আর কিছুদিন পর থেকেই দিওয়ালীর উৎসব শুরু হতে চলেছে। দিওয়ালীর উৎসব শুধু হয়ে যায় ধনতেরাস থেকে যা চলে ভাইফোঁটা পর্যন্ত। ধনতেরাসকে ধন্বন্তরী ত্রয়োদশীও বলা হয়ে থাকে। এইদিন মা লক্ষ্মী, কুবের দেবের সঙ্গে ধন্বন্তরীর পুজো করা হয়। এই বছর ধনতেরাস পালন করা হবে ২৯ অক্টোবর, মঙ্গলবার। কিন্তু কেন এইদিন ধন্বন্তরীর পুজো করা হয় জানেন?
ত্রয়োদশী তিথির কৃষ্ণপক্ষে এই ধনতেরাস পালন করা হয়ে থাকে। ধন্বন্তরী, যাঁকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের গুরু বলে মনে করা হয়, তাঁর জন্মশতবর্ষকে পালন করা হয় ধনতেরাসে। ধনতেরাসের দিন ধন্বন্তরীর পুজো করা হয়ে থাকে। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময় ভগবান ধন্বন্তরী অমৃতের কলস নিয়ে আবির্ভুত হয়েছিলেন। তাঁর অপর হাতে ছিল আয়ুর্বেদের পবিত্র বই। তাঁকে চিকিৎসাশাস্ত্রের ভগবান বলে মনে করা হয়। হিন্দু দর্শনে সমুদ্র মন্থনের পর্বটি মহাভারতের ভগবৎ পুরাণ ও বিষ্ণু পুরাণে উল্লেখ রয়েছে। তাই ধনতেরসের দিন মা লক্ষ্মী ও কুবেরের পুজোর পাশাপাশি ভাল শরীর-স্বাস্থ্য ও নিরোগ থাকার জন্য ধন্বন্তরীর পুজো করা হয়ে থাকে।
ধন্বন্তরীর আবির্ভাবের স্মরণে প্রতি বছর কার্তিক কৃষ্ণ ত্রয়োদশীর দিনে ধনতেরাস উৎসব পালিত হয়। একই সময়ে, বলা হয় যে দেবী লক্ষ্মী ভগবান ধন্বন্তরীর জন্মের দুই দিন পরে আবির্ভূত হন, তাই ধনতেরসের দু'দিন পরে দীপাবলি উৎসব উদযাপিত হয়। এই বছর ২৯ অক্টোবর, মঙ্গলবার ধনতেরাস উৎসব পালন করা হবে। ভগবান ধন্বন্তরী জন্মের সময় অমৃত কলশ বহন করছিলেন। তাই ধনতেরাসের দিন পাত্র কেনার রীতি রয়েছে। বাসনপত্র ছাড়াও, সোনা এবং রূপার মতো যে কোনও ধাতব জিনিস কেনাও শুভ বলে মনে করা হয়।
বেশ কিছু বছর পিছনে গেলে দেখা যাবে, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের লিস্টে ছিল না কোনও ‘ধনতেরাস উৎসব’। কিন্তু সে চিত্র এখন পাল্টে গিয়েছে। অবাঙালিদের ধনত্রয়োদশী উৎসবকে আপন করে নিয়েছে বাঙালি। তাদের অনুসরণ করেই ধনী থেকে সাধারণ, সব বাঙালিই মেতেছে সঞ্চয়ের উৎসবে। অনেকেই এইদিনে সোনা-রূপো কিনে থাকে। তবে ধনতেরাসের দিন ঝাঁটা, গোটা ধনে কেনার রীতিও রয়েছে।