8th Pay Commission: ২০২৫ সালের গোড়ার দিকে মোদী সরকার কেন্দ্রীয় কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের জন্য সুসংবাদ ঘোষণা করে। সরকার ১৬ জানুয়ারি অষ্টম বেতন কমিশন ঘোষণা করে এবং বলে, নতুন বেতন কমিশন ১ জানুয়ারি, ২০২৬ এর মধ্যে কার্যকর করা হবে। তবে, সেপ্টেম্বরের শেষেও, কমিশনের সরকারি বিজ্ঞপ্তি, রেফারেন্সের শর্তাবলী (TOR) এবং সদস্যদের নিয়োগ এখনও হয়নি। এটি কর্মচারী এবং ইউনিয়নগুলির মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠে এসেছে, বেতন কমিশন বাস্তবায়নের জন্য কি ২০২৮ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে?
অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, বেতন কমিশন গঠনের পর থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে। যদি এই ধারার পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে ২০২৮ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কত সময় লাগতে পারে তার ধারণা পেতে, আসুন পূর্ববর্তী দুটি বেতন কমিশনের সময়সীমা দেখে নেওয়া যাক - ঘোষণা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত।
ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সময়সীমা
২০০৬ সালের অক্টোবরে ষষ্ঠ বেতন কমিশন গঠিত হয়। কমিশন ২০০৮ সালের মার্চ মাসে সরকারের কাছে তার প্রতিবেদন জমা দেয়। সরকার ২০০৮ সালের অগাস্টে প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে এবং প্যানেলের সুপারিশগুলি বাস্তবায়ন করে, যা ১ জানুয়ারি, ২০০৬ থেকে কার্যকর হয়। সুতরাং, ষষ্ঠ বেতন কমিশন গঠন থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সময়কাল প্রায় ২২-২৪ মাস লেগেছিল।
সপ্তম বেতন কমিশনের সময়সীমা
এটি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গঠিত হয়েছিল এবং এর কর্ম-সংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০১৪ সালের মার্চের মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছিল। কমিশন ২০১৫ সালের নভেম্বরে তার প্রতিবেদন জমা দেয়। সরকার ২০১৬ সালের জুনে সুপারিশগুলি গ্রহণ করে এবং ১ জানুয়ারী, ২০১৬ থেকে সেগুলি বাস্তবায়ন করে। এর অর্থ হল এটি গঠন থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত প্রায় ৩৩ মাস (২ বছর ৯ মাস) সময় লেগেছে। এই তুলনা স্পষ্টভাবে দেখায় যে উভয় কমিশন গড়ে ২-৩ বছর সময় নিয়েছে।
অষ্টম বেতন কমিশনের বর্তমান অবস্থা
অষ্টম বেতন কমিশনের ঘোষণাটি ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে করা হয়েছিল। তবে, সদস্যদের তালিকা বা ToR এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এর অর্থ হল আসল প্রক্রিয়াটি এখনও শুরু হয়নি। যদি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কমিশন গঠিত হয় এবং রিপোর্টটি প্রস্তুত করতে দুই বছর সময় লাগে, তবে এটি ২০২৭ সালের মধ্যে প্রস্তুত হবে। এর পরে, সরকারের রিপোর্টটি বিবেচনা, সংশোধন এবং অনুমোদনের জন্যও সময় প্রয়োজন হবে। অতএব, ২০২৮ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়িত করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, কমিশনের সুপারিশগুলি ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে, যার ফলে কর্মচারী এবং পেনশনভোগীরা বিলম্বিত সময়ের প্রাপ্য পাবেন।
এই কমিশন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সরকারি কর্মচারীদের জন্য, বেতন কমিশন কেবল বেতন বৃদ্ধিই আনে না, এটি তাদের ভাতা, পেনশন এবং ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তার রূপরেখাও দেয়। বিশেষ করে মুদ্রাস্ফীতির এই সময়ে, কর্মচারীরা চান যে ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির বোঝা কমাতে কমিশনের কাজ শীঘ্রই শুরু হোক। কমিশনের সুপারিশগুলি পেনশনভোগীদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলি সরাসরি তাদের পেনশন এবং মহার্ঘ ভাতা (DA) এর উপর প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
আর্থিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, যদি সপ্তম কমিশনের নীতির পুনরাবৃত্তি করা হয়, তাহলে অষ্টম কমিশনের প্রতিবেদন এবং পরবর্তী অনুমোদনে সময় লাগবে। বর্তমান বিলম্বের কারণে, এটি ২০২৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। ইতিমধ্যে, ১ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি কর্মচারী এবং পেনশনভোগী মূল কমিটির সদস্য এবং টিওআর নিয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ইতিহাস বলছে, ষষ্ঠ এবং সপ্তম কমিশন বাস্তবায়নে যথেষ্ট সময় লেগেছে। অতএব, এটা বলা ভুল হবে না যে অষ্টম বেতন কমিশন ২০২৮ সালের আগে বাস্তবায়িত হবে না।