Rudraksha Benefits: হিন্দু ধর্মে রুদ্রাক্ষকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। যেহেতু রুদ্রাক্ষ ভগবান শিবের সঙ্গে সম্পর্কিত, এটি বিশ্বাসেরও প্রতীক। রুদ্রাক্ষ পরলে দেবাদিদেব শিবের কৃপা পাওয়া যায় এবং সমস্ত ঝামেলা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। রুদ্রাক্ষ থেরাপি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জ্যোতিষী শৈলেন্দ্র পান্ডে জানাচ্ছেন, রুদ্রাক্ষ পরার সময় কী কী জিনিস মাথায় রাখা উচিত এবং কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
রুদ্রাক্ষের তাৎপর্য (Significance Of Rudraksha)
রুদ্রাক্ষ হল একটি গাছের ফলের কর্ণেল। রুদ্রাক্ষের ঔষধি ও আধ্যাত্মিক গুরুত্ব রয়েছে। এটি পরিধান করলে জীবনে বিশেষ ফল পাওয়া যায়। রুদ্রাক্ষ অকাল মৃত্যু এবং শত্রুর বাধা থেকে রক্ষা করে বলে বিশ্বাস করা হয়। মোট চতুর্দশমুখী রুদ্রাক্ষ রয়েছে। চৌদ্দটি রুদ্রাক্ষ ছাড়াও গৌরী শঙ্কর ও গণেশ রুদ্রাক্ষও পাওয়া যায়।
রুদ্রাক্ষ পরিধানের সতর্কতা (Rudraksha Do's & Dont's)
লাল সুতো বা হলুদ সুতোয় রুদ্রাক্ষ পরুন। এর পাশাপাশি পূর্ণিমা, অমাবস্যার দিন বা সোমবার রুদ্রাক্ষ পরা উত্তম বলে মনে করা হয়। শ্রাবণ মাসের যে কোনও দিন রুদ্রাক্ষ পরা যেতে পারে। কারণ এই মাসের প্রতিটি দিনই শুভ বলে মনে করা হয়। ১, ২৭, ৫৪ এবং ১০৮ সংখ্যায় রুদ্রাক্ষ পরা উচিত। রুদ্রাক্ষ পরার পর সাত্বিকতা অনুসরণ করা উচিত। ধাতু যুক্ত রুদ্রাক্ষ পরিধান করা আরও ভাল। অন্য কেউ পরেছে, এমন রুদ্রাক্ষের মালা পরবেন না। এছাড়াও, ঘুমানোর সময় রুদ্রাক্ষ খুলে রাখতে পারেন।
কীভাবে চিনবেন ভাল রুদ্রাক্ষ?
যেই সমস্ত রুদ্রাক্ষ সর্বদিকে সমান, উঁচু -নীচু, আঁকা -বাঁকা নয়, সেই রুদ্রাক্ষকেই সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। কোনও রকম ছিদ্র বিহীন, উজ্জ্বল ও ভারী রুদ্রাক্ষ খুব ভাল। রুদ্রাক্ষের ভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে।
রুদ্রাক্ষের প্রকারভেদ ও গুণাগুণ (Different Types of Rudraksha & Benefits)
একমুখী রুদ্রাক্ষ
এতে দৈবশক্তি থাকে। বাধা -বিপত্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এই ধরণের রুদ্রাক্ষ পরলে। মনে করা হয় একমুখী রুদ্রাক্ষ ধারণের ফলে বৈষয়িক লাভ বেশি হয়।
দ্বিমুখী রুদ্রাক্ষ
প্রায় চ্যাপ্টা আকৃতির এই রুদ্রাক্ষ সমৃদ্ধি ও সুরক্ষার শক্তি থাকে। মহিলাদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। মনে করা হয় এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে কেউ বশ করতে পারে না।
ত্রিমুখী রুদ্রাক্ষ
ত্রিমুখী রুদ্রাক্ষ পরলে জ্বর উপশম হয়। এটি দৈবিক ক্ষমতা সম্পন্ন। এতে ত্রিলোক - আকাশ, মর্ত্য ও পাতালের যাবতীয় উপশক্তি নিহিত থাকে।
চতুর্মুখী রুদ্রাক্ষ
শোনা যায় ব্রহ্মার প্রভাবেই চতুর্মুখী রুদ্রাক্ষের উৎপত্তি হয়। এটি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মন বসাতে খুব ভাল কাজ দেয়। এটি গলায় ধারণ করলে শত্রু ক্ষতি করতে পারে না। সেই সঙ্গে বাস্তব জীবনেও শ্রীবৃদ্ধি হয়।
পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ
এই ধরণের রুদ্রাক্ষ পাপনাশক এবং শান্তিপ্রদানকারী। তবে এটি একসঙ্গে তিনটি ধারণ করতে হয়। তাহলে যে কোনও মনস্কামনা পূরণ হয়।
ষষ্ঠমুখী রুদ্রাক্ষ
কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা পেতে এই ধরণের রুদ্রাক্ষ ধারণ করতে বলা হয়। এর ফলে বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞানের ফল প্রকাশ পায়।
সপ্তমুখী রুদ্রাক্ষ
এটি রোগ নিবারক ও সমৃদ্ধশালী। সপ্তমুখী রুদ্রাক্ষ সাক্ষাৎ কামরূপ। বিশেষত মণিবন্ধনে এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে সুফল প্রাপ্তি হয়।
দশমুখী রুদ্রাক্ষ
কামনা পূরণে এই ধরণের রুদ্রাক্ষ ধারণ করতে বলা হয়। এটি বিপদনাশক এবং রোগ ব্যসধি নিবারক।
একাদশমুখী রুদ্রাক্ষ
স্বয়ং রুদ্রাক্ষই একাদশমুখী রুদ্রাক্ষ। এটি ধারণ করলে বিজয় প্রাপ্ত হওয়া যায়।
দ্বাদশমুখী রুদ্রাক্ষ
এটি সহজে পাওয়া যায় না। তবে ধারণ করতে পারলে, রোগ, চিন্তা, ভয়, শোক ইত্যাদি থেকে মুক্তি মেলে।
চতুর্দশমুখী রুদ্রাক্ষ
রুদ্রদেবের নয়ন থেকে চতুর্দশমুখী রুদ্রাক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল। তাই বলাই বাহুল্য এর গুণ অপরিসীম। এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি মেলে।