এই বছর ভাইফোঁটা কালীপুজোর পরের দিন থেকে শুরু হলেও কার্তিকের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয় ভাইফোঁটা উৎসব। ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে এই উৎসব পালিত হয়। ভাই-বোনেদের কাছে এই দিনটি ভীষণভাবে বিশেষ। বোন বা দিদিরা ভাই ও দাদাদের জন্য উপোস করে। আদরের ভাইদের জন্য হয় নানান ধরনের পদ। দীপাবলীর পরেই প্রত্যেক ঘরে ঘরে ভাইফোঁটার আনন্দে মেতে ওঠে প্রত্যেক বাঙালী পরিবার।
কেন কড়ে আঙুল দিয়ে ফোঁটা দেওয়া হয়
বোন বা দিদিরা বাঁ হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেয়। কিন্তু কেন বাঁ হাত ও কড়ে আঙুল ব্যবহার করা হয় ফোঁটা দেওয়ার ক্ষেত্রে। এটা অনেকেরই অজানা। আসলে এটা মহাশূন্যের প্রতীক। আমাদের হাতের আঙুলগুলোতে পঞ্চমহাভূত ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম অবস্থান করে। ব্যোম হচ্ছে কড়ে আঙুল। ভাইবোনের পারস্পরিক ভালবাসা যেন অসীম ও অনন্ত হয়, তাই এই আঙুলের ব্যবহার।
ভাইফোঁটার সময়
ভাইফোঁটা বা ভাইদুজ ২৩ অক্টোবর পালিত হবে। এই বছর, কার্তিক শুক্লা দ্বিতীয়া তিথি ২২ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে রাত ৮টা ১৬ মিনিটে শুরু হবে এবং ২৩ অক্টোবর রাত ১০টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত চলবে। জ্যোতিষশাস্ত্রের নিরিখে, ২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভাইফোঁটা উদযাপনকে সবচেয়ে শুভ বলে মনে করা হয়। এদিন ব্রহ্ম মুহূর্তে প্রথমে স্নান করা উচিত। থালায় প্রদীপ, ধূপ, শঙ্খ, ধান, দূর্বা, কাজল, চন্দন, দই ও ঘি। এরপর হয় মিষ্টিমুখ, ভাইফোঁটা দেওয়ার সময় সবসময় ভাইকে উত্তর বা পূর্ব দিকে মুখ করিয়ে বসানো উচিত।
কোন দিকে বসাবেন ভাই বা দাদাকে
ভাইকে সর্বদা উত্তর দিকে বা উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে বসিয়ে ফোঁটা দেওয়ার রীতি রয়েছে। কখনওই ভাইকে মেঝেতে বসিয়ে ফোঁটা দিতে নেই। ভাইফোঁটা মূলতঃ ভাই-বোনেদের উৎসব। এদিন ভাইদের মঙ্গলের জন্যে সকাল থেকে উপোস রেখে তিথি অনুযায়ী, ধান-দুর্বা দিয়ে ভাইফোঁটার মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে ভাইফোঁটা সম্পন্ন করেন বোন বা দিদিরা। ভাই বোনদের মঙ্গল কামনায় বাঙালি বাড়ির ঘরে-ঘরে সকলে এই উৎসবে সামিল হন।