জুলাই মাস থেকেই শ্রাবণ মাস শুরু হবে। আর এই মাসটি ভগবান শিবকে সমর্পিত করা হয়েছে। বলা হয় মহাদেবকে ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহকারে পুজো করলে তিনি ভক্তদের সকল মনের ইচ্ছা পূরণ করে। মহাদেব এতটাই উদার প্রকৃতির যে তাঁকে শ্রদ্ধা সহকারে যে জিনিসই অর্পণ করা হয় তা তিনি স্বীকার করে নেন। কিন্তু জানেন কি এমন একটি ফুল রয়েছে যা শিবপুজোয় অর্পণ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই ফুলের ওপর মহাদেবের শাপ রয়েছে। তাই এই ফুল অর্পণ করা হয় না শিবকে।
হিন্দু ধর্মে পুজোয় প্রতিটি দেবতার কাছে প্রিয় জিনিস নিবেদনের বিধান রয়েছে। এতে দেবতারা শীঘ্রই প্রসন্ন হন বলে বিশ্বাস করা হয়। শাস্ত্র অনুসারে কাঠগোলাপ ফুল ভগবান বিষ্ণুর কাছে প্রিয় বলে মনে করা হলেও ভগবান শিবের পুজোয় এই ফুল ব্যবহার করা হয় না। কথিত আছে, এই ফুল দিয়ে তাঁকে পুজো করা হলে তিনি তা গ্রহণ করেন না। কাঠগোলাপকে কেন শাপ দেওয়া হয়েছিল তার পিছনে পৌরাণিক গল্প রয়েছে।
পৌরাণিক কথা অনুসারে, একবার ব্রহ্মাজি এবং বিষ্ণুজির মধ্যে দুজনের মধ্যে কে সেরা তা নিয়ে বিবাদ হয়েছিল। এর পরে ভগবান শিব একটি জ্যোতির্লিঙ্গ তৈরি করেন এবং বলেছিলেন যে এই জ্যোতির্লিঙ্গের শুরু এবং শেষ যিনি খুঁজে পাবেন তাঁকে শ্রেষ্ঠ বলা হবে। ব্রহ্মাজি জ্যোতির্লিঙ্গের উৎস খুঁজতে নীচে নেমে যান আর বিষ্ণুজি তার শেষের সন্ধানে ওপরে উঠে যান।
ব্রহ্মাজির সঙ্গে একটি কাঠগোলাপ ফুলও নেমে আসে। ব্রহ্মাজি জ্যোতির্লিঙ্গের শেষ খুঁজে না পেয়ে শিবের সামনে মিথ্যা বললেন যে তিনি এর এক প্রান্ত খুঁজে পেয়েছেন এবং এই মিথ্যায় তিনি কাঠগোলাপ ফুলসহ একজনকে সাক্ষী করেছেন।
ব্রহ্মা দেবের মিথ্যাচারে শিব ক্রুদ্ধ হন এবং তিনি ব্রহ্মাজিকে পঞ্চম দেহ থেকে পৃথক করেন। কাঠগোলাপকে ফুলকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছিল যে আজ থেকে তুমি শিব পূজায় নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হবেন। তারপর থেকেই শিবের পুজোয় কাঠগোলাপ ফুল ব্যবহার করা হয় না।