ্বাস এবং আধ্যাত্মিক তাৎপর্য।
রাখি কেন বাঁধা হয় ভাইয়ের ডান হাতে?
রাখি বন্ধনের সময় দেখা যায়, বোনেরা সর্বদাই তাদের ভাইয়ের ডান কব্জিতে রাখি বাঁধেন। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী, ডান হাতকে শুভতা, শক্তি এবং কর্মের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেকোনো পুজো, হোমযজ্ঞ বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে প্রথম পছন্দ হয় ডান হাত। এমনকি পণ্ডিতরাও বলিদান বা প্রসাদ গ্রহণের সময় ডান হাত ব্যবহারের নির্দেশ দেন।
এই বিশ্বাস অনুযায়ী, রাখি যা একটি রক্ষাসূত্র, তা বেঁধে দেওয়া হয় সেই হাতে, যা রক্ষা করার, সাহসের সঙ্গে পাশে থাকার এবং প্রয়োজনে কর্ম করার প্রতীক। বোনের প্রার্থনা থাকে, তার ভাই যেন সব সময় তাকে সুরক্ষা দেয়, সহায়তা করে এবং ভালোবাসে।
ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি
ধর্মীয় কাহিনি অনুসারে, ভগবান বিষ্ণু, শ্রী রাম ও শ্রীকৃষ্ণ—এই সমস্ত দেবতার পুজো ও পবিত্র কার্যক্রম ডান হাতে সম্পন্ন করা হয়। তাই বহু যুগ ধরে এই সংস্কার চালু রয়েছে যে রাখিও ডান হাতে বাঁধা উচিত। এটি শুধু একটি রীতিই নয়, বরং ভাই-বোনের সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বাস, শক্তি এবং দায়িত্বের এক বিশেষ প্রতীক।
রাখি বন্ধন ২০২৫: পুজোর পদ্ধতি ও নিয়ম
রাখি বন্ধনের দিন শুরু হয় ভোরবেলা স্নান করে পরিষ্কার পবিত্র বস্ত্র পরিধানের মাধ্যমে। এরপর একটি পুজোর থালা প্রস্তুত করা হয়, যেখানে থাকে:
ঘি-তে জ্বালানো প্রদীপ
রাখি
মিষ্টান্ন
চন্দন বা রোলি
চাল (ভাত)
ফুল
পুজোর স্থান বা ঘরের মন্দিরে বসে ভগবান গণেশ এবং মা লক্ষ্মীর পুজো করা হয়। গণেশ ঠাকুরকে স্মরণ করা হয় প্রথমে, কারণ তিনি বাধা দূরকারী এবং শুভারম্ভের দেবতা। এরপরে, ভাইয়ের কপালে তিলক দিয়ে ডান হাতে রাখি বাঁধা হয় এবং তার দীর্ঘায়ু, সাফল্য ও সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করা হয়। শেষে একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে উৎসবটি সম্পূর্ণ হয়।