প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী উদযপিত হয় এবং এইদিনেই সরস্বতী পুজো করার প্রথা রয়েছে। হিন্দু ধর্মে, বসন্ত পঞ্চমী একটি উৎসব যা জ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির সঙ্গমের প্রতীক। এটি একটি নতুন সূচনা এবং জ্ঞান অর্জনের দিন। বসন্ত পঞ্চমীর শুধু ধর্মীয় নয়, জ্যোতিষশাস্ত্রের দিক থেকেও তাৎপর্য রয়েছে।
কবে পড়েছে সরস্বতী পুজো
হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী পালিত হয়। এই বছর মাঘ পঞ্চমী তিথি ২ ফেব্রুয়ারি, রবিবার পড়েছে। অর্থাৎ আজকে ঘরে ঘরে পূজিত হচ্ছেন বাগদেবী। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে, রবিবার সকাল ৯টা ১৬ মিনিট থেকে সরস্বতী পুজোর তিথি শুরু হয়ে গিয়েছে। যা চলবে পরের দিন ৩ ফেব্রুয়ারি ০৬টা ৫৩ মিনিট পর্যন্ত। অন্যদিকে গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা অনুসারে, পঞ্চমী তিথি ১৯ মাঘ, রবিবার শুরু হবে। ইংরেজি, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখ পড়ছে সেদিন। দিনটি রবিবার। বসন্ত পঞ্চমীর তিথি বেলা ১২ টা ১২ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে শুরু হবে। ২০ মাঘ, সোমবার, অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সালে তিথি সকাল ৯ টা ৫৭ মিনিটে ৩৮ সেকেন্ডে শেষ হবে। অন্যদিকে, বেণীমাধব শীলেল পঞ্জিকা মতে, রবিবার ১৯ মাঘ পড়ছে পঞ্চমী তিথি। সেদিন অর্থাৎ ২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সালে রবিবার এই তিথি পড়ছে ১২ টা ৩৪ মিনিটে। পঞ্চমী তিথি শেষ হবে ২০ মাঘ, সোমবার। সেদিন ইংরেজি, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫। সোমবার সকাল ৯ টা ৫৯ মিনিটে শেষ হবে তিথি।
সোমবারও পুজো করা যেতে পারে
তাই সোমবারও ১০টা পর্যন্ত সরস্বতী পুজোর পঞ্চমী তিথি রয়েছে। সুতরাং এই তিন পঞ্জিকার যে কোনও একটি তিথি মেনে আপনি সোমবারও বাগদেবীর আরাধনা করতে পারেন। তবে অধিকাংশ বাড়িতে, পাড়ায় ও স্কুল-কলেজে রবিবারই সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, বসন্ত পঞ্চমীর দিনে, দেবী সরস্বতীর কাছে বুদ্ধি এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রার্থনা করা হয়। সঙ্গীত, শিল্প ও সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই দিনে বিশেষ পুজো করেন। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ দিন। ২০২৫ সালে সরস্বতী পুজোর জন্য ৩ ঘণ্টা ২৬ মিনিট সময় থাকবে। সরস্বতী পুজো মুহূর্ত ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ০৯ টা ১৪ মিনিট থেকে ১২ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত।
শুভ সময়
প্রচলিত হিন্দু রীতি ও ঐতিহ্য অনুসারে, সরস্বতী পুজোর দিনটি শিশুদের শিক্ষা ও বিদ্যা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি শুরু করার জন্য একটি অত্যন্ত শুভ দিন বলে মনে করা হয়। এছাড়াও এই পবিত্র দিনটি ব্যবসা, স্কুল প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি নতুন কাজ শুরু করার জন্যও শুভ বলে বিবেচিত হয়। এইদিন অনেকে হাতেখড়িও দেওয়া করান তাঁদের সন্তানদের। সন্ত পঞ্চমীকে অবুঝ মুহূর্ত হিসাবে বিবেচনা করা হয়, অর্থাৎ এটি বছরের সেই বিশেষ দিনগুলির মধ্যে একটি, যেদিন পঞ্চাঙ্গের দিকে না তাকিয়ে যে কোনও শুভ কাজ করা যেতে পারে। এই দিনে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান বিশেষভাবে অনুকূল থাকে।