বিভিন্ন পেশার মানুষ বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja) করেন। উন্নত ভবিষ্যৎ, নিরাপদ কাজের পরিস্থিতি এবং নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সর্বোপরি নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করেই এই পুজো হয়। মূলত কারাখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, দোকান এবং যন্ত্রপাতি আছে এরকম সব স্থানেই বিশ্বকর্মা পুজো হয়। পুরাণ মতে ব্রহ্মাপুত্র বিশ্বকর্মা (Vishwakarma), গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নকশা তৈরি করেছিলেন।
ভাদ্র মাসের সংক্রান্তি তিথিকে 'কন্যা সংক্রান্তি' বলা হয়। পুরাণ মতে এই তিথিতেই বিশ্বকর্মার জন্ম হয়। হিন্দু ধর্মে সব দেব - দেবীর পুজোর তিথি স্থির হয় চন্দ্রের গতি প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে। কিন্তু শুধুমাত্র বিশ্বকর্মা পুজোর তিথি স্থির করা হয়, সূর্যের গতি প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
যখন সূর্য সিংহ রাশি থেকে কন্যা রাশিতে গমন করে, তখন সময় আসে এই উত্তরায়ণের। মনে করা হয়, সেই সময়ই দেবতারা নিদ্রা থেকে জেগে ওঠেন এবং বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করা হয়। শুধু তাই নয়, হিন্দু পঞ্জিকার দুই শাখ- সূর্য সিদ্ধান্ত এবং বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত উভয়ই এই পুজোর ক্ষেত্রে একমত।
বিশ্বকর্মা পুজো ২০২৩ -র দিনক্ষণ (Vishwakarma Puja 2023 Date & Time)
* এই বছর বিশ্বকর্মা পুজো পড়েছে ১৮ সেপ্টেম্বর (বাংলায় ৩১ ভাদ্র), সোমবার।
* অমৃত যোগ - দিবা ঘ ৭।৩ মধ্যে ও ১০। ১৯ গতে ১১।৪৭ মধ্যে এবং রাত্রি ঘ ৬। ২৯ গতে ৮। ৪৯ মধ্যে ও ১১। ১০ গতে ২।১৭ মধ্যে।
* মাহেন্দ্র যোগ - দিবা ঘ ৩।১৪ গতে ৪। ৫৩ মধ্যে।
বিশ্বকর্মা পুজোর মন্ত্র (Vishwakarma Puja Mantra)
দংশপালঃ মহাবীরঃ সুচিত্রঃ কর্মকারকঃ। বিশ্বকৃৎ বিশ্বধৃকতঞ্চ বাসনামানো দণ্ডধৃক। ওঁ বিশ্বকর্মণে নমঃ।
বিশ্বকর্মা পুজো কন্যা সংক্রান্তিতে পড়ে। এই বিশেষ দিনটি ভারতীয় সৌর বর্ষপঞ্জি এবং বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসের শেষ দিন। এই ভাদ্র সংক্রান্তির আগেই বাংলা পঞ্জিকাতে ৫ মাসের উল্লেখ মেলে, যার দিন সংখ্যা মোট ১৫৬ দিন। তাই সাধারণত বিশ্বকর্মা পুজোর বাংলা তারিখটি, ইংরাজি ক্যালেন্ডারে ১৭ সেপ্টেম্বর পড়ে। কোনও কোনও বছর, উল্লেখিত ৫ মাসের মধ্যে যদি ২৯ কিংবা ৩২ দিন থাকে কোনও মাসে, একমাত্রে সেক্ষেত্রে বিশ্বকর্মা পুজোর তারিখ একদিন এগিয়ে বা পিছিয়ে পড়ে। তবে সেটি খুবই ব্যতিক্রমী ঘটনা। ২০১৯ সালে বিশ্বকর্মা পুজো উদজাপিত হয়েছিল ১৮ সেপ্টেম্বর। এবছরও একই কারণে এই পুজো হবে সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখ।
শুধু কলকারাখানা, শিল্পক্ষেত্র নয়, অনেক বাড়িতেও বিশ্বকর্মা পুজো করা হয়। এই বিশেষ দিন পুজোর পর রকমারি খাওয়া দাওয়ায় মেতে ওঠেন সকলে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সমবেতভাবে ঘুড়ি ওড়ানো রীতি রয়েছে। এছাড়াও এই পুজোর আগের দিন পশ্চিমবাংলার আদি বাসিন্দারা অর্থাৎ এদেশীয়রা সারা রাত জেগে রান্না পুজো করেন। এটিও বাঙালিদের একটি জনপ্রিয় পার্বণ।