২০২৩ শেষ হয়ে ২০২৪ শুরু হবে। সংখ্যাতত্ত্বের দিক থেকে প্রতিটা বছরের একটা বিশেষ গুরুত্ব আছে। এবছরের মূলাঙ্ক ৮। যার অর্থ এটি শনির বছর। জ্যোতিষশাস্ত্রে শনিদেবকে নয়টি গ্রহের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। অনেকরই অজানা শনিদেব ন্যায়বিচারের দেবতা এবং মানুষকে তাদের কর্মের ভিত্তিতে ফল দেন তিনি।
শনির মহাদশার কারণে দুর্দশা ভোগ করতে হয়। গ্রহরাজের নাম শুনলেই অনেকে ভয় পেয়ে যান। তাদের মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন জাগতে শুরু করে। তবে ভয়ের কিছু নেই। শনিদেব ভক্তদের ভাল কাজের শুভ ফল দেন। তবে যারা খারাপ কাজ করেন, তাদের শনিদেবের ক্রোধের সম্মুখীন হতে হয়। ২০২৪ সালেও ঠিক এটাই ঘটবে। অর্থাৎ আপনি যদি ভাল কাজ করেন, তার জন্য নতুন বছরটি দারুণ কাটবে। উল্টো দিকে খারাপ কাজ করার জন্য, জীবনে দুর্দশার শেষ থাকবে না।
শনি নক্ষত্র পরিবর্তন
শনি গত ২৪ নভেম্বর তার বন্ধু রাহুর নক্ষত্রে প্রবেশ করেছে। এই নক্ষত্রটি কুম্ভ রাশির অধীনে থাকে এবং রাহু দ্বারা শাসিত। আগামী বছর ৬ এপ্রিল পর্যন্ত এখানেই থাকবেন গ্রহরাজ। এরপরে শনি ৬ এপ্রিল বিকেল ৩:৫৫ মিনিটে পূর্বা ভাদ্রপদ নক্ষত্রে প্রবেশ করবে। শনির এই রাশি পরিবর্তনের কারণে কিছু রাশির ভাগ্য খুলবে। সৌভাগ্যবান রাশির তালিকায় রয়েছে- মেষ, বৃষ, সিংহ রাশির জাতক- জাতিকারা।
শনিদেবকে সন্তুষ্ট করতে কোনও ব্যক্তিকে সৎ থেকে, ভাল কাজ করে যেতে হবে। এছাড়া কোনও দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষকে খাওয়ালেও গ্রহরাজ খুশি হোন। জীবনে শনির সাড়ে সাতি বা ঢাইয়া কাটানোর কিছু উপায় জ্যোতিষশাস্ত্রে বলা রয়েছে। জানুন গ্রহরাজের ব্রত পালনের নিয়মকানুন।
শনির ব্রতর নিয়মকানুন
শনিবার সন্ধ্যাবেলা ঘরের বাইরে উঠোনে এই ব্রত পালন করতে হয়। কিংবা কোনও শনি মন্দিরে গিয়েও ব্রত পালন করতে পারেন। গ্রহরাজের পুজোতেও সত্যনারায়ণ পুজোর মতো সিন্নি দেওয়া হয়। সারাদিন উবাস থেকে, সন্ধ্যাবেলা শনিদেবের পুজোর শেষে, ব্রতকথা শুনে নির্মাল্য প্রসাদ গ্রহণ করতে হয়।
শনির ব্রতের উপকরণ
উৎকৃষ্ট ফল ৫ টি, পান, সুপারি, কালো পাড় ধুতি, লোহার আসন, অঙ্গুরীয়, মধুপক্ষের বাটি, মাষকলাই, কালো তিল, নীল অপরাজিতা ফুল, মিষ্টি, দই, নৈবেদ্য, ধূপ, প্রদীপ, কালো মাটির ঘট বা লোহার ঘট, গঙ্গাজল, গঙ্গামাটি, ফুল ইত্যাদি। এছাড়াও সিন্নির জন্য লাগে আটা, দুধ, কলা, গুড়, বাতাসা।
শনির ব্রতের ফল
শনিবারে গ্রহরাজের ব্রত পালন করলে, শনিদেব সুপ্রসন্ন হন। সংসারে আপদ -বিপদ, দুঃখ -কষ্ট দূর হয়ে শান্তি বিরাজ করে। শনিদেবের কৃপায় সর্বপ্রকার গ্রহদোষ কেটে যায়।
শনিদেবের ধ্যান
ওঁ সৌরাষ্ট্রং কাশ্যপং শূদ্রং সূর্যাস্যাং চতুরাঙ্গুলম। কৃষ্ণং কৃষ্ণাম্বরং গৃধ্রগতং শৌরিং চতুর্ভুজম। উদ্ববাণং শূলং ধনুরহস্তং সমাহ্নয়েৎ। যমাধিদৈবতং দেবং প্রজাপতিপ্রত্যধিদৈবতম।
পুজোর মন্ত্র
ওঁ ঐং হ্রীং শ্রীং শনৈশ্চরায় নমঃ।
প্রণাম মন্ত্র
ওঁ নীলঞ্জনচয়ং প্রখ্যং রবিসূতঃ মহাগ্রহম। ছায়ায়াং গর্ভশম্ভুতং বন্দে ভক্ত্যা শনৈশ্চরম।