Advertisement

Lockdown Impact On Stock Market: দেশে লকডাউন ঘোষণার ৩ বছর পার, নজরে শেয়ারবাজারের ‘হাল-খাতা’

Stock Market Volatility After Lockdown 2020: আজ থেকে তিন বছর আগে এখন ভারতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। দেখে নেওয়া যাক ভারতে লকডাউন ঘোষণার পরবর্তী ৩ বছর শেয়ারবাজার আর যাঁরা সে সময় শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের কতটা মুনাফা বা ক্ষতি হয়েছে...

দেশে লকডাউন ঘোষণার ৩ বছর পার, নজরে শেয়ারবাজারের ‘হাল-খাতা’!
সুদীপ দে
  • কলকাতা,
  • 23 Mar 2023,
  • अपडेटेड 8:25 PM IST
  • আজ থেকে তিন বছর আগে এখন ভারতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।
  • করোনা মহামারীর প্রকোপ সম্পর্কে তখনও দেশের মানুষের কোনও ধারণাই ছিল না।
  • মুখ থুবড়ে পড়েছিল দেশের শেয়ারবাজার-বিনিয়োগ-অর্থনীতি।

Stock Market Volatility After Lockdown 2020: আজ থেকে তিন বছর আগে এখন ভারতে লকডাউন ঘোষণার প্রস্তুতি তুঙ্গে। করোনা মহামারীর প্রকোপ সম্পর্কে তখনও দেশের মানুষের কোনও ধারণাই ছিল না। তারপর ধীরে ধীরে মানুষ দীর্ঘ সময়ের জন্য ঘরবন্দী হয়েছে। কাজ-কর্ম, অফিস-কাছাড়ি, কল-কারখানা সবটাই থমকে গিয়েছিল একটা সময়। মুখ থুবড়ে পড়েছিল দেশের শেয়ারবাজার-বিনিয়োগ-অর্থনীতি। দেশের লকডাউন ঘোষণার তৃতীয় বছরে চলুন হিসেব কষে দেখা যাক শেয়ারবাজারের উত্থান-পতন, বিনিয়োগের হাল-হকিকত।

আরও পড়ুন: হাই রিটার্ন পেতে SIP করার সেরা সময় এটাই, কেন?

আজ একটু তিন বছর আগে যদি আমরা ফিরে যাই এখনও সেই আতঙ্কের স্মৃতি সকলেরই তাজা।যখন মনে হচ্ছিল আমদের সময় হয়তো স্তব্ধ, ভবিষ্যৎ অন্ধকার, জীবন জীবিকা সবকিছুই প্রশ্ন চিহ্নের সম্মুখীন। নতুন বেশ কিছু শব্দের সঙ্গে আমরা পরিচিত হয়ে শুরু করেছি সবে, যেমন কোয়ারেন্টাইন, কোভিড ১৯, মাস্ক, স্যানিটাইজার, সামাজিক দূরত্ব এবং সর্বোপরি লকডাউন— এই শব্দগুলি যেন প্রতিদিনের সর্ববৃহৎ ব্যবহৃত শব্দ হয়ে ওঠে। অর্থনীতি, জীবন শঙ্কা সবই যেন মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। ঠিক তখনই স্বাভাবিক ভাবেই এসবের আঁচ এসে পরে আমাদের শেয়ার বাজারেও, বাজার ও আশঙ্কার মেঘ দেখে যার ফলে আমরা ভারতের শেয়ার বাজারের ইতিহাসে ভয়ঙ্করতম ধস প্রত্যক্ষ করি।

আরও পড়ুন: শেয়ারবাজারেও চৈত্র সেল-বড়সড় ছাড়; সুযোগ লাখ লাখ টাকা মুনাফার

২৩ মার্চ ২০২০ নিম্নমুখী সেনসেক্স এসে দাঁড়ায় ২৫,৯৮২-এ যা ২২ মার্চ, ২০১৯-এ ছিল ৩৭,৮০৮। ভারতে যেদিন কভিড ১৯-এর প্রথম কেস ধরা পড়েছিল অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারি ২০২০ সেদিন সেন্সেক্স তৎকালীন সর্বকালীন উচ্চস্তরে ৪০,৯১৩-এ অবস্থান করছিল। তাহলে ধসের পরিমাণটা ভেবে দেখুন। ২৩ মার্চ ২০২১ সেই সেন্সেক্সই এসে দাঁড়ায় ৫০,০৫১তে। এবার বৃদ্ধির পরিমাণটা ভেবে দেখুন! যে সেনসেক্স মাঝে একটা সময়ে ৬০ হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে ৬২, ৪৪৭ ছুঁয়েছিল আজ তা ৫৮,১৭১-এ দাঁড়িয়ে। আশঙ্কার মেঘ কেটে যেতেই আমরা আমাদের বাড়ির দরজা খুলেছি ঠিক যেই ভাবে বিশ্ব অর্থনীতি ও ঠিক সেই ভাবেই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে। তাই ২০২০ এর নিরিখে এই মাঝের তিন বছর শেয়ার বাজার অকল্পনীয় ভাবে ঊর্ধ্বমুখী, অনেক চাঙ্গা হয়ে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। এবার দেখে নেওয়া যাক ভারতে লকডাউন ঘোষণার পরবর্তী ৩ বছর শেয়ারবাজার আর যাঁরা সে সময় শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের কতটা মুনাফা বা ক্ষতি হয়েছিল...

Advertisement

লকডাউন ঘোষণার পরবর্তী ৩ বছর শেয়ারবাজার-বিনিয়োগের হাল:
২৩ মার্চ, ২০২০ থেকে ২৩ মার্চ, ২০২১: ২৩ মার্চ, ২০২০ সেনসেক্স সূচক ছিল ২৫,৯৮১-এ যা ২৩ মার্চ, ২০২১-এ ৯২.৬৫% বেড়ে হয় ৫০,০৫১ পয়েন্ট। সুতরাং, ২৩ মার্চ, ২০২০ তারিখে যাঁরা ১০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন ২৩ মার্চ, ২০২১-এ তাঁরা ১৯,২৬৪ টাকা রিটার্ন পেয়েছিলেন। অর্থাৎ, মাত্র এক বছরের মেয়াদে প্রায় দ্বিগুণ রিটার্ন মিলেছে। করোনা মহামারী চলাকালীন প্রথম এক বছরের মধ্যেই ভারতীয় শেয়ারবাজারে ‘ভি’ আকারের পুনরুদ্ধার (V-Shaped Recovery) দেখা যায়।

২৩ মার্চ, ২০২০ থেকে ২৩ মার্চ, ২০২২: ২৩ মার্চ, ২০২০ সেনসেক্স সূচক ছিল ২৫,৯৮১-এ যা ২৩ মার্চ, ২০২২-এ ৪৯.০১% বেড়ে হয় ৫৭,৬৮৫ পয়েন্ট। ২৩ মার্চ, ২০২০ তারিখে যাঁরা ১০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন ২৩ মার্চ, ২০২২-এ তাঁরা ২২,২০২ টাকা রিটার্ন পেয়েছিলেন। অর্থাৎ, দু’বছরের মেয়াদে দ্বিগুণেরও বেশি রিটার্ন পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

২৩ মার্চ, ২০২০ থেকে ২৩ মার্চ, ২০২৩: ২৩ মার্চ, ২০২০-এর ৩ বছর পর আজ (২৩ মার্চ, ২০২৩) ৩০.৮২% বেড়ে ৫৭,৯২৫.২৮ পয়েন্ট হয়েছে। সুতরাং, যাঁরা ২৩ মার্চ, ২০২০-এ ১০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, আজ পর্যন্ত বিনিয়োগ ধরে রাখলে তাঁরা এখন প্রায় ২২,৩৫২ টাকা পেতেন। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রেও তিন বছরের মেয়াদে দ্বিগুণেরও বেশি রিটার্ন পেতেন বিনিয়োগকারীরা।

যাঁরা ২৩ মার্চ, ২০২০-এর আগে শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন এবং আজ পর্যন্ত বিনিয়োগ ধরে রেখেছেন তাঁদের কতটা লাভ বা ক্ষতি হতে পারত এবার সেটা দেখে নেওয়া যাক। 

২৩ মার্চ, ২০১৯ থেকে ২৩ মার্চ, ২০২৩: ২৩ মার্চ, ২০১৯-এ সেনসেক্স সূচক ছিল ৩৭,৮০৯ পয়েন্টে। ওই সময় যাঁরা শেয়ারে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, তাঁরা যদি এখনও পর্যন্ত তাঁদের বিনিয়োগ ধরে রাখতেন তাহলে এখন প্রায় ৩৭,৮০৯ টাকা রিটার্ন পেতে পারতেন। 

এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ সৈকত মিত্র বলেন, “এই অকল্পনীয় বৃদ্ধি এতো সল্প সময়ে আমরা আগে কখনও দেখিনি। তাই শুধু একবার ভেবে দেখুন, যারা সেই অন্ধকার দিনগুলোয় বিনিয়োগ করেছিল ভবিষ্যতের ওপর বিশ্বাস রেখে, মানব জাতির ওপর বিশ্বাস রেখে, বিজ্ঞানের ওপর বিশ্বাস রেখে, ডাক্তার এবং সমস্ত কোভিড যোদ্ধা দের ওপর ভরসা রেখে বিশ্বাস করেছিল ভারতবর্ষ তথা বিশ্ব, তথা মানব সভ্যতা শেষ হয়ে যাবে না। অর্থাৎ, বিশ্ব অর্থনীতি চলমান হবে, জীবন জীবিকা আবার আগের গতিতে ফিরে আসবে এবং ভারতবর্ষ আবার উন্নতশীল দেশ থেকে উন্নত দেশ হওয়ার যাত্রা শুরু করবে, তারা আজ কল্পনাতীত মুনাফা অর্জন করেছে।”

তিনি বলেন, “যারা ২০১৯ সালের ২৩ মার্চের আগে বিনিয়োগ করেছিলেন, কিন্তু বাজারে করোনা-কালে ধ্বস নামার পরেও বিচলিত না হয়ে বিনিয়োগের তাৎক্ষণিক ক্ষতিতে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিয়ে ধৈর্য্য ধরেছিলেন, তারাও আজ যথেষ্ট মুনাফার মুখ দেখেছেন। সুতরাং, যখন চারপাশে ভয়-ভীতির আবহাওয়া, ঠিক তখনই যদি আমরা নিজেদের ব্যাক্তিগত অর্থনৈতিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করে, নিজের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা অনুযায়ী, ইকুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে ফেলি, সে ক্ষেত্রে লাভ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

Advertisement

এর পাশাপাশি সৈকতবাবুর মতে, এই রকম অনিশ্চিত সময় বিনিয়োগ করার জন্য সেই সময় হাতে অতিরিক্ত টাকাও থাকা দরকার। তাই আমাদের প্রত্যেকের জরুরি একটা Holistic Personal Financial Plan এবং সঠিক সম্পদের যথাযথ বণ্টন (ASSET ALLOCATION) জরুরি।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement