
বকেয়া ডিএ-র দাবি নিয়ে গিয়ে নবান্ন থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে রাজ্যের সরকারি কর্মী তথা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যদের। তাঁরা নিজেরাই জানিয়েছেন বৈঠকের নিট ফল জিরো। তার ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। ফের ধাক্কা খেল রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। মাথায় হাত তাঁদের।
আসলে ডিএ মামলা নিয়ে অনিশ্চয়তা সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার ২৪ তারিখ মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে। পঞ্চম বেতন কমিশনের যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার শুনানি বাকি আছে তা শোনার কথা ছিল। তবে তা ফের পিছিয়ে গেল শুনানি। ফলে এই নিয়ে ৭ বার পিছিয়ে গেল শুনানি। যা নিয়ে সরকারি কর্মী ও মামলাকারী সংগঠনগুলির মাথায় হাত।
এমনকী পরবর্তী শুনানির দিন এখনও ধার্য করেনি সুপ্রিম কোর্টে। ফলে মামলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল ৬ নম্বর কোর্টে। সিরিয়াল নম্বর ছিল ৪৮। মাননীয় বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও জেবি পারডিওয়ালার বেঞ্চে মামলাটি ওঠার কথা ছিল। কিন্তু পরে বেঞ্চ বদলে যায়। মাননীয় বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরীর সঙ্গে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বসবেন বলে ঠিক হয়।
এর আগে মাননীয় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত রাজ্যের ডিএ মামলা শুনতে চাননি। সেজন্য মামলার তারিখ আগেও পিছিয়ে ছিল। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, যেহেতু মাননীয় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এই বেঞ্চে থাকবেন, তাই ডিএ মামলার শুনানি হবে না।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে এও খবর, মাননীয় বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরীর অবসর নেওয়ার দিন এগিয়ে আসছে। সেই কারণে, যে সব মামলার নিস্পত্তি হয়নি, সেগুলিকে তিনি বেশি সময় দিয়ে শুনে দ্রুত নিস্পত্তি করতে চান। রাজ্যের ডিএ মামলার শুনানির দিন পিছিয়ে যাওয়ার কারণ সেটাও।
এদিকে মামলা পিছিয়ে যাওয়ায় শঙ্কিত রাজ্যের সরকারি কর্মী ও মামলাকারী সংগঠনগুলি। মামলাকারী সংগঠনগুলির বক্তব্য, বারবার মামলা পিছিয়ে যাওয়ার ফলে সরকারি কর্মীদের মনোবল ভাঙছে। আবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা চালানোর জন্য যে পরিমাণ অর্থব্যয় হচ্ছে, তাও বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁডাচ্ছে।
এই নিয়ে মামলাকারী সংগঠন সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'মামলা বারবার পিছিয়ে যাওয়ায় সরকারি কর্মীরা হতাশ। সেটাই স্বাভাবিক। তবে মামলার দিন বারবার পিছিয়ে গেলেও আমরা আশা করি, মামলার রায় সরকারি কর্মীদের পক্ষেই যাবে। কারণ, রাজ্য সরকারের মামলায় লড়ার মতো কোনও মেরিট নেই। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি।'
এই নিয়ে কনফেডারেশন অফ স্টেট গর্ভমেন্ট এমপ্লয়িজের মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, '২৪ তারিখের মামলা পিছিয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত থাকার সব ব্যবস্থা পাকা হয়ে যাওয়ার পর এই খবর আমরা পেয়েছি। অতীব দুঃখের বিষয় আগামী সোমবার সুপ্রিমকোর্টে উপস্থিত থাকার সব ব্যবস্থা হয়ে যাবার পর কিছুক্ষণ আগে জানা গেল ডিএ মামলাটি হচ্ছে না। ওইদিন মেনশন হিয়ারিং করে পরবর্তী তারিখের জন্য প্রার্থণা জানানো হবে।'
প্রসঙ্গত, এর আগে হাইকোর্ট রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর করেনি সরকার। হাইকোর্ট রাজ্যের দায়ের করা রিভিউ পিটিশনও খারিজ করে দেয়। তারপরই SLP দায়ের করে রাজ্য সরকার। আর সেই মামলা এখন চলছে। এই মামলা সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিলেই বকেয়া ডিএ পাওয়া পথ প্রশস্ত হবে সরকারি কর্মীদের।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার নবান্নে গিয়ে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় রাজ্যে রসরকারি কর্মীদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তবে সেই আবেদন নাকচ করে দেয় সরকার। ফলে ডিএ নিয়ে চিন্তায় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চেক সদস্যরাও।