রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও ৪ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর ঘোষণা করেছেন। যা কার্যকর হবে ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকেই। এর আগে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় ৬ শতাংশ DA পেতেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। ফলে এবার থেকে তাঁরা ১০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন। কিন্তু, রাজ্যের সরকারি কর্মীদের দাবি, ১০ শতাংশ হারে ডিএ দিলেও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের তুলনায় তাঁরা এখনও ৩৬ শতাংশ ডিএ কম পাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের কর্মীদের ৪৬ শতাংশ হারে ডিএ দেয়। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সেই ডিএ আরও ৪ শতাংশ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদি তা হয় তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়ে হবে ৫০ শতাংশ। সেক্ষেত্রে রাজ্যের সঙ্গে ফারাক বেড়ে দাঁড়াবে ৪০ শতাংশ। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ ঘোষণার দিন সাফ জানিয়েছেন, ডিএ দেওয়া ঐচ্ছিক। বাধ্যতামূলক নয়। কেন্দ্রের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। কেন্দ্র সরকার আর্থিক বঞ্চনা করছে।
তবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, সরকারি কর্মচারী পরিষদ, ইউনিটি ফোরাম, রাজ্য কো অর্ডিনেশন কমিটি-সহ একাধিক সরকারি কর্মচারীদের দাবি, কেন্দ্রীয় হারেই রাজ্যের সরকারি কর্মীদেরও ডিএ দিতে হবে। যদিও তা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া আগেই জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি বঞ্চনা না করত তাহলে হয়তো রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হতেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের সরকারি কর্মীদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে এখন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ-র ফারাক ৩৬ শতাংশ। তাঁদের হিসেব অনুযায়ী ডিএ বাবদ কত টাকা কম পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।
গ্রুপ ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে এই রাজ্যের কোনও গ্রুপ ডি-র কর্মীর এন্ট্রি পয়েন্ট ছিল ১৭ হাজার টাকা। রাজ্যের কর্মীদের AICPI অনুযায়ী ডিএ-র ফারাক ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ ১৭ হাজার টাকার ৩৬ শতাংশ। মাসে ৬ হাজার ১২০ টাকা। তাহলে বছরের হিসেবে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। গ্রুপ সি কর্মীদের ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে গ্রুপ C-র কর্মী হিসেবে যিনি কাজে যোগ দিয়েছেন তাঁর এন্ট্রি পয়েন্ট ছিল ২২ হাজার ৭০০ টাকা। সেই টাকার ৩৬ শতাংশ অর্থাৎ মাসে ৮,১৭২ টাকা। বছরে অঙ্কটা ১ লাখেরও বেশি। আপার ডিভিশন ক্লাকদের হিসেব ২০১৬ সালে আপার ডিভিশনের কোনও ক্লাকের বেতন যদি ২৮৯০০ টাকা থেকে থাকে তাহলে সেই টাকার ৩৬ শতাংশ অর্থাৎ সেই হিসেবে মাসে তিনি ডিএ কম পাচ্ছেন ১০ হাজার ৪০৪ টাকা। বার্ষিক ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি টাকা।
সরকারি কর্মীরা জানিয়েছেন, এই হিসেবের হেরফের হতে পারে। কারণ, রাজ্য সরকার কোন নীতিতে ডিএ দিচ্ছে তা পরিষ্কার করেনি। তাঁদের অভিযোগ, ইচ্ছেমতো ডিএ দেওয়ার ফলে নিয়ম মানা হয়নি। ফলে সরকারি কর্মীদের বকেয়াও রয়েছে। যা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে।