Egg Price Hike in Bengal: অক্টোবর মাসের শেষ থেকেই বাড়তে শুরু করেছে মুরগির ডিমের দাম। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পেরোতেই কলকাতায় ডিমের দাম পুনে-মুম্বইয়ের দামের সঙ্গে রীতিমতো টেক্কা দিচ্ছে। শুক্রবার থেকেই এক জোড়া ডিমের পাইকারি দর প্রায় সাড়ে ১২ টাকা হয়ে গিয়েছে। খুচরো বাজারে দাম আরও বেশি!
কলকাতায় ডিমের দাম কত?
শুক্রবার ন্যাশনাল এগ কোঅর্ডিনেশন কমিটির (NECC) প্রস্তাবিত হার অনুযায়ী, সোমবার (১১ ডিসেম্বর) কলকাতায় ১০০ পিস মুরগির ডিমের দাম ৬৪৫ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ, একটি ডিমের পাইকারি দর কলকাতায় ৬ টাকা ৪৫ পয়সা। সেই হিসাবে এক জোড়া ডিমের পাইকারি দর এখন ১২ টাকা ৯০ পয়সা হয়েছে।
গত শুক্রবারই দর বৃদ্ধির পর কলকাতায় খুচরো বাজারে একজোড়া ডিমের দাম ৭ টাকা থেকে সাড়ে ৭ টাকা হয়ে গিয়েছিল। গত সপ্তাহের শেষে এক ট্রে (৩০ পিস) মুরগির ডিমের পাইকারি দর যাচ্ছে ১৮৬-১৯০ টাকা আর খুচরো বাজারে এর দাম ২০০ টাকা হয়ে গিয়েছে। সোমবারের দর বৃদ্ধির পর এই দাম আরও বাড়তে চলেছে।
ডিসেম্বরের ১০ দিনে কলকাতায় ডিমের দাম কতটা বেড়েছে?
এ মাসের শুরুতে ১ ডিসেম্বরেও কলকাতায় ১০০ পিস মুরগির ডিমের পাইকারি দর ছিল ৫৬৫ টাকা। অর্থাৎ, একটি ডিমের পাইকারি দর ৫ টাকা ৬৫ পয়সা ছিল। সেই হিসাবে ৯-১০ দিনের মধ্যে কলকাতায় একজোড়া মুরগির ডিমের পাইকারি দর ১ টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে গিয়েছে।
সোমবার দেশের কোন শহরে ডিমের দাম কত?
সোমবার ন্যাশনাল এগ কোঅর্ডিনেশন কমিটির (NECC) প্রস্তাবিত হার অনুযায়ী, দেশের মধ্যে এখন কলকাতায় ডিমের দাম সবচেয়ে বেশি (১০০ পিস মুরগির ডিমের পাইকারি দর ৬৪৫ টাকা)। এর পরেই দামি ডিমের তালিকায় রয়েছে লখনউয়ের নাম। সেখানে ১০০ পিস ডিমের পাইকারি দর রবিবার থেকে ৬৩৩ টাকা হয়েছে। মহার্ঘ ডিমের তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুজাফফরপুর আর পটনা। সেখানে ১০০ পিস ডিমের পাইকারি দর গতকাল থেকে ৬৩০ টাকা হয়ে গিয়েছে। এই তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে রাঁচি। এই শহরে এখন ১০০ পিস ডিমের পাইকারি দর ৬২০ টাকা।
রাজ্যে মুরগির ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণ কী?
রাজ্যে মুরগির ডিমের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশন (WEST BENGAL POULTRY FEDERATION)-এর সাধারণ সম্পাদক মদন মোহন মাইতি বলেন, “মহামারী-পরবর্তী তিন বছরে খামারগুলিতে মুরগি প্রতিপালনের খরচ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে বেড়ে বরিবহণের খরচ। সব মিলিয়ে গত তিন বছরে ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় ৮৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এরই প্রভাব পড়েছে ডিমের দামে।”
তিনি জানান, কার্তিক মাসের পর দেশজুড়েই ডিমের চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদা আর যোগানের ফারাকে ডিমের দামে এই সময়টায় সামান্য হেরফের হয়। তাছাড়া ডিমের আকাশছোঁয়া উৎপাদন খরচের কথাও ভুলে গেলে চলবে না।
এক খামার মালিকের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় নীতির জন্যই মুরগি প্রতিপালনের খরচ এখন আকাশছোঁয়া! তাঁর কথায়, মুরগি প্রতিপালনের প্রয়োজনীয় খাবার-রসদ বিদেশে রফতানি করে দিচ্ছে কেন্দ্র। ফলে দেশের আভ্যন্তরীন চাহিদা পূরণে বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে খামার মালিকদের। তার উপর কেন্দ্রীয় করের বোঝা আর মুদ্রাস্ফীতির সাঁড়াশি চাপ তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে তিন বছরে ৮৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে মুরগি প্রতিপালনের খরচ। তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী এইটুকু দাম বাড়তে বাধ্য।