আমাদের হিন্দুদের মনে পশু-পাখিদের নিয়ে অনেক রকম কুসংস্কার রয়েছে। তবে এগুলো আদৌও সংস্কার নাকি কুসংসস্কার তা সত্যিই জানা নেই। প্রাচীন কাল থেকেই এই কথা গুলি লোকমুখে প্রচারিত, এই ধারণাগুলি কতটা বাস্তবায়িত বা ভাগ্যের সঙ্গে এর যোগ সুত্র আছে কি না, সে সম্পর্কে দেখে নেওয়া যাক।
শালিক পাখি গ্রামের পাশাপাশি শহরেও দেখতে পাওয়া যায়। গ্রামের পাশাপাশি শহরেও শালিক পাখি নিয়ে সংস্কার রয়েছে। অনেকেই বলেন এক শালিক অশুভ, জোড়া শালিক শুভ আর তিন শালিক চিঠি বা অতিথির আগমণ বার্তা নিয়ে আসে। আর চার শালিক আনন্দের সংবাদ নিয়ে আসে। ছোট থেকেই কিন্তু এই কথা আমরা শুনে আসছি।
একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন, শালিক পাখি কিন্তু একা একা থাকে না। এরা সাধারণত দুটি একসঙ্গে থাকে। অথবা দলবদ্ধ হয়ে থাকে। তাই প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী এক শালিক খারাপ ইঙ্গিত দেয়। যাইহোক ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্রে তেমন কোনো উল্লেখ না থাকেও এক শালিককে অশুভ বলে ধরে নেয়া হয়েছে। আর জোড়া শালিক বা দুই শালিককে শুভ বলে মনে করা হয়। সকালবেলা বা কোনো শুভকাজ বা পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে যদি দুটি শালিক একসঙ্গে দেখতে পাওয়া যায় তাহলে কিন্তু মন ভালো হয়ে যায়। আর সেই কাজে আপনি নিজের অজান্তেই একশো শতাংশ দিয়ে থাকেন। তাতে কাজটি কিন্তু আদতে ভালোই হয়।
শালিক কিন্তু সাধারণত দলবদ্ধ হয়ে থাকতে ভালবাসে। তাই একটি মাত্র শালিক থাকলে সেটিকে হয়তো বিচ্ছিন্নতা বা নিঃসঙ্গতার প্রতীক বলে মনে করা হয়। পশ্চিমী কোনও কোনও সংস্কৃতিতে এক জোড়া সোয়ালো পাখি দেখা শুভ বলে মনে করা হয়। সেক্ষেত্রে শীতের শেষে বসন্তের শুরুতে জোড়া সোয়ালো পাখি প্রেমর প্রতীক, কোনও কিছু শূন্য থেকে আবার শুরু করার বার্তা বয়ে আনে। আমরা যে জোড়া শালিককে শুভ বলি, সেটাও কিন্তু একটি স্ত্রী শালিক, অন্যটি পুরুষ হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে সংস্কার মানার সময় আমাদের অতশত দেখার সময় থাকে না। একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা জেনে রাখা দরকার। তা হল, একটা শালিক অশুভ এবং জোড়া শালিক শুভ-এই বিধান জ্যোতিষশাস্ত্রে কোথাও নেই। এর মান্যতাও নেই কোথাও।