বাজেটে দেশের কৃষকদের জন্য বড় ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিষাণ ক্রেডিস কার্ডে লোন নেওয়ার সীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যে লোন নেওয়ার সীমা ৩ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হবে।
অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, 'কিষাণ ক্রেডিট কার্ড (কেসিসি) ৭.৭ কোটি কৃষক, জেলে এবং দুগ্ধ চাষীদের জন্য স্বল্পমেয়াদী ঋণের সুবিধা চালিয়ে যাওয়া হবে। KCC-এর মাধ্যমে নেওয়া ঋণের জন্য ঋণের সীমা ৩ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হবে, যা কৃষি উৎপাদনের জন্য আরও বেশি আর্থিক সহায়তা দেবে।' বাজেট বক্তৃতা শুরু করার সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, এই বাজেটে বিশেষ করে দরিদ্র, যুবক, অন্নদাতা কৃষক ও মহিলাদের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।
কিষাণ ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প প্রাথমিক ভাবে ২০০৪ সালে শুরু করা হয়েছিল। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড স্কিমে কৃষকদের চাষাবাদ ও কষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য সহজ শর্তে, কম সুদে লোন দেওয়া হয়। ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট (NABARD) চালু করেছিল কিষাণ ক্রেডিট কার্ড। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড কৃষকদের স্বল্পমেয়াদে ঋণ (Loan) দেয়। কৃষকরা সহজেই ঋণ নিয়ে কৃষি উপকরণ যেমন বীজ, সার, কীটনাশক কিনতে পারবেন। এছাডা়ও কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা এবং অন্যান্য খরচের জন্যও ঋণ পাওয়া যায়। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড ৩ বছর পর্যন্ত বৈধ এবং ফসল কাটার মরশুম শেষ হয়ে গেলে ঋণ পরিশোধ করা হয়।
কেসিসি স্কিমের অন্যতম প্রধান সুবিধা হল কৃষকরা অন্য ঋণের সুদের হার থেকে রেহাই পান৷ কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের অধীনে কৃষকরা বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে ঋণ পেয়ে থাকেন। কৃষকরা যদি সময়মতো ঋণ পরিশোধ করলে ৩ শতাংশ ছাড় পাবেন। অর্থাৎ, কার্যত মাত্র ৪ শতাংশ হারে ঋণ পাবেন কৃষকরা। তাহলে KCC-এর সুদের হার গড়ে ৪ শতাংশ হয়। যে ফসলের জন্য ঋণ দেওয়া হয়েছিল সেই ফসল কাটার সময়ের উপর নির্ভর করে ঋণ পরিশোধের সময়কালও ঠিক হয়।
কেসিসি ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা
ঋণগ্রহীতার বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৭৫ বছর হতে হবে। কৃষকের নিজস্ব জমি থাকতে হবে। গোষ্ঠীঋণও পাওয়া যায় কেসিসি-তে। ভাগচাষী, ভাড়াটিয়া কৃষক বা মৌখিক ঠিকা চাষিরাও KCC এর মাধ্যমে ঋণ পাওয়ার জন্য যোগ্য। স্বনির্ভর গোষ্ঠী (SHG) বা যৌথ দায়বদ্ধতা গোষ্ঠীও (JLG) ঋণ পাবে কেসিসি-র মাধ্যমে। শস্য উৎপাদন বা মৎস্যজীবীদের মতো অ-কৃষি কর্মকাণ্ডের মতো পশুপালনের মতো কাজে জড়িত কৃষকরাও লোন পাবেন।
প্রয়োজনীয় নথি
আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার আইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি। ঠিকানার প্রমাণ নথির জেরক্স, যেমন আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার আইডি এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স। জমির দলিল আবেদনকারীর একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। অন্যান্য নথি যেমন-ইস্যুকারী ব্যাঙ্কের অনুরোধ অনুযায়ী সিরিউরিটি PDC।
কীভাবে অনলাইনে কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করবেন
আপনি যে ব্যাঙ্কের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড স্কিমের জন্য আবেদন করতে চান তার ওয়েবসাইটে যান। এখন, কিষান ক্রেডিট কার্ডে ক্লিক করুন। 'আবেদন' অবশনে ক্লিক করলে, ওয়েবসাইটটি আপনাকে আলাদা পেজে নিয়ে যাবে। প্রয়োজনীয় বিবরণ সহ ফর্মটি পূরণ করুন এবং 'সাবমিট' এ ক্লিক করুন। আবেদনের রেফারেন্স নম্বর পাঠানো হবে। আপনি যোগ্য হলে, ব্যাঙ্ক কয়েকদিনের মধ্যে পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।