মুকেশ অম্বানিকেও ছাপিয়ে গেলেন গৌতম আদানি। শুধু ভারতেরই নন এই গুজরাটি ব্য়বসায়ী এখন এশিয়ার ধনী ব্যক্তি (Asia's Richest Person)। ফোবর্সের রিয়েল টাইম বিলিওনেয়ার তালিকায় আদানির সম্পত্তি ৯০ বিলিয়ন ডলার। দুনিয়ায় তিনি দশম ধনী ব্যক্তি। কিন্তু একেবারে সামান্য পুঁজিতে ব্যবসায় হাতেখড়ি হয়েছিল আদানির। সেখান থেকে আজ এই উত্তরণ।
মাত্র ৫ লক্ষ টাকার মূলধন নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন আদানি। ধীরে ধীরে বিশাল সাম্রাজ্যের মালিক হন। আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানির এই উত্থানের নেপথ্যে রয়েছে তাঁর পরিশ্রম, বুদ্ধি ও ব্যবসায়িক কৌশল।
কলেজের ডিগ্রিও হাসিল করতে পারেননি গৌতম আদানি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে মুম্বই গিয়ে হিরের কারবারে হাত পাকান। তার পর গুজরাটে ফিরে যান। ১৯৮১ সালে নিজের ভাইয়ের প্লাস্টিকের কারখানায় কাজ করতে শুরু করেন।
১৯৮৮ সালে আদানি এক্সপোর্ট শুরু করেন। মাত্র ৫ লক্ষ টাকা পুঁজি। পরে এই কোম্পানিই হয় আদানি এন্টারপ্রাইজ। ১৯৯৪ সালে শেয়ারবাজারে নথিভুক্ত হয় এই সংস্থা। ১৯৯১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতির দরজা হাট করে দিয়েছিলেন। তাতে লাভবান হয় আদানির ব্যবসা। নতুন দিগন্ত খুলে যায় গৌতম আদানির সামনে।
১৯৯৫ সালে মোড়বদল হয় গৌতম আদানির জীবনে। মুন্দ্রা বন্দরের পরিচালনার ভার পায় তাঁর সংস্থা। গুজরাটের সরকার কচ্ছের মুন্দ্রার জলবন্দরের দেখাশোনার দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থা হাতে সঁপে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাট সরকার। আজ সেই মুন্দ্রা বেসরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকা বৃহত্তম বন্দর।
কয়েক বছর আগে থেকে অনেকেই বলছিলেন, মুকেশ অম্বানিকেও ছা়ড়িয়ে যেতে পারেন গৌতম আদানি। সেটাই সত্যি হল। মুকেশের সঙ্গে দ্বৈরথ হলেও তাঁর বাবা ধীরুভাই অম্বানির সঙ্গে তুলনা করা হয় আদানির। ধীরুভাইয়ের মতো তিনিও শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন। মুকেশ অম্বানির মতো আদানি শুরু থেকে বিশাল সাম্রাজ্যের অধিপতি ছিলেন না।
ভারতে অবশ্য সমালোচিতই হন গৌতম আদানি। যদিও তাঁর ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। অস্ট্রেলিয়াতেও কারবার করছেন। কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গে তাঁর দহরম-মহরম রয়েছে বলে দাবি করে বিরোধীরা। যদিও আদানির সাফ কথা, রাজনীতির সঙ্গে তাঁর সখ্যতা নেই।
চিরকালই বৃহত্তর চিন্তাভাবনার শরিক হতে পছন্দ করেন গৌতম আদানি। বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেও নিজেকে আড়ালেই রাখেন। একবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন,'টাকা-পয়সা আসবে যাবে। টাকা এলে উৎফুল্ল হওয়া বা চলে গেলে হতাশ হওয়ার দরকার নেই।' ---