Stock Market Chaitra Sale, Investment Tips: চৈত্র সেল (Chaitra Sale) শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই জন্যই গড়িয়াহাট, হাতিবাগান, শ্যামবাজারে ক্রেতাদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। জামাকাপড়, জুতো, ইলেক্ট্রনিক্সের নানা জিনিসপত্র সস্তায় পাওয়ার এর চেয়ে ভাল সুযোগ সারা বছর আর পাওয়া যাবে না। তাই এই সময়টায় কলকাতার জমজমাট বাজারগুলিতে সন্ধের পর পা ফেলার জায়গা থাকে না। সারা বছরের নির্ধারিত দামের চেয়ে অন্তত ৪০-৫০ শতাংশ কম দামে জিনিসপত্র কেনার সুযোগ কে আর ছাড়তে চায় বলুন!
শেয়ারবাজারেও চৈত্র সেল!
তবে জানেন কি শেয়ারবাজারেও চৈত্র সেলের মতো দিন রয়েছে যখন বিনিয়োগ করলে লাখ লাখ টাকা মুনাফার সুযোগ পেতে পারেন লগ্নিকারীরা। এটা অনেকটা ই-কমার্স সাইটে চলা উপলক্ষ বিশেষে বড়সড় ছাড় পাওয়ার মতো সুযোগ, যেখানে ২০ হাজার টাকার স্মার্টফোনও ১২-১৪ হাজার টাকায় কেনা যায়। শেয়ারবাজারেও এমন সুযোগ পাওয়া যায় যখন ৬০০-৭০০ টাকার একেকটা শেয়ার ৫০০-৫৫০ টাকায় বা তার চেয়েও কম দামে কেনার সুযোগ থাকে।
কখন শেয়ারবাজারে চৈত্র সেলের মতো লাভবান হওয়া সুযোগ মেলে?
এই প্রসঙ্গে বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ সৈকত মিত্র বলেন, “২০১৪ সালের ৪র্থ জুলাই সেনসেক্স ছিল ২৫৯৬২ যেখান থেকে সূচক ৩৬০৫০-এ পৌঁছেছিল ২৫ জানুয়ারি। ২০১৮ (প্রায় ৪ বছর) আবার কোভিড মহামারির সময় ২৩ মার্চ ২০২০-তে নিম্নমুখী সেনসেক্স পৌঁছে গিয়েছিল সেই ২০১৪ সালের সখ্যায়। অর্থাৎ, ৬ বছরের পুরনো দাম এ, যা আজকের ভাষায় হয়তো শেয়ার বাজারের চৈত্র সেল (Chaitra Sale) মতোই ছিল। এই সময় থেকে বাজার মাত্র ৪ মাসে ২০২০-র ৩ জুলাই ফের ৩৬ হাজারের গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলে। অর্থাৎ, যারা ওই মাহেন্দ্রক্ষণে বেশি বিনিয়োগ করতে পেরেছিলেন, তারা অল্প সময়েই বেশি মুনাফা ঘরে তুলতে পেরেছেন।”
আরও পড়ুন: হাই রিটার্ন পেতে SIP করার সেরা সময় এটাই, কেন?
কোন কোন সময়ে শেয়ারবাজারে চৈত্র সেলের মতো বড় ছাড় পাওয়ার সুযোগ মিলেছে?
সৈকতবাবু মনে করিয়ে দেন যে, আমরা অতীতেও বারবার নানা কারণে শেয়ারবাজারে চৈত্র সেলের মতো বড় ছাড় পাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। গত আড়াই দশকে ১৯৯৯ কার্গিল যুদ্ধ চলাকলীন, ২০০১ সালে আমেরিকার টুইনটাওয়ারে সন্ত্রাসবাদী হামলার সময়, ২০০৮-২০০৯ সালে লেমন ব্রাদার্সের দেউলিয়া হওয়া আর সত্যম কেলেঙ্কারি, ২০১৬-র ডিমনিটাইজেসন এবং সবশেষে সাম্প্রতিক কোভিড মহামারীর (২০২০) সময় ভারতীয় শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল। ওই সময়ে যাঁরা শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা পরবর্তিকালে মোটা মুনাফার মুখ দেখেছিলেন।
কখন বিনিয়োগ করবেন?
“তবে নিম্নমুখী বাজার একই ভাবে অল্পসময়ে নাকি বেশি সময় উর্ধমুখী হবে, তা অতীত দেখে বোঝার উপায় নেই। তাই বাজারে লগ্নির প্রাথমিক ব্যাকরণ ভুললে চলবে না। সব সময় মাথায় রাখতে হবে, সল্প মেয়াদী প্রকল্পে চটজলদি কিছু রোজগার করার জন্য বাজারে বিনিয়োগ না করাই শ্রেয়। দীর্ঘমেয়াদে বাজারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায় যখন আমরা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের (MF) মাধ্যমে SIP-তে বিনিয়োগ করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ”, মত সৈকতবাবুর।
সৈকতবাবুর প্রশ্ন, সোনার দাম কমলে আপনি নতুন করে সোনা কেনার চেষ্টা করবেন নাকি ঘরের মজুত গয়নাগাটি বেচে দেওয়ার কথা ভাববেন? যদি দাম কমলে সোনা কেনার কথা ভাবেন, তাহলে শেয়ারের ক্ষেত্রে উল্টোটা হবে কেন? শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে সব সময়েই কম-বেশি ঝুঁকি থাকে। কিন্তু বিনিয়োগের সঠিক সময় জানা থাকলে নিশ্চিতভাবে মুনাফা পেতে পারেন লগ্নিকারীরা।